রাবিতে অনলাইনে বর্ষবরণ
শীত-বসন্তের রুক্ষতা কেটে গিয়ে প্রকৃতির কোলজুড়ে জেগে উঠেছে সবুজ-সতেজ রঙিন প্রাণ। নিয়মে থেকে প্রকৃতি কথা রেখেছে। ফুলের পসরা এখন গাছে-গাছে, ডালে-ডালে। চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, জারুলের রঙের বাহার। গাছে-গাছে আম, লিচু, কাঁঠাল, জামরুলসহ উঠতি ফল জানান দিচ্ছে অস্তিত্ব। এইতো বাংলার নববর্ষ বৈশাখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের রূপ।
বছরের নতুন প্রভাতকে বরণ করে নিতে ঢাক-ঢোল আর গান বাজনায় মুখরিত থাকে পুরো অঙ্গন। বিভিন্ন বিভাগ আর সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন আয়োজন করে শোভাযাত্রার। রং-বেরঙের পাঞ্জাবি, শাড়িতে দেখা যায় তরুণ-তরুণীদের। পুরাতন বছরের সব জরাজীর্ণতা ভুলে নতুনকে স্বাগত জানাতে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
তবে এবারে নেই কোনো আয়োজন, কোথাও নেই প্রাণচঞ্চল্যতা। পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে যেন বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা, শূন্যতা। এ যেন এক অচেনা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রকৃতি আপন মহিমায় মতিহারের সবুজ চত্বরকে সাজালেও নেই শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, চারুকলার পলাশ চত্বর, পুরাতন ফোকলোর চত্বর, টুকিটাকি চত্বর, লিপু চত্বর, শহীদুল্লাহ কলাভবনের সামনে আমতলা, ইবলিশ চত্বর, পরিবহন মার্কেট, প্যারিস রোড, সাবাস বাংলাদেশ মাঠ চত্বরসহ কোথাও চোখে পড়ার মতো মানুষ নেই। ক্যাম্পাসের প্রতিটি জায়গায় এই দিনে যেখানে তিল ধারণের মতো জায়গা থাকতো না সেখানে আজ একরাশ শূন্যতা বিরাজ করছে।
পহেলা বৈশাখে মূল আকর্ষণ থাকে রাবির চারুকলা বিভাগ। দিনব্যাপী নানা আয়োজনে বরণ করে নতুন বছরকে। গত বছর বড় পরিসরে অনলাইনে ‘ই-বৈশাখ’র আয়োজন করে থাকলেও এবার খুবই ছোট পরিসরে অনলাইনে বর্ষবরণের আয়োজন করা হয়।
চারুকলা অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক সিদ্ধার্থ শঙ্কর তালুকদার বলেন, একদিকে লকডাউন অন্যদিকে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা নেই। সবদিক বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কঠোর নির্দেশনা অনুযায়ী ক্যাম্পাসে জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকায় বড় কোনো আয়োজন রাখা হয়নি। গত বছর অনলাইনে ই-বৈশাখে আয়োজন ছিলো। অনলাইনে আয়োজনের জন্য আমাদের যে এক্সপার্ট টেকনিশিয়ান ছিলো তারা অনেকে এবারে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত। তাই এবার সীমিত পরিসরে অনলাইনে বৈশাখের আয়োজন করা হয়েছে।
চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী জনি মাহমুদ বলেন, প্রতিবারই বৈশাখকে কেন্দ্র করে আমাদের আয়োজনের কোনো কমতি থাকে না। নানা ব্যস্ততায় সময় কাটতো। কিন্তু এই অবসরে এবার সেটা নেই। সেই মুহূর্তগুলোর কথা খুব মনে পড়ছে। গতবছরে অনলাইনে বড় পরিসরে বর্ষবরণের আয়োজন করা হয়েছিল, তবে এবার ক্ষুদ্র পরিসরে আমরা অনলাইনে বর্ষবরণের আয়োজন করেছি। বিকেলের কিছুটা সময় আমরা চারুকলার ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ 'রেডিও চারু'তে আমাদের অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করেছি। অনুষ্ঠানে আড্ডা, গান এবং পরস্পরের মাঝে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি।
এসআর/
মন্তব্য করুন