• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ঘুরে দেখা বন্দিশালা

এ এইচ মুরাদ

  ০৩ নভেম্বর ২০১৬, ১৮:১৭

৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের মূল ফটকের সামনে জনসাধারণের দীর্ঘ লাইন। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পতনের পর ব্রিটিশদের তৈরি কারগারটি এই প্রথম খুলে দেয়া হয়েছে। ২শ’ ২৮ বছরের পুরনো কারাগারে বন্দিদের জীবনযাপনের ইতিহাস প্রত্যক্ষ করতে মানুষের উৎসাহের কমতি নেই। কারাগারটি দর্শনার্থীদের জন্য ২ থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকছে।

জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে স্মৃতিবিজড়িত কারাগারে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় ৪ নেতার দুর্লভ আলোকচিত্র প্রদর্শনী চলবে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত। নানা পেশা ও বয়সের মানুষ ভিড় করছে তা দেখার জন্য। কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনী অতিক্রম করে ভেতরে ঢুকতেই ডানপাশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবনগাঁথার স্থিরচিত্র নিয়ে ছবির গ্যালারি আকৃষ্ট করছে সবাইকে।

স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টার বিভিন্ন সময়ের আন্দোলন-সংগ্রাম ছাড়াও অনেক ঘটনার সাক্ষী এসব ছবি। নিচে ক্যাপশন জুড়ে দেয়াতে ইতিহাস জানতে কারো অসুবিধা হচ্ছে না।

বাংলার অধিকার আদায়ে পাকিস্তানি শাসক শ্রেণির বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে বারবার আসতে হয়েছে এ কারাগারে। বঙ্গবন্ধুকে যে কক্ষে রাখা হয়েছিল তা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি নিদর্শন গ্যালারি নামেই এখন পরিচিত।

ভেতরে রাখা আছে তার ব্যবহারের জিনিসপত্র। উৎসুক দর্শনার্থীরা লোহার দরজার বাইরে থেকে তা দেখার পাশাপাশি ক্যামেরাবন্দি করছেন।

বাইরে বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লাগানো কামিনী গাছ স্মৃতির সাক্ষী হয়েই দাঁড়িয়ে আছে।

কারাগার দেখতে আসা মোহাম্মদ মাহবুব আলম রনি আরটিভি অনলাইনকে বললেন, 'এ উদ্যোগটি অনেক ভালো হয়েছে। ছেলেকে নিয়ে এসেছি। নতুন প্রজন্ম এখান থেকে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবে। কারাগারের বিভিন্ন অংশে ভেষজ গাছ লাগানোর সঙ্গে এটিকে পাখিদের অভয়ারণ্য করা যেতে পারে। তাহলে ঢাকা শহরের মানুষ এখানে এসেই নির্মল আনন্দ উপভোগ করতে পারবে।'

কারাগারের ভেতরে কিছু দূর সামনে যেতেই বাঁ পাশে জাতীয় চার নেতার ম্যুরাল দেখা যাবে। যার পেছনের ঘরেই ৭৫ এর ৩ নভেম্বর নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তাদের।

ব্যবসায়ী মোহাম্মাদ সোহেল হোসেন (৫০) এসেছেন জাতীয় চার নেতাকে হত্যার সেই সেলটি দেখতে।

তিনি আরটিভি অনলাইনকে বললেন, 'জেলখানার ঠিক পেছনেই তার বাড়ি। কিন্তু এতদিন তো দেখার সুযোগ ছিল না। স্বাধীনতা যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা রাখা জাতীয় চার নেতাকে যে কক্ষে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তা দেখলাম। ভাবতে অবাক লাগে মানুষ এত নিষ্ঠুর হয় কীভাবে?'

প্রাচীরঘেরা জেলখানার ভেতরের পরিবেশ কেমন। কীভাবেই বা রাখা হয় সাধারণ বন্দি, রাজবন্দি কিংবা বিদেশি বন্দিদের। জেলখানা ঘুরে খুব সহজেই জানতে পারছেন দর্শনার্থীরা।

তানজিল নামে এক দর্শনার্থী আরটিভি অনলাইনকে বললেন, 'এ জেলখানার ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাসের চেয়ে অনেক পুরনো। বাস্তবে জেলখানা দেখার অভিজ্ঞতা সত্যি দারুণ। আর জাদুঘর ও ফটোগ্যালারি থেকে দেশের ইতিহাস সম্পর্কে সবাই জানতে পারবেন।'

গেলো ২৯ জুলাই নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগার থেকে ৬ হাজার ৪শ’ বন্দিকে কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

এইচএম/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • ফিচার এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh