• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মানুষ তুমি মঙ্গল হলে, ধর্ম তোমায় দেবে আলো

মো. গোলাম মোস্তফা (দুঃখু)

  ১২ অক্টোবর ২০২০, ১৮:৪৪
taka, corruption,
মুখোশ

আমার ছোট ভাই শরিফুল ইসলাম। তার সাথে দেখা হলে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে এবং সেগুলোর উত্তর জানার জন্য অপেক্ষায় থাকে। যে উত্তরগুলো জানা থাকে সেগুলো আমি বলি। করোনাভাইরাস আসার পর অনেক প্রশ্ন করেছিল। সেই উত্তরগুলো পেয়ে খুশি নয় সোহাগ। কারণ তার চিন্তা জগতেরে সাথে আমার উত্তরগুলোর মিল নেই। একদিন মুখের উপর বলে দিলো, আমি নাকি ইচ্ছা করে উত্তরগুলো বলি না। কি করে বলি তাকে, জটিল সমীকরণে এসব উত্তর দেওয়া যায় না।

বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় মার্চের ৮ তারিখ। তবে এর আগে কিন্তু করোনা নিয়ে বিশাল গবেষণা হয়ে গেছে এক দফা। মানুষের অস্বাভাবিক মৃত্যু কখনো কাম্য নয়! অচেনা ভাইরাসটির জন্য বিভিন্ন দেশে যখন মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে, তখন নিজ দেশের মানুষের আচরণ ছিল নাটকের সংলাপের মতো। কিসের করোনা! এই ভাইরাস বাংলাদেশে কিছু করতে পারবে না। অথচ, ভয়ানক ভাইরাসটি স্থান কাল পাত্র বুঝে না। সাদা, কালো, গরিব ধনী কোন চরিত্রকে নির্দিষ্ট করে আরাম দেয়নি। সব স্থানে সমানভাবে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। শীতে ভাইরাসটি দ্বিতীয় দফা তাণ্ডব চালাতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছে। সময়ের দাবি বলে দিবে কেমন অবস্থা হয় দেশের। মুক্তি নিশানায় জয়ের পাল উড়বে এমন প্রত্যাশা করা যেতেই পারে।

যাকে দেখা যায় না তার ভয়ে সারা পৃথিবী অচল! কি ভয়ংকর দৃশ্য ব্যস্ততম পৃথিবীর ভূ-পৃষ্টে। রাস্তা ফাঁকা, ঘর বন্দি মানব প্রাণী। মানুষ ভুলে গিয়েছিল, তারা ছাড়াও পৃথিবীতে অন্য প্রাণী বা পরিবেশ বলতে কিছু আছে। চার দেওয়ালের ভেতরে মানুষ নিজের ইচ্ছায় বন্দি। শুধু মাত্র ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে। প্রত্যেকে বাঁচার আশায় স্বপ্ন দেখে। চোখ বন্ধ হলে অথবা নিশ্বাস বন্ধ হলে। দেহের অস্তিত্ব বলতে কিছু থাকে না। তাহলে প্রাণী জগতের সৃষ্টি সেরা জীবটি ভূ-খন্ডে এত অপরাধ কেন করে?

বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী মারা গিয়েছিলে মার্চের ১৮ তারিখ বুধবার। দেশে তখন কিছুটা আতঙ্কের বার্তা পাওয়া যাচ্ছিল। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেওয়া নিয়মগুলো কেউ মানছেন না। দুর্নীতির উৎসব বা অমানুষের চিত্রগুলো করোনাকালেও থেমে নেই।

ব্যবসায়ীরা খারাপ, এই কথা দেশের সব মানুষ এখন বিশ্বাস করেন। কারণ এদের আচরণে সাধারণ মানুষ বিরক্ত! তারা ইচ্ছে মতো বাজারে পণ্যের দাম নির্ধারণ করে থাকেন। আবার একদল পাপী আছে, দাম বেশি থাকার পরেও ঘরে মজুদ রাখার উৎসব শুরু করে দেন।

যখন করোনা শুরু হলো তখন বাজার থেকে উধাও মাস্ক! যে মাস্ক পাঁচ দশ টাকা দিয়ে কিনতে পাওয়া যেত। সেই মাস্কের দাম হয়ে গেলো একশ থেকে ৫০০ টাকা। যেখানে মানুষের জীবন নিয়ে টানাটানি সেখানেও ব্যবসা! অন্যদিকে সরকারি হাসপাতালে মাস্ক পিপিই নিয়ে ও হয়েছে অনেক দুর্নীতি।

করোনাকালে হাসপাতালের চিত্র তো সবার জানা। এই মহামারিতে বেসরকারি হাসপাতালগুলো হয়ে গেলো আজরাইলের চেয়েও ভয়ংকর। এতকিছুর পরেও সরকার কে ধন্যবাদ দিতেই হবে। রাষ্ট্রের অনেক সিদ্ধান্ত দেশের জনগণকে দিয়েছে অর্থনীতির মুক্তি এবং করোনা সাথে মানিয়ে চলার শক্তি। কারণ এই করোনা যদি অন্য দেশের মতো হতো, তাহলে মরদেহ মাটি দেওয়ার মানুষ পাওয়া যেতো কি না ভাবার বিষয়। অন্যদিকে করোনা তে যারা মারা গিয়েছে, তাদের মরদেহ দাফন করতে পরিবারের কেউ আসেনি। তাহলে কার জন্য এত দুর্নীতি করে আয়? মানুষ তুমি মঙ্গল হলে, ধর্ম তোমায় দিবে আলো। কিন্তু মানুষ কি পরিবর্তন হয়েছে করোনা কালে? না, একদম হয়নি। দুর্নীতি, খুন, ধর্ষণ, অন্যায় সবকিছু চলছে এখনো।

টেলিভিশন বা পেপারে সব স্থানে বলতে দেখেছি। করোনার পরে পৃথিবী বদলে যাবে। মানবিক হয়ে উঠবে মানুষ। সব আশাকে অন্ধকার করে আবার আগের রূপে মানব প্রাণ। মহামারি চলাকালীন সময় মানুষ এত অপরাধ করতে পারে কি করে? এমন অবস্থা কখনো সভ্যতার জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে বলে মনে হয় না। তার পরেও আশায় থাকা। যদি কোন দিন অভিশাপ্ত মন কে কবর দিয়ে, সবাই যদি ভালো হয়ে ফিরে সব কর্ম ক্ষেত্রে।

তাহলে হয়তো পৃথিবী মানবিক হয়ে উঠবে। স্বপ্ন দেখা যেহেতু মানা নেই, তাই দেখা যেতেই পারে। বর্তমান থেকে দশ বছর আগের কথা যদি বলি। বড়দের কাছ থেকে শুনেছি যে ঘুষ, দুর্নীতি, অন্যায় পথে যে টাকা উপার্জন করে সে সভ্য মানুষ নয়। এমন কি গ্রামে বা শহরে সব জায়গাতে তাদের খারাপ চোখে দেখা হতো।

স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থীর পরিবারের কেউ যদি এমন অপরাধের সাথে জড়িত থাকতো, তাহলে সেই দায়ভার শিক্ষার্থীর উপর গিয়ে খুব প্রভাব পড়তো। কারণ এমন পরিবারের সন্তানের সাথে কেউ মিশতে চাইতো না সমাজ প্রতিষ্ঠান গুলোতে। সময়ের সাথে সবকিছু এখন পরিবর্তন। দুর্নীতি করা ব্যক্তিটি এখন সমাজের কর্তা। বর্তমানে টাকা যার বেশি দাম তার তত বেশি। সেই টাকা যদি হয় অন্যায় পথে আয় করা, তাতেও সমাজে তেমন প্রভাব পড়ে না। মূল্যবোধ এখন টাকার কাছে বন্দি।

তাহলে মানুষ এত অন্যায় করে কিসের আশায়? কোন এক সকাল হবে মানবতা নিয়ে। সেই দিনের অপেক্ষায় মেঘ মুক্ত আসমানের নিচে।

জিএম/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • ফিচার এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে কেনিয়ার সেনাপ্রধানসহ নিহত ৯
ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
বিআইডব্লিউটিএ-বিআইডব্লিউটিসির ক্রয় পরিকল্পনা উপস্থাপনের নির্দেশ
আরটিভিতে আজ যা দেখবেন
X
Fresh