• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

তারুণ্যের রক্ত গরম করে দেয়ার মতো বিপ্লবীর নাম ম্যারাডোনা

কাওসার শাহীন

  ২৬ নভেম্বর ২০২০, ১৮:৫৩
Maradona is the name of a revolutionary with hot youth blood
কিউবা বিপ্লবের নায়ক ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে ফুটবলের মহাতারকা ডিয়েগো ম্যারাডোনা

ম্যারাডোনাকে ভালোবাসার, শ্রদ্ধার প্রধান কারণ তিনি ফুটবলার এজন্য না, তিনি বিশ্বকাপ বিজয়ী কিংবদন্তী এজন্যও না।

মূল কারণ ছিলেন তিনি বিপ্লবী, আমাদের তারুণ্যের রক্ত গরম করে দেয়ার মতো বিপ্লবী। তাই তিনি তার ফুটবলকে নিয়ে গিয়েছিলেন বিপ্লবের কেন্দ্রে, দেশপ্রেমের কেন্দ্রে।

বর্তমান তারকাদের মতো তিনি ছিলেন না। স্রোতের বিপরীতে চলা আমাদের বাবাদের নায়ক, আমাদের স্বপ্নের নায়ক ছিলেন ম্যারাডোনা।

১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে আর্জেন্টিনার জয় যতটা না আনন্দের সাগরে ভাসিয়েছিল তার চেয়ে বেশি আনন্দের ছিল ওই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানো।

ইতিহাসে যা বিতর্কিত গোল তাই ছিল ম্যারাডোনার ভাষায় ‘হ্যান্ড অব গড’ ।

কেন আর্জেন্টিনার জয়টি গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা নিজেই বলেছিলেন ম্যারাডোনা ‘আই অ্যাম এল ডিয়েগো’-তে। তিনি বলেছিলেন, ১৯৮৬ ফুটবল বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার জয়টি ছিল মূলত ফকল্যান্ড যুদ্ধে হারের প্রতিশোধ।

আর্জেন্টিনায় ফকল্যান্ড এখনও স্পর্শকাতর বিষয়। আমাদের পাশের দ্বীপ সেন্টমার্টিন যদি ১৩ হাজার কিলোমিটার দূরের কোনও দেশ জোরপূর্বক দখলে রাখে তখন কেমন লাগবে একবার ভাবুন?

আর্জেন্টিনার পাশের দ্বীপ মালভিনাস দখলে নিয়ে ইংল্যান্ড নাম পর্যন্ত পরিবর্তন করে ফেলে। রাখে ফকল্যান্ড নামে।

সেই ফকল্যান্ড দ্বীপ যা আর্জেন্টাইনরা ডাকে মালভিনাস নামে, দ্বীপটি নিয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ বাঁধে ইংল্যান্ড আর আর্জেন্টিনার মাঝে। সময়টা তখন ১৯৮২ সাল।

শীতল যুদ্ধের সময়কার সেই যুদ্ধে লাতিন বিপ্লবের বেলাভূমি লাতিন আমেরিকান দেশ আর্জেন্টিনা হেরে যায় ইংল্যান্ডের, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ শক্তির কাছে।

তরুণ বয়সের ম্যারাডোনা যার বুকে খেলা করে বিপ্লবী চে গুয়েভেরা, ফিডেল ক্যাস্ট্রো তিনি মেনে নিতে পারেননি আর্জেন্টিনার পরাজয়।

অবশেষে এলো সেই ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ। এলো ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ। বুকের ভেতর জমে থাকা ক্ষোভ যেন সব উগড়ে দিলেন ম্যারাডোনা একাই।

ফলে ম্যারাডোনা একাই ইংল্যান্ডের অহংকার দুমড়ে মুচড়ে ছিড়ে ফেলে ফকল্যান্ড যুদ্ধের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চাইলেন।

তারপর যা হলো তা ছিল ইতিহাস। ইতিহাসের রাজপুত্র হয়ে ফুটবল বিশ্বে নিয়ে নিলেন তিনি তার সোনার চেয়ারখানি। জীবনে ও মরণে।

বিদায় হে বিপ্লবী বীর ম্যারাডোনা। নত মস্তকে তোমায় সেলাম।

লেখক, যোগাযোগ ও গণমাধ্যম বিষয়ক শিক্ষা বিভাগ, ইউডা

মন্তব্য করুন

daraz
  • মুক্তমত এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ম্যারাডোনা ও পেলের মধ্যে কে সেরা, জানালেন ফিফা সভাপতি
মৃত্যুর তিন বছর পর কর ফাঁকির মামলায় মুক্তি পেলেন ম্যারাডোনা
‘ম্যারাডোনা অ্যাওয়ার্ড’ জিতলেন রোনালদো
X
Fresh