• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বঙ্গবন্ধু বাঙালির অনুপ্রেরনার শিখা অনির্বাণ

ড. মো. নাছিম আখতার

  ০৭ মার্চ ২০২১, ০৯:৫২

এই আধুনিক যুগেও পৃথিবীময় আপনার দৃষ্টি প্রসারিত করুন, চোখে পড়বে ভূখন্ডবিহীন পরাধীন জাতির দু:খ-দুর্দশা, শুনবেন তাদের হৃদয়ের আর্তনাদ। পরাধীনতার গ্লানি থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন যিনি তিনি আর কেউ নন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাঙালির জাতির জীবনে এসেছিলেন আলোকবর্তিকা হয়ে। তাঁর অসামান্য ত্যাগতীতিক্ষার ফলস্বরূপ আমরা পেয়েছি লাল সবুজ পতাকার স্বাধীন দেশ-বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর শত জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাভরে আমরা স্মরণ করি সেই মহান মানুষটিকে, যিনি তার জীবনের ১২ বছরেরও বেশী সময় জেলে কাটিয়েছেন নিপীড়িত মানুষের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে।

বঙ্গবন্ধু বলতেন, “আমার জীবনের একমাত্র কামনা বাংলাদেশের মানুষ যেন খাদ্য পায়, আশ্রয় পায়, শিক্ষা পায় এবং উন্নত জীবনের অধিকারী হয়।” “বাবাকে মনে পড়ে” শিরোনামে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার একটি স্মৃতিকথায় তিনি লিখেছেন : “ছেলেবেলায় বাবার রাত করে ফেরাটা তিনি মেনে নিতে পারতেন না। রাগ করে বলতেন, পলিটিক্স করো কেন?” বাবা বলতেন, “তুই এমন কথা বলিস কেন, আমার কাছে তুইও যা, সাড়ে সাত কোটি মানুষও তা!” এই উক্তিগুলোর মধ্যে দিয়ে বাঙালি জাতির প্রতি তাঁর প্রগাঢ় ভালোবাসা ও মমত্ববোধের বহি:প্রকাশ ঘটেছে তীব্রভাবে।

ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত ভাষা আন্দোলন এবং মানুষের অধিকার আদায়ে বিভিন্ন কর্মসূচী ও দাবি বাস্তবায়নে তিনি অধিকাংশ সময় জেলে অন্তরীন ছিলেন। ১৯৫০ সালে দুর্ভিক্ষের সময় প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলীকে ঘেরাও করতে মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ায় গ্রেফতার হন ভাসানী, মুজিব ও শামসুল হক। সেই থেকে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ক্রান্তিলগ্নেও মুজিব জেলে বন্দী ছিলেন। সেই সময় জেল থেকে ছাত্র আন্দোলনের প্রতি একাত্বতা ঘোষণা করে শেখ মুজিব জেলের ভিতর অনশন শুরু করেন (১৬ থেকে ২৭ শে ফেব্রুয়ারি)। শেখ মুজিব অনশন করায় তাঁকে ফরিদপুর জেলে স্তানান্তরিত করা হয় ১৮ ফেব্রুয়ারি। বাংলা ভাষার প্রতি মুজিবের প্রগাঢ় ভালোবাসা তাঁর জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রকাশ পায়। ১৯৫২ সালের ৩ থেকে ১১ অক্টোবর চীনের পিকিংয়ে অনুষ্ঠিত বিশ^ শান্তি সম্মেলনে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি বক্তৃতা করেন বাংলা ভাষায়। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের ভাষণে তিনি বক্তৃতা দেন মাতৃভাষায়। ১৯৭৫ সালের মার্চ মাসে বাংলাকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে অনুমোদন দেন। আসলে তিনি জানতেন এবং উপলদ্ধি করতেন মাতৃভাষা ছাড়া কোন জাতির শিক্ষা অসম্পূর্ন থেকে যায়।

তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি’র (সিডিটি) সুপারিশ লাভ করেছে। এ উত্তরণ এমন সময় ঘটল যখন আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি এবং মহান স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে। এমন মাহেন্দ্রক্ষণে দ্বীধাহীন কন্ঠে বলা যায় বঙ্গবন্ধুর জীবন, রাজনীতি ও আদর্শ বাঙালি জাতির জন্য নিরন্তর প্রজ্জ্বলিত- শিখা অনির্বাণ।

মন্তব্য করুন

daraz
  • মুক্তমত এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh