• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

করোনায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দক্ষিণ এশিয়ার ৩৯ লাখ শিশু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ২৯ জুলাই ২০২০, ১৪:৪৩
39 lakh children could suffer from wasting in South Asia this year due to COVID-19
ইউনিসেফ থেকে নেয়া

ইউনিসেফ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, করোনাভাইরাস মহামারীর আর্থ-সামাজিক প্রভাবের কারণে ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় পাঁচ বছরের কম বয়সী বাড়তি ৩৯ লাখ শিশু তীব্র রুগ্নতার শিকার হতে পারে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে পড়তে পারে। দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণ অনুসারে, বিশ্বব্যাপী ৬৭ লাখ শিশু তীব্র রুগ্নতার শিকার হতে পারে এবং এর অর্ধেকেরও বেশি (৫৮ শতাংশ বা ৩৯ লাখ) হতে পারে শুধু দক্ষিণ এশিয়াতেই।

তীব্র রুগ্নতা হচ্ছে অপুষ্টির এমন একটি রূপ যা জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। এটি শিশুদের খুব রুগ্ন ও দুর্বল করে দেয়। এটি তাদের মৃত্যু, সঠিক বৃদ্ধি ও বিকাশ না হওয়া এবং শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলে। ইউনিসেফের মতে, করোনা মহামারির আগেও ২০১৯ সালে ৪ কোটি ৭০ লাখ শিশু তীব্র রুগ্নতায় ভুগেছে, যাদের মধ্যে ১৭ লাখ শিশুর বসবাস বাংলাদেশে। জরুরি পদক্ষেপ না নিলে এ বছর বিশ্বব্যাপী তীব্র রুগ্নতায় ভোগা শিশুর সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৫ কোটি ৪০ লাখে পৌঁছতে পারে। এতে বৈশ্বিকভাবে শিশুদের তীব্র রুগ্নতায় ভোগার হার এমন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে, যা এই শতাব্দীতে আর দেখা যায়নি।

ল্যানসেটের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, করোনার আর্থ-সামাজিক প্রভাবের কারণে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এ বছর পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশুদের মাঝে তীব্র রুগ্নতার প্রাদুর্ভাব ১৪.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর হার এত উচ্চমাত্রায় বৃদ্ধির অর্থ হচ্ছে- বাংলাদেশে তীব্র রুগ্নতায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ২০১৯ সালের ১৭ লাখ থেকে বেড়ে ২০২০ সালে ১৯ লাখ হবে।

মহামারির আগের সময়ের তুলনায় ২০২০ সালের এপ্রিলে নানাবিধ জটিলতা নিয়ে তীব্র রুগ্নতায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ভর্তির হার কমে হয়েছিল কেবল ১০ শতাংশ। যদিও অপরিহার্য পুষ্টি সেবাসমূহ পুনরায় চালু হতে শুরু করেছে, তবে এসব সেবা এখনও তাদের যথাযথ সক্ষমতায় ফিরে যায়নি। মহামারি শুরুর আগের সময়ের তুলনায় ২০২০ সালের জুনে হাসপাতালে ভর্তির হার ছিল ৫৬ শতাংশ।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি তোমো হোজুমি বলেছেন, অপুষ্টি মা ও শিশুদের মধ্যে করোনার প্রভাব আরও বাড়িয়ে দিতে পারে, যে সংকট পরবর্তী বহু প্রজন্ম পর্যন্ত জারি থাকতে পারে। অপরিহার্য পুষ্টি পরিসেবাগুলো যাতে সম্পূর্ণ সচল থাকে এবং বাবা-মায়েরা যাতে তাদের শিশুদের পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে নিরাপদ বোধ করে তা নিশ্চিত করতে বৃহত্তর প্রচেষ্টার প্রয়োজন।

বাংলাদেশে অপরিহার্য পুষ্টি সেবাসমূহের ধারাবাহিকতা উন্নয়নের জন্য ভিটামিন ‘এ’ সাপ্লিমেন্ট বাড়াতে, তীব্র রুগ্নতায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দিতে, ছোট শিশুদের উন্নত খাবার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রচারণা চালাতে এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট সাপ্লিমেন্ট সরবরাহ করতে ইউনিসেফ সরকার ও অন্যান্য অংশীদারদের সহযোগিতা দেয়।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, করোনায় আক্রান্তের প্রথম ঘটনাটি জানার পর সাত মাস পেরিয়ে গেছে এবং এটা ক্রমেই অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, এই রোগ শিশুদের যত না ক্ষতি করছে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করছে মহামারিজনিত পরিস্থিতি। পারিবারিক দারিদ্র্য এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার হার বেড়েছে। অপরিহার্য পুষ্টি পরিষেবা এবং সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। খাবারের দাম বেড়েছে। ফলস্বরূপ, শিশুদের খাবারের গুণগত মান হ্রাস পেয়েছে এবং এতে অপুষ্টির হারও বাড়বে।

জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সতর্ক করে দিয়ে বলছে, তীব্র রুগ্নতায় শিশুদের হার বৃদ্ধির এই হিসাব বড় সমস্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। নিম্নমানের খাবার ও পুষ্টিজনিত সেবাসমূহ বিঘ্নিত হওয়ার কারণে কোভিড-19 শিশু ও নারীদের মাঝে অপুষ্টির অন্যান্য ধরনগুলোরও বৃদ্ধি ঘটাবে, যার মধ্যে রয়েছে খর্বাকৃতি, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসের ঘাটতি এবং অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতা। মহামারির প্রাদুর্ভাবের প্রথমদিকের মাসগুলোতে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বৈশ্বিকভাবে অপরিহার্য এবং প্রায়শই জীবন রক্ষাকারী পুষ্টি পরিসেবাগুলোর আওতা সার্বিকভাবে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিছু দেশে লকডাউন ব্যবস্থার কারণে এই বিঘ্নের হার ৭৫ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশে পৌঁছেছে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • স্বাস্থ্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
তাপপ্রবাহে ‘অতি উচ্চঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ
দেশে ৯৬ লাখেরও বেশি শিশুর রক্তে অতিরিক্ত মাত্রায় সিসা
করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
গাজায় ১৩ হাজারের বেশি শিশু নিহত : ইউনিসেফ
X
Fresh