• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ উপযোগী দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে চাই : ইবি উপাচার্য

আরটিভি নিউজ

  ১৯ মার্চ ২০২১, ১৯:৪৯
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ উপযোগী দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে চাই : ইবি উপাচার্য
ইবি উপাচার্য

অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য। এর আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। কোভিড-১৯ মহামারিতে উচ্চশিক্ষার হাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে তিনি কথা বলেছেনে আরটিভির সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আবদুর রাজ্জাক সোহেল।

আরটিভি: আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্বনামধন্য অধ্যাপক ছিলেন। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়েছেন কয়েক মাস হলো। আপনার অভিজ্ঞতা জানতে চাই, কতখানি চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন নতুন এই দায়িত্ব?

শেখ আব্দুস সালাম: প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে অনেক উত্থান-পতন, চাওয়া-পাওয়াসহ বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হয়। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এর ব্যতিক্রম নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পেয়েছি বেশিদিন হয়নি। তাছাড়া করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক অবস্থাটা বুঝে উঠতে এখনো বাকি আছে। এখানে যেমন চ্যালেঞ্জ রয়েছে তেমনি সম্ভাবনাও আছে। এমুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আমার বাগান আছে কিন্তু বাগানে কোনও ফুল নেই। আমার শিক্ষার্থীরাই তো নাই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সচল করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ এককভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব না। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার সঙ্কট উত্তরণে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন।

আরটিভি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কোন সমস্যা আপনার নজরে এসেছে এবং কীভাবে তা সমাধান করছেন?

শেখ আব্দুস সালাম: বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক অবস্থাটা এখনো আমার কাছে পরিষ্কার না। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় সচল করা বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিষ্ঠান চালু হলে আমি দেখবো স্রোত কোথাও আটকে যাচ্ছে কিনা। যদি কোথাও প্রতিবন্ধকতা নজরে আসে তখন সেখানে নতুন চ্যানেল তৈরি করার প্রয়াস থাকবে। রাতারাতি কোনও বৈপ্লবিক পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। অনেক সময় দেখা যায় প্রশাসন পরিবর্তন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ধরণের পরিবর্তন হয়। আমি চাইবো বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান গতিশীলতা বজায় থাকুক। এই চালু স্রোতকে আরও কীভাবে গতিশীল করা যায় সেই প্রচেষ্টাই থাকবে। সবচেয়ে বড় কথা প্রশাসন পরিচালনায় আমি স্বচ্ছতা বজায় রাখার চেষ্টা করবো। নতুন অভিজ্ঞতাই ধীরে ধীরে আরও অনেক কিছু ভাবার বা দেখবার সুযোগ করে দিবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আমাকে বলে দিবে কী করা দরকার।

আরটিভি: বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও স্বপ্ন কী?

শেখ আব্দুস সালাম: পথ চলার ৪১ বছরে এই বিশ্ববিদ্যালয় নানান অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে। দীর্ঘ এই পথ চলতে গিয়ে ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কর্মপন্থা ও পরিকল্পনা রয়েছে। আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে জ্ঞান বিতরণ করা, জ্ঞান সৃজন করা। জ্ঞান বিতরণ ও সৃজন করতে ত্যাগ-তিতিক্ষা, শ্রম ও অর্থের প্রয়োজন হবে। চেষ্টা থাকবে আমার যতটুকু সম্পদ আছে সেটার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অন্তকোন্দল থাকলে সেখানে স্বচ্ছতা অনেক বড় কঠিন বাস্তবতা। আমি চাই সবাইকে নিয়ে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে। সবাইকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে চাই এবং স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে চাই। সবাই চায় নিজের বিশ্ববিদ্যালয় সেরা হোক। শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই শতভাগ দায়িত্ব পালন করলেই তো একটি বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যেতে পারে।

আরটিভি: করোনা মহামারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম কীভাবে সচল রাখছেন? বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস এবং পরীক্ষা কতখানি চালু আছে?

শেখ আব্দুস সালাম: বৈশ্বিক মহামারী করোনার অভিঘাত সারা পৃথিবীর শিক্ষাব্যবস্থায় পড়েছে। শিক্ষার্থীদের জীবনের কথা চিন্তা করে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা হয়তো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ রেখেছি। কিন্তু আমাদের ক্লাস কিন্তু থেমে নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে ভার্চ্যুয়ালি ক্লাস হচ্ছে। অনেক বিভাগে একটি সেমিস্টার শেষ করে আরেকটি সিমেস্টার শুরু হয়েছে। আমি দাবি করবো না শতভাগ হচ্ছে। এখানে বিভিন্ন ধরণের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে, আমাদের চলমানতা ঠিক আছে। আমরা সভা করেছি। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। করোনার আগ্রাসন নিয়ন্ত্রণে আসলে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফিজিক্যালি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

আরটিভি: আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ছোঁয়া কতটা লেগেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে? শিক্ষার্থীরা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা কতখানি পাচ্ছে?

শেখ আব্দুস সালাম: তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়ন এখন যুগের দাবি। বর্তমান সভ্যতায় টিকে থাকতে হলে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণের কোনও বিকল্প নেই। প্রযুক্তিগত সক্ষমতা যতোটা থাকা দরকার সবটা হয়তো আমাদের নেই। কিন্তু একেবারে পিছিয়ে আছি কিংবা একেবারেই নেই সেটা বলার অবকাশ নেই। অনলাইনে ক্লাস নিতে পারছি এটাও তো আধুনিক প্রযুক্তির একটি ফসল। আগামীতে মেগা প্রকল্পের অধীনে আরও প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ থাকবে।

আরটিভি: লাইব্রেরি সুবিধা এবং গবেষণা নিয়ে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা যদি জানান?

শেখ আব্দুস সালাম: আমার ইচ্ছা ছিল সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে ঘুরে সেখানকার বাস্তব অবস্থাটা পর্যবেক্ষণ করবো। লাইব্রেরির সুযোগ-সুবিধা কতটা পাচ্ছে সেটা তো আমার শিক্ষার্থীদের মুখ থেকেই শুনতাম। কিন্তু করোনার কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠেনি। আসলে শিক্ষার্থীরা না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃত সৌন্দর্য থাকে না। আমাদের এখানে যথেষ্ট বড় একটি লাইব্রেরি আছে। সেখানে আধুনিক সুযোগ সুবিধা এবং সমৃদ্ধ কালেকশন রয়েছে। লাইব্রেরির আধুনিকায়ন কার্যক্রম আগেও হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। পাঠক শারীরিকভাবে যেমন লাইব্রেরি ব্যবহার করবে তেমনি ই-লাইব্রেরিরও পর্যাপ্ত সুযোগ থাকা দরকার। এখানে হয়তো কিছুটা ঘাটতি আছে। ঘাটতি পূরণে আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

আরটিভি: কাগজে-কলমে আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েও আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সংকট প্রকট। এর কারণ কী এবং সমাধানে আপনার পরিকল্পনা কী?

শেখ আব্দুস সালাম: বিশ্ববিদ্যালয়ে মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। বিভিন্ন সেক্টরে কাজ চলছে। কিন্তু যথাসময়ে অনুমোদনের অর্থ সরবরাহ না করা হলে কাজে বিঘ্ন ঘটে। এজন্য আমাদেরকে অন্য ফান্ড বা উদ্বৃত্ত থেকে লোন নিয়ে কাজ সচল রাখতে হচ্ছে। উন্নয়ন প্রকল্পে এই হলো কাজ চালু রাখার সীমাবদ্ধতা। আমাদের বর্তমান মেগা প্রকল্পের আওতায় বেশ কয়েকটি হল হবার কথা রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চার থেকে সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা হবে। ফলে আবাসন সমস্যা অনেকটাই ঘুচবে।

আরটিভি: শিক্ষার্থীদের পরিবহন সংকটের সমাধানে আপনি কী ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন?

শেখ আব্দুস সালাম: পরিবহনে সীমাবদ্ধতার কথা প্রত্যাখ্যান করার সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরলে এবং আমার কাজে কিছুটা গতিশীলতা আসলে পরিবহন সেক্টরে কী কী সমস্যা আছে তা শনাক্ত করা হবে। অনেক শিক্ষার্থী ঝিনাইদহ থেকে এসে ক্লাস করে। আমাকে এতটুকু চেষ্টা করতে হবে শিক্ষার্থীরা যেন দূর থেকে এসেও সকালের প্রথম ক্লাসে অংশ্রগহণ করতে পারে এবং শেষ ক্লাসটা করে নিজ নিজ বাসায় পৌঁছাতে পারে। অন্তত এই ব্যবস্থাটুকু করতে হবে। মিনিমাম ঘাটতি থাকলে অবশ্যই আমি ব্যবস্থা নিবো।

আরটিভি: এদেশের নেতৃত্বের বিকাশে ছাত্র সংসদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ইকসু) শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি। ইকসু সচল করতে আপনার কী পরিকল্পনা আছে?

শেখ আব্দুস সালাম: গণতন্ত্রের বিকাশের জন্য ছাত্র সংসদের বিকল্প নেই। ছাত্রসংসদ সচল না থাকা রাজনীতির জন্য একটি বড় সংকট। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি রাজনীতিতে শুদ্ধতা বজায় রাখার জন্য ছাত্রসংসদের বিকল্প নেই। ছাত্ররা আজকাল ছাত্র সংসদের চেয়ে রাজনীতির সঙ্গে বেশি সংশ্লিষ্ট। সারা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ সচল না হলে আমাদের একার পক্ষে এটা করা কঠিন হবে।

আরটিভি: প্রতিষ্ঠার পর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র ৪টি সমাবর্তন হয়েছে। নিয়মিত সমাবর্তন না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্জিত ডিগ্রির সনদ আনুষ্ঠানিকভাবে হাতে নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। এনিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ এবং হতাশা রয়েছে। প্রতিবছর সমাবর্তন করা কি অসম্ভব?

শেখ আব্দুস সালাম: প্রতিবছর সমাবর্তন করা অসম্ভব না। একটি আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনটাই হওয়া উচিৎ। সমাবর্তনের জন্য একটি বিশাল আর্থিক সক্ষমতা ও প্রস্তুতি থাকা দরকার। এটা সবসময় হয়ে উঠে বলে মনে হয় না। এখানে আমাদের ঘাটতি রয়েছে। তবে এর জন্যই যে সবকিছু আটকে আছে বিষয়টা তা না। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব বড়সড় একটি সফল সমাবর্তন হয়েছে। প্রতিবছর পরীক্ষা শেষে সমাবর্তনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা সার্টিফিকেট নিয়ে বেরিয়ে যাবে এমনটাই হওয়া দরকার। কিন্তু নানান বাস্তবতায় তা হয়ে উঠে না। আমার চেষ্টা থাকবে একাধিক সমাবর্তন করার।

আরটিভি: সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে শিক্ষক সমিতিসহ সব সংগঠনের মাঝেই সম্পর্কের ফাটল ধরেছে। পারস্পরিক বিভেদ কিভাবে জোড়া লাগাবেন?

শেখ আব্দুস সালাম: শিক্ষকদের মধ্যে বিভেদ হবে জ্ঞান নিয়ে, তত্ত্ব নিয়ে। পারস্পরিক যুক্তি-তর্কের মধ্য দিয়েই নিত্য-নতুন সমাধানের পথ উন্মোচন হবে। বিভিন্নজন বিভিন্ন তত্ত্বের অনুসারী হবে। প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন আদর্শ থাকতে পারে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বার্থের প্রশ্নে যেন সবাই এক থাকে। নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য যেন দ্বন্দ্ব না হয়। আমি আশা করবো বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন সবার মাঝে সুসম্পর্ক বজায় থাকে।

আরটিভি: ৪২তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে পাঠ্যক্রমের আধুনিকায়ন, বর্ধিত ফি প্রত্যাহার, গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি, মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ, সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পূর্ণ আবাসিককরণসহ ২১ দফা দাবি জানিয়েছে ছাত্র মৈত্রী। ইস্যুগুলো আপনি কতখানি আমলে নিচ্ছেন?

শেখ আব্দুস সালাম: ছাত্রদের প্রতিষ্ঠান যেহেতু সেহেতু তাদের নিজস্ব দাবি থাকবেই। অভিভাবকদের কাছে সন্তানরা তো দাবি করতেই পারে। আমাদের চেষ্টা থাকবে সাধ্যের মধ্যে ছাত্রদের জন্য যতটা বেশি করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমাবদ্ধতা এবং বাস্তবতা বিবেচনা করেই তাদের দাবি মূল্যায়ন করবো। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল বলেই সরকারের পক্ষ থেকে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পাঁচটি হল হবে, প্রায় সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থীর আবাসনের বন্দোবস্ত হবে।

আরটিভি: ৪২ বছরে দাঁড়িয়েও বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশনজটের কবল থেকে মুক্ত করা যায়নি। ফল প্রকাশে বিলম্ব ঘটে একাধিক বিভাগে। ফলে কর্মজীবনে প্রবেশ করতে বিলম্ব হয়। বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশনজটমুক্ত করা কি সম্ভব?

শেখ আব্দুস সালাম: সেশন জট শিক্ষাজীবনের বড় একটি সংকট। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা দুই তিন বছরের সেশনজটের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছি। আমার আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের বর্তমান প্রজন্ম যেন এই সমস্যায় জর্জরিত না হয়। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পরীক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন করতে পারলে এই সমস্যার সমাধান হবে। আমরা চাই না শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে রেখে দিতে। চলমান শিক্ষার্থীরা বের না হলে নতুন যারা আসবেন সেই অতিথিদের কোথায় জায়গা দিবো? বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই। তাছাড়া এ বিষয়ে ডিন সাহেবরা কেউ রিপোর্টও করেনি। তবে, আমরা ভয়ানকভাবে পিছিয়ে নেই। করোনার কারণে হয়তো সংকট প্রকট হবে।

আরটিভি: একুশ শতকের উপযোগী করে শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদরূপে গড়ে তুলতে আপনার ভাবনা কী? বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানতে চাই?

শেখ আব্দুস সালাম: এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ, সামনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। প্রযুক্তির যুগে টিকে থাকতে হলে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে। এই বিষয়কে সামনে রেখেই আমাদের শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে হবে। আমাদের যে সীমাবদ্ধ সম্পদ রয়েছে সেটার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। ছাত্র-শিক্ষক সবার চাওয়া-পাওয়াকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমি চাই প্রতিদিন এক পা-দু’পা করে ভালোর দিকে অগ্রসর হবো। আধুনিকতার দিকে আমাদের এগিয়ে যেতেই হবে। প্রতিমুহূর্তের প্রযুক্তি ও জ্ঞানে সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আমার স্বাপ্নিক ভাবনা শুধু চলমানতায় বসে থাকা যাবে না। এগিয়ে যাওয়ার স্রোতেই আমি গাঁ ভাসাবো।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • শিক্ষা এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh