• ঢাকা বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

জমজম থেকে প্রতিদিন উত্তোলন ১০ হাজার ব্যারেল পানি

মাজহার খন্দকার

  ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১১:২৮

মক্কায় মসজিদুল হারামের অভ্যন্তরে অবস্থিত একটি কুয়ার নাম জমজম। এটি কাবা থেকে ২০ মি. (৬৬ ফুট) দূরে অবস্থিত। ইসলাম ধর্মের বর্ণনা অনুযায়ী, হযরত ইবরাহিম (আঃ) তার স্ত্রী হাজেরা (আঃ) ও শিশুপুত্র ইসমাইল (আঃ) কে মরুভূমিতে রেখে আসার পর ইসমাইল (আঃ) পিপাসায় কাতরাচ্ছিলেন। হাজেরা (আঃ) যখন পুত্রের জন্য পানি খুঁজছিলেন তখন ইসমাইলের পায়ের আঘাতে আল্লাহর ইচ্ছায় সৃষ্টি হয় জমজম কুয়া।

৪ হাজার বছর আগে সৃষ্ট এ কুয়া থেকে এখনো প্রতিদিন সেকেন্ডে ১৯ লিটার, ২৪ ঘন্টায় ১০ হাজার লিটারের বেশি পানি উত্তোলন হয়। প্রতি বছরই পানি উত্তোলনের পরিমাণ বাড়ছে। বিশেষ করে হজের সময় তা বেড়ে যায়। জমজমের পানি মুসলিম দেশসহ বিভিন্ন দেশেই সরবরাহ হয়। হাজিরা স্বাভাবিক বোতলে পানি নিয়ে গেলেও সৌদি সরকারের ‘কিং আব্দুল্লাহ জমজম ওয়াটার ফ্যাক্টরি’ পানি বোতলজাত করে সরবরাহ করছে। সৃষ্টির পর থেকে এই কূপের পানি কখনো শুকায়নি। একই রকম আছে এর পানি প্রবাহ। স্বাদেও কোন পরিবর্তন হয়নি । এমনকি একটি বারের জন্যও জন্মায়নি শৈবাল বা ছত্রাক।

জমজম কূপের বেশ কয়েকবার সংস্কার করা হয়। প্রথমে এটি পাথর দিয়ে ঘেরা ছিল। পরবর্তীতে খলিফা আল মনসুরের সময় ৭৭১ সালে এর উপর গম্বুজ এবং মার্বেল টাইলস বসানো হয়। পরবর্তীতে খলিফা আল মাহদি এটি আরো সংস্কার করেন। বর্তমানে কুয়া কাবা চত্বরে দেখা যায় না। এটি ভূগর্ভস্থ অবস্থায় রাখা হয়েছে এবং এখান থেকে পানি পাম্পের সাহায্যে উত্তোলন করা হয়। মসজিদুল হারামে অজুসহ নানা কাজেও এই পানি ব্যবহার হয়।

পরবর্তীকালে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ আবদুল আজিজ বিন সউদ জমজমের পূর্ব ও দক্ষিণে পানি পান করানোর জন্য দু’টি স্থান তৈরি করেন। দক্ষিণ দিকে ৬টি এবং পূর্বদিকে ৩টি টেপ লাগানো হয় ।

কূপের পানি বণ্টনের জন্য ১৪০৩ হিজরিতে সৌদি বাদশাহের রাজকীয় ফরমান অনুযায়ী, হজ মন্ত্রণালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ইউনিফাইড ‘জামাজেমা দপ্তর’ এ কূপের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে গঠিত হয়। এই দপ্তরে একজন প্রেসিডেন্ট ও একজন ভাইস প্রেসিডেন্টসহ মোট ১১ জন সদস্য ও ৫ শতাধিক শ্রমিক ও কর্মচারি রয়েছেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) জমজম সম্পর্কে বলেন, ‘জমজমের পানি যে নিয়তে পান করবে, তার সেই নিয়ত পূরণ হবে। যদি তুমি এই পানি রোগমুক্তির জন্য পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমাকে আরোগ্য দান করবেন। যদি তুমি পিপাসা মেটানোর জন্য পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমার পিপাসা দূর করবেন। যদি তুমি ক্ষুধা দূর করার উদ্দেশ্যে তা পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমার ক্ষুধা দূর করে তৃপ্তি দান করবেন। (ইবনে মাজাহ ও আল-আজরাকি)


মন্তব্য করুন

daraz
  • ফিচার এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh