• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

কৃষকের ছেলে থেকে বিশ্বনেতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ২৬ নভেম্বর ২০১৬, ১২:৫৩

বিপ্লব হলো আমৃত্যু সংগ্রাম, অতীত থেকে ভবিষ্যতের পথে যার নিরন্তর যাত্রাপথ। পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থার মুখের ওপর এ কথা শুনিয়ে দিতে পেরেছিলেন বিশ্বনেতা ফিদেল কাস্ত্রো। জানিয়ে দিয়েছিলেন- বিপ্লব গোলাপের শয্যা নয়। ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার মুখে তিনি যেন ছিলেন শেষ উদ্ধত অহঙ্কার। অবজ্ঞাভরে যিনি বলতে পারতেন- পুঁজিবাদ টাকা ব্যবহার করে, আমরা ছুঁড়ে ফেলে দিই। বিশ্বজুড়ে বিপ্লবের সেই শামিয়ানা টাঙিয়ে আজ চলে গেলেন তিনি।

কিউবার পূর্বাঞ্চলে বিরান জেলায় জন্ম কাস্ত্রোর। বাবা ছিলেন নিতান্তই কৃষক। দারিদ্রের মধ্যেই কেটেছে ছোটবেলা। আর তাই ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা কীভাবে দরিদ্রকে শোষণ করে তা ছোটবেলাতেই উপলব্ধি হয়েছিল তার। সেই অভিজ্ঞতাই হয়তো ভবিষ্যতে বিপ্লবের পথে প্রণোদিত করেছিল তাকে। স্বৈরতান্ত্রিক শাসকের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন সেই কৈশোরকাল থেকেই। তবে শুধু স্বপ্নেই আটকে থাকেননি। তা কাজেও করে দেখিয়েছেন।

১৯৫৫ সালে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় চে গুয়েভারার। দু’জনেই হাত ধরে হাঁটা শুরু করেন সাম্রাজ্যবাদ মুক্ত বিশ্বের স্বপ্নের। বাতিস্তার স্বৈরশাসনের ওপর ছুঁড়ে দেন তীব্র প্রত্যাঘাত। আঘাতও পান চূড়ান্ত। কিন্তু বিপ্লব যে আমৃত্যু সংগ্রাম, তা তার থেকে ভালো আর কে জানে। আর তাই একদিন মুক্ত করতে পেরেছিলেন কিউবাকে। হয়েছিলেন প্রেসিডেন্টও।

পার্থিব যাত্রা শেষ হলো। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, বিপ্লবের আগুন কখনও নেভে না। কাস্ত্রোরও তাই কোনো মৃত্যু নেই। বিপ্লব কী? তাকে জিজ্ঞেস করা হলে বলতেন, ‘শাসকের ওপর শোসিতের কর্তৃত্ব স্থাপনই বিপ্লব।’ তবে তা করতে পারেন অল্প কয়েকজনই, যেমন- কাস্ত্রো।

সময়ই তাকে তৈরি করেছে, নাকি তিনিই সময়কে তৈরি করেছেন নিজের আদর্শে- সে দ্বন্দ্ব আজ মুলতুবি থাক। তিনি নিজে যদিও বলতেন, নিয়তিই এক একটি সময়ের জন্য একজন মানুষকে তৈরি করে দেয়। সন্দেহ নেই, জাঁকিয়ে বসা ধনতন্ত্রের মারের মুখ ওপর দিয়ে কমিউনিজমের জন্য ফুল তুলে আনা মানুষটি ছিলেন তিনিই। হয়েছিলেন বিশ্ব গণমানুষের নেতা।

তবে ৬৩৪ বার মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল তাকে। তবে ভাগ্যজোড়ে বেঁচে গিয়েছিলেন এ নেতা। ২০১২ সালে টাইম ম্যাগাজিনের প্রকাশিত ১০০ জন সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের মধ্যে তিনি একজন।

ফিদেল ক্যাস্ত্রো কিউবা শাসন করেছেন প্রায় ৫ দশক ধরে। ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ এবং থাইল্যান্ডের রাজার পর তিনি বিশ্বের তৃতীয় নেতা, যিনি এতো লম্বা সময় দেশ শাসন করেছেন। ২০০৮ সালে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর করেন ভাই রাউল ক্যাস্ত্রোর হাতে। ক্ষমতা ছাড়ার পরও তিনি জনসম্মুখে আসতেন। গণমাধ্যমে তার প্রায় শতাধিক লেখা প্রকাশিত হতো। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ধীরে ধীরে জনসম্মুখে আসা কমিয়ে দেন তিনি। ২০১২ সালে দু’বার এবং ২০১৩ সালে দু’বার তাকে জনসম্মুখে দেখা যায়।

এস

মন্তব্য করুন

daraz
  • ফিচার এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh