ফেইল করা ছাত্রীদের ফের পরীক্ষার সুযোগ দিলো নারায়ণগঞ্জ প্রশাসন
নারায়ণগঞ্জের মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে অনুত্তীর্ণদের এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিতে রাজি হয়েছে প্রশাসন। তবে কেবলমাত্র দুই বিষয়ে অনুত্তীর্ণরাই এ সুযোগ পাবেন। বাকিদের ফের টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে পরীক্ষা দিতে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার বেলা এগারোটায় নারায়ণগঞ্জ সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় স্কুলের আন্দোলনরত ছাত্রী, তাদের অভিভাবকরা এবং স্কুলের ম্যনেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া সভায় জানান, স্কুলের দুই বিষয় পর্যন্ত অনুত্তীর্ণ ছাত্রীদের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে দেয়া হবে। বাকিদের মধ্যে যারা তিন সাবজেক্টে ফেল করেছে তারা যে কোন এক বিষয়ে, যারা চার বিষয়ে ফেল করেছে তারা যে কোন দুই বিষয়ে যারা পাঁচ বিষয়ে ফেল করেছে তারা যে কোন তিন বিষয়ে, যারা ছয় বিষয়ে ফেল করেছে তারা যে কোন চার বিষয়ে নতুন করে টেষ্ট পরীক্ষায় অংশ নেবে।
সে ফলাফলের ভিত্তিতে তাদের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়া হবে। এ পরীক্ষার জন্য কোনো ফি নেয়া হবে না। এসএসসির ফরম পূরণের জন্য কোনো লেট ফি-ও নেয়া হবে না।
মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ থেকে এ বছর ৫৩১ জন এসএসসি’র টেষ্ট পরীক্ষায় অংশ নেয়। এছাড়া আরো ৩১ জন অনিয়মিত ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নেয়। ৫৩১ জন্য এর মধ্যে মাত্র ২২৩ জন পরীক্ষায় পাশ করে। ফেল করে ৩০৮ জন। টেষ্ট পরীক্ষায় অংশ নেয়া ছাত্রীদের ৫৮ ভাগ টেষ্ট পরীক্ষায় ফেল করে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষিকা লায়লা আক্তারের কোচিং সেন্টারে যেসকল ছাত্রীরা কোচিং করেছে তাদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করা হয়েছে। আর যারা করেনি তাদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না করে বানিজ্যের সুযোগ তৈরী করা হয়েছে। পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ দেয়ার দাবিতে বুধবার স্কুলে বিক্ষোভ করে।
তারা প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ ও সহকারি প্রধান শিক্ষিকাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এসময় একাধিক ছাত্রী স্কুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
পুলিশ ও অভিভাবকদের হস্তক্ষেপে সে চেষ্টা ব্যার্থ হয়। পুস্পিতা কর্মকার, খাদিজা বিবি, প্রত্যাশা দাসসহ চারজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়।
পরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ইউএনও তাসনিম বিনতে শেখ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মতিয়ার রহমানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বৈঠকে প্রতিষ্ঠানের ম্যনেজিং কমিটির সভাপতি, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন না।
পরে টেলিফোনে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মোট ৮৫ জন ছাত্রী দুইয়ের অধিক বিষয়ে ফেল করেছে। তাদের নতুন করে টেষ্ট পরীক্ষা নেয়া হবে। এ পরীক্ষার ভিত্তিতে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। স্কুলে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ কী- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্কুলে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া এবং কড়াকড়ি আরোপের কারণেই এমন হচ্ছে।
তিনি বলেন, একটি মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের ইন্ধনে ও অপপ্রচারে স্কুলে বিক্ষোভ হয়েছে।
এসজে
মন্তব্য করুন