• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

 মশা! মারতে ঝিলের হাস আর মাছ কোথায়, আর উত্তরের অ্যাকশনই বা কই (ভিডিও)

মুক্তা মাহমুদ

  ০৩ মার্চ ২০২১, ১৮:১৩
ফাইল ছবি

হাস- মাছ খেয়ে ভালোবেসে কী তাহলে ঘরেই নিলো ঠাঁই!

কিভাবে যে শুরুটা করি, এতো ছোট বিষয়, আর এতো বার করে বলা। বলতেওতো এখন লজ্জা লাগেরে ভাই। আর যাদের উদ্দেশ্যে বলবো তারা দু’জনেই এতো ঝকঝকে আর তকতকে যে, তাদের সানগ্লাসে নিজের চেহারাও এক-দু’বার দেখে নিয়েছি! (পাঠক নিশ্চয় জানতে চান কিভাবে তা সম্ভব হলো; ওই যে সুযোগ হয়, বুলডোজার নিয়ে শহরের বিল্ডিং ভাঙাভাঙি করার আগে যে পরিদর্শনে আসেন সেই সময়।) সাথে যে সৈন্য-সামন্ত থাকেন, আর তাদের দেখার জন্য যে দর্শনার্থী এমন হিরোদের কাছে, এত ছোট বিষয় নিয়ে বলাটাতো নিজেরই ছোট লাগছে। তবুও বলি এখন লজ্জা শরম করে লাভ নেই। জীবন টেকানো দায়। আর ঘরের ছোট বাচ্চা ও প্রবীণদের নিয়েতো চিন্তায় মরছিরে ভাই।

বাপু মানা না মানা বুঝি না, এতো মশা আমার এই শহরে এখন টিকতেতো আর পরছি না। পাড়া প্রতিবেশী বন্ধুবান্ধবের সময় দেয়া কঠিন এই শহরে। সময় বেঁচে খাওয়া এই শহরের মানুষ আমি। পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়র সাথে কথাও বলতে হয় মশা নিয়ে, বলেন তো কি দুঃখ! অথচ পুরনো শহরের নতুন পিতা হবার শুরুতেই দিয়েছিলেন প্রতিশ্রুতি।

দক্ষিণের মেয়র সাহেব তো সেদিনই ঝিলে হাস মাছ ছেড়ে জানালেন,‌ ‍‘আগের যে কার্যক্রম সেটা শুধু লোক দেখানো। আসতে যেতেই এটার কাজ শেষ হয়ে যেত, আগে শুধু মশার প্রকোপ বাড়লেই কার্যক্রম নেয়া হতো, আমরা সেটা ঢেলে সাজিয়ে...... জনগণ এরই মাঝে তার সুফল পাওয়া আরম্ভ করেছে।’

জনগণ আমরা কী সুফল পাচ্ছি? পাচ্ছিইতো তাই না? না পেলে কি লিখতে বসতাম। ধন্যবাদ দিতে হবে না। মশার কামড়ে থাপড়াই, এখন সারা শরীরতো বটেই হাত যতদূর যায় পাখা বানায়া রাখি, যেন সুযোগ না মশা শরীরে বসতে।

উত্তরের মেয়র তো মশা মারতে উনিশের মার্চেই বলছিলেন, ‘আমি অ্যাকশন ভালোবাসি, ইটিং মিটিং সিটিং রেজাল্ট ইস নাথিং আমি ভালোবাসি না’। কি অদ্ভুত আমি বা আমরা এই শহরের মানুষ বিশ্বাস করেছিলাম। কথাটি মনেও রেখেছি। নাকি সে সময় মশায় ভুগেছিলাম বলে আজও মনে পরে। কই গেলা সেই মাছ, কই গেলো হাস, আর অ্যাকশন তো দেখিই না। নাকি মশার অ্যাকশনে উত্তর কাইত, যে কারণে মশাই দেখা যায় শুধু মেয়রকে নয়।

মশা মারার কার্যক্রম যাদের নিয়মিত দায়িত্ব হবে, ভুলেই গেলেন সেই কথা? এই শহরের মানুষকে শান্তিতে বাসায় থাকতে অন্তত মশাটাতো মারবেন স্যার ? নাকি ঘরে ঘরে মশা মারার দায়িত্ব আপনার নয়।

নাকি এখানে হিরোইজমের কোনো দৃষ্টান্ত হতে পারবেন বলেই এখনো চুপ! মাথায় ঘুরে, মেয়র সাহেবদেরকে এখনও কেন দেখা পাই না। হাসপাতালে মশার কামড়ে রোগীর সংখ্যা এখনো এক দুই গোনা যাচ্ছে বলে? পরিস্থিতি কি এমন হলে ধরেন, হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল রোগী জায়গা পাবে না, প্রতিটি ঘরে ঘরে নিস্তব্ধতা তখন হাসপাতাল পরিদর্শনে আসবেন তারা । সংবাদকর্মীরা তার পিছু নেবেন নির্দেশনা দেবেন মশা মারতে, আর হাসপাতালে রোগীর পাশে থাকা স্বজন চোখের পানি ফেলবে আর মাথায় চিন্তা করবেন আচ্ছা দুই মেয়র কি করেলন। বাহ মাঠ গরম !

মাননীয় মেয়র ভাবছি এমন হলে রেষারেষিও কম হতে পারে না। উত্তর দিবে দক্ষিণের দোষ, আর দক্ষিণ বলবে উত্তরের মশা নোংরা। হতেই পারে তাই না! মশা তো আর উত্তর দক্ষিণ বুঝবে নারে ভাই। এই শহরের মানুষ আমরা যদিও বুঝি মশা দেশ মহাদেশও পারি দেয়। বুঝবেন ভাই, আমাদের কষ্ট? জ্যামের শহরে সময় বেচে আয় করা পয়সায় রোজ কিনি কয়েল। রাত নাই দিন নাই বাসায় কয়েল ধরাই। লাগে দিনে চারটা বা তারও বেশি। আর যদি বলি কয়েল কি পরিবেশ বান্ধব? বাচ্চারা সারাক্ষণ কয়েলের মধ্যে থাকছে কি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, কি অসহ্য ভেবেছেন একবারও!

দুই মেয়রকেই শহরের এই মানুষগুলো বলি, বসে থাকবেন এখনো? করবেন না আপনার দায়িত্ব পালন? দায়িত্ব নেবার আগে পরে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার ছিটেফোটাও একটু শুরু করুন। মশার ওষুধ নিয়ে কম তো জল ঘোলা হলো না কি হলো তার? ঘোলা জল কি পরিষ্কার কিভাবে করলেন জানতে চায় না এখন নগরবাসী। চায় ওষুধটা যেন ঠিকঠাক কাজ করে। সামনে বৃষ্টি শুরু হবে বুঝতে পারছেন কি ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারে। ভুলে যাবেন না ২০১৯ সালের ডেঙ্গুর ভয়াবহ অবস্থার কথা।

কী মেয়র মহোদয়গণ, মশা কী মারতে মাঠে নামছেন? নাকি আমরা জনগণ মশারি টাঙিয়ে কয়েল লাগিয়ে ঘরে বসে থাকবো? ন্যায্য যা তাইতো করবেন, বা বলবেন আশা করতে পারি না?

মুক্তা মাহমুদ

সাংবাদিক

মন্তব্য করুন

daraz
  • মুক্তমত এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh