• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বিনা পয়সার দোকান

তাবিবুর রহমান তালুকদার

  ২৯ জুন ২০২১, ২২:১৪
বিনা পয়সার দোকানে নুরুল ইসলাম (ডানে)

‘গরিবের দোকান, কিনতে পয়সা লাগে না’ - এই স্লোগানে বিনা পয়সার দোকান প্রতিষ্ঠা করেছেন নুরুল ইসলাম নামের এক ব্যাংকার। প্রায় এক বছর আগে শুরু করা এই দোকান ইতোমধ্যেই সাড়া ফেলেছে মানুষের মাঝে। মানবিক সমাজ গড়তে এই উদ্যোগকে ছড়িয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখেন উদ্যোক্তা।

মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, পেশায় ব্যাংকার। থাকেন রাজধানীর কেরাণীগঞ্জে। ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে সুখের ছোট্ট সংসার তার। তিনি জানান, কিশোর বয়স থেকেই সমাজের অসহায় মানুষের প্রতি টান অনুভব করতেন। কিন্তু ব্যক্তিগত তেমন বিত্ত-বৈভব না থাকায় সমাজের জন্য খুব বেশি কিছু করতে না পারার আক্ষেপ ছিল তার। চাকরির বেতনে সংসার চালানোই যেখানে হিমশিম অবস্থা সেখানে কিভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়, সে চিন্তায় মঝে-মধ্যেই অস্থির হয়ে উঠতেন। একদিন হঠাৎ তার মনে হলো, বাড়তি টাকা নেই তাতে কি? আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে গিফট হিসাবে পাওয়া বাচ্চাদের বেশ কিছু কাপড় অব্যবহৃত পড়ে আছে। কাপড়গুলো বাসায় শুধুশুধুই জায়গা দখল করে আছে। এগুলো দিয়েই তো চিন্তার বাস্তবায়ন শুরু করা যায়। যেই চিন্তা, সেই কাজ। নিজের ঘরের বাড়তি কাপড়, জুতা ও পাতলা পঁচিশটি কম্বল নিয়ে ২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে নেমে পড়েন রাস্তায়। রাস্তার পাশে ত্রিপল বিছিয়ে কাপড়গুলো সাজিয়ে বসলেন। পেছনে একটি ব্যানার। তাতে লেখা, ‘গরিবের দোকান, কিনতে পয়সা লাগে না’।

নুরুল ইসলাম জানান, ব্যাপক সাড়া পেলাম। রিকশাওয়ালা ও দিনমজুরদের অনেকেই তাদের প্রয়োজন মতো নিয়ে গেল। মাত্র ১৫ মিনিটে আমার ৫০ সেট কাপড় আর ২৫টি কম্বল শেষ হয়ে গেল। এই মানুষগুলোর তৃপ্তির হাসি আমাকে আন্দোলিত করল। এরপর আত্মীয়-স্বজনদের কাপড় সংগ্রহ করে আবারও বসলাম। সেগুলোই বিতরণ হয়ে গেল। এমন কাজে নিজেকে জড়াতে পেরে ধন্য মনে হলো। বিষয়টি আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে শেয়ার করার পর তারাও এগিয়ে এলো। অনেকেই কাপড় পাঠাতে শুরু করল। সপ্তাহের সরকারি ছুটির দিনে ঢাকার কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় দোকান নিয়ে বসি। বিনা পয়সার এই দোকানের এখন অনেক ক্রেতা। তাদের দোয়া আর ভালোবাসায় অন্যরকম সুখ অনুভব করেন বলেও জানান তিনি।

নুরুল ইসলাম আরও জানান, গত ঈদুল ফিতরে গরিবের দোকানের নতুন সংযোজন করেছেন গরিবের ঈদ বাজার। তার এই কাজে অনেকেই সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন। সবার সমন্বিত চেষ্টায় একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষকে ঈদ বাজার দেয়া সম্ভব হয়েছে। এভাবেই একদিন এই প্রচেষ্টাকে এগিয়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেযার স্বপ্ন দেখেন, নুরুল ইসলাম। তার আশা, সবাই মিলে চেষ্টা করলে মানবিক দেশ হিসেবে বিশ্বে মাথা উচু করে দাঁড়াবে বাংলাদেশ।

এসআর/

মন্তব্য করুন

daraz
  • মুক্তমত এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
১০ টাকায় ঈদবাজার
আখাউড়ায় ঈদ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান
বিমানবন্দরে ডলার কারসাজি : ১৯ ব্যাংকারসহ ২১ জনের নামে মামলা
বিমানবন্দরে ডলার আত্মসাৎ, ১৯ ব্যাংকারসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
X
Fresh