• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

তাকডুম তাকডুম...

জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস, মানিকগঞ্জ

  ০১ অক্টোবর ২০১৬, ১৩:২৮

তাকডুম তাকডুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল...। জনপ্রিয় সেই গানের তাল লেগেই থাকে ঢাক-ঢোলের পাড়াখ্যাত মানিকগঞ্জের মনিদাশ পাড়ায়। কাজ চলে সারা বছরই। তবে দুর্গা পূজায় দম ফেলার সুযোগই থাকে না মানিকগঞ্জের ঢাক-ঢোল পাড়ার কারিগরদের।

জেলার ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়ায় এ পাড়াকে সকলেই চেনে ঢাক-ঢোল পাড়া হিসেবে। এ পাড়ার ৩৫টি পরিবার পৈত্রিকসূত্রে তৈরি করে আসছে বিভিন্ন দেশীয় বাদ্যযন্ত্র। তাদের তৈরি এসব যন্ত্র চলে যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ নানা এলাকায়।

মানিকগঞ্জ-ঘিওর সড়কের পাশেই ছোট্ট এ পাড়াটিতে শতবছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করেন ঋষি সম্প্রদায়। ৩৫টি পরিবারের জীবিকার প্রধান উৎস ঢাক-ঢোল, ডুগি-তবলাসহ নানা বাদ্যযন্ত্র তৈরি করা। বাড়ির পুরুষদের সঙ্গে সহযোগি হিসেবে কাজ করেন বাড়ির নারী ও শিশুরা।

গ্রামের ওই পাড়া ঘুরে দেখা যায় সকল সদস্যই কাজে ব্যস্ত। কারণ দুয়ারে কড়া নাড়ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। তাই বিভিন্ন অর্ডারের সামগ্রী তৈরিতে তাদের দম ফেলার সুযোগ নেই।

আনন্দ দাশ জানান, দুর্গাপূজার আগের দিন পর্যন্ত কাজের চাপ থাকে। তাছাড়া সারা বছর এ কাজ করেই তারা সংসার চালান। মূলত আম, কড়ই, নিম গাছ দিয়ে তারা এসব যন্ত্র তৈরি করেন। তাদের তৈরি এ বাদ্যযন্ত্রগুলো রাজধানী ঢাকাসহ অনেক এলাকায় বিক্রি হয়। খুচরা বিক্রির পাশাপাশি অর্ডারের কাজও করেন তারা।

আনন্দের ভাই শ্যাম দাশ জানান, কাঠ ও আকারভেদে বাদ্যযন্ত্রের দাম অনেক রকমের। তবে একটি ঢাক ৫ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা, তবলা ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

তিনি আরো জানান, একেকটি যন্ত্র তৈরি করতে তাদের প্রায় ৪-৫ দিন লেগে যায়। ক্রেতারা যেভাবে অর্ডার দেন আমরা সেভাবেই কাজ করে দেই।

সবিতা রানী দাশ জানান, ঘরের কাজ শেষে স্বামীদের কাজেও আমরা সহযোগিতা করি। তবলার বিড়া তৈরিসহ নানান কাজ আমরা করে থাকি। এতে করে আমাদের আয়ের পরিমাণটাও একটু বেড়ে যায়।

কারিগর নারায়ণ চন্দ্র দাশ জানান, বর্তমানে গাছের দাম খুব বেশি। তাছাড়া পুঁজি কম থাকায় আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ কাজের পরিধি আরো বাড়ানো সম্ভব।

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌস বলেন, বর্তমানে দেশীয় বাদ্যযন্ত্র এখন বিলুপ্তির পথে। তাই মুনিদাশ পাড়ার বাদ্যযন্ত্র তৈরির কারিগরদের ঋণ সুবিধাসহ বিভিন্ন সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

এসএস/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • ফিচার এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh