• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বেড়িয়ে আসুন জেলখানায়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ৩০ অক্টোবর ২০১৬, ১০:১২

জেলখানা, নাম শুনলেই আঁতকে ওঠেন অনেকে, শিউরে ওঠে গা। মনে করেন, জেলখানা মানেই অন্ধকার এক জীবন। ছোট ছোট বদ্ধ কুঠুরিতে নিরানন্দ সময় পার করা। যাকে এক কথায় বলা চলে, দুনিয়ার সবচেয়ে ভয়ানক কারাবাস। কিন্তু সেটাই এখন বেড়ানোর দুর্দান্ত জায়গা! চলুন আনন্দবাজারের সৌজন্যে সাধ করে একটু ঘুরে আসি গুণ্ডাদের আখড়ায়। জেনে নেই কিছু ইতিহাসও।

সেলুলার জেল (আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ)
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে অন্যতম কুখ্যাত এ জেল। আন্দামানে বেড়াতে গেলে এ জেলখানা না দেখাটা হবে একেবারেই বোকামি। ব্রিটিশ আমলে এ জেলে রাত কাটিয়েছেন বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী। বটুকেশ্বর দত্ত, বীর সভরকরের মতো বিপ্লবীরা দীর্ঘ দিন কাটিয়েছেন জেলটির অন্ধকারে। তবে এখন আর এ জেলে কোনো কয়েদী থাকে না। বর্তমানে সেলুলার জেল ট্যুরিস্ট স্পট হিসেবেই পরিচিত। যেখানে লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মাধ্যমে দেখানো হয় এ জেলের ইতিহাস।

তিহাড় জেল (দিল্লি)
পশ্চিম দিল্লিতে ১৯৫৭ সালে তৈরি হয়েছিল জেলখানাটি। যা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড়। লালু প্রসাদ থেকে দিল্লির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিবালসহ অনেক রাজনীতিকই এ জেলে দিন কাটিয়েছেন। সাধারণত হাইভোল্টেজ কয়েদিদের তিহাড় জেলে রাখা হয়। তবে এর পাশাপাশি কয়েদিদের পুনর্বাসন, পড়াশুনা, গান-বাজনাসহ নানান সৃজনমূলক কাজে তিহাড় জেল অন্যতম। দিল্লি ঘুরতে গেলে অবশ্যই একবার ঢুঁ মারতে পারেন এ জেলের ভেতর।

হিজলি জেল (পশ্চিমবঙ্গ)
১৯৩০ সালে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে তৈরি হয় এ জেলখানা। ১৯৩১ সালে দুই নিরস্ত্র বন্দির ওপর গুলি চালানোর ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হিজলি জেলের নাম। ওই সময় এ ঘটনার প্রতিবাদে আওয়াজ উঠেছিল গোটা বাংলাজুড়ে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে সুভাষচন্দ্র বসু সবাই তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলেন এ ঘটনার। নেতাজি নিজে গিয়ে এ জেল থেকে দুই বিপ্লবীর দেহ নিয়ে এসেছিলেন। বর্তমানে এ জেলখানা বাংলার অন্যতম সেরা এডুকেশনাল ইনস্টিটিউট। ১৯৫১ সালে এখানেই আইআইটি খড়গপুর তৈরি হয়। এখনো কলেজের মধ্যে একটি পরিত্যক্ত ডিটেনশন ক্যাম্প রয়েছে।

ভাইপার দ্বীপ (আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ)
সেলুলার জেলের মতো এতোটা জনপ্রিয় না হলেও ব্রিটিশ আমলে আন্দামানের এ জেলখানাও ছিল কুখ্যাত। শোনা যায়, এখানে নাকি কয়েদিদের শিকলে বেঁধে রাখা হতো। এ জেলেই ১৮৭৯ সালে মারা গিয়েছিলেন পুরির মহারাজা ব্রিজকিশোর সিংহ দেও। তবে সংস্কারের অভাবে এখন ভগ্নপ্রায় অবস্থায় ইতিহাসকে বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে জেলখানাটি।


আগা খান প্যালেস (মহারাষ্ট্র)
সুলতান মুহাম্মদ শাহ তৃতীয় আগা খান এ প্রাসাদটি বানিয়েছিলেন। পরে তা পরিণত হয় জেলখানায়। ১৯৪২ থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত মহাত্মা গাঁন্ধী, তার স্ত্রী কস্তুরবা এবং সচিব মহাদেব দেশাই এ জেলে বন্দি ছিলেন। ১৯৬৯ সালে চতুর্থ আগা খান প্রাসাদটি সরকারকে দান করেন। পরে এখানে গাঁন্ধী ন্যাশনাল মেমোরিয়াল সোস্যাইটি তৈরি করা হয়। মহাত্মা গাঁন্ধীর চিতাভষ্মও রাখা আছে এ মিউজিয়ামে। মহারাষ্ট্রে গেলে অবশ্যই যান আগা খান প্যালেসে।


ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (ঢাকা)
২২৮ বছর পর প্রথমবারের মতো জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগার। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পতনের পর ব্রিটিশ আমলে ১৭৮৮ সালে ১৭ একর জায়গার ওপর স্থাপিত হয় কারাগারটি। গেলো ২৯ জুলাই ফাঁকা করা হয় ঐতিহাসিক কারাগারটি। এ জেলেও রাত কাটিয়েছেন বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী। তবে সবচেয়ে নৃশংস ঘটনা ঘটে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর। ওইদিন গুলি করে হত্যা করা হয় জাতীয় ৪ নেতাকে।

এস

মন্তব্য করুন

daraz
  • ফিচার এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh