• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বাংলাদেশে রসায়ন চর্চার বৈজ্ঞানিক সংগঠন ‘কেমফিউশন’ এগিয়ে চলছে

অনলাইন ডেস্ক
  ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:১০
বাংলাদেশে রসায়ন চর্চার বৈজ্ঞানিক সংগঠন ‘কেমফিউশন’ এগিয়ে চলছে
ছবি: সংগৃহীত

দেশে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন বিশ্ব বিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে রসায়ন চর্চার সংগঠন ‘কেমফিউশন’ আত্মপ্রকাশ করেছে। সংগঠনটির এক ঝাঁক তরুণ ও শিক্ষকদের নিরলস কার্যক্রমে ইতোমধ্যে সাড়া জাগাতে শুরু করেছে।

সংগঠনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে কোনও না কোনও বিষয়ের উপর সংগঠন রয়েছে। কিন্তু রসায়ন চর্চা বা রসায়নকে সমৃদ্ধি করতে তেমন কোনও সংগঠন নেই বললেই চলে। দেশে রসায়ন সমিতি থাকলেও নানা গবেষণা ও সুযোগ সুবিধা থেকে পিছিয়ে রয়েছে। যার কারণে চ্যালেঞ্জিং এ সময়ে পরিপূর্ণ রসায়ন চর্চার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ।

পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিকমানের গড়ে তুলতেই সগঠনটি আত্মপ্রকাশ করেছে। দেশব্যাপী স্কুল কলেজে রসায়ন পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করা ও তাদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে সংগঠনটির নানা উদ্যোগ রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে দেশের বিজ্ঞান, রসায়ন, রাসায়নিক প্রকৌশলের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সংগঠনটি।

বৈজ্ঞানিক সংগঠনের আদলে গঠিত এ কেমফিউশন। তাদের রয়েছে রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন, ইনোভেশন অ্যান্ড সায়েন্টিফিক প্রজেক্ট ম্যানেজম্যান্ট টিম, ওয়েবসাইট অ্যান্ড ব্লগসহ আরও একাধিক টিম। এইসব টিম নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে দেশের রসায়নের উৎকর্ষ সাধনের জন্য। ক্ষুদ্র পথচলায় এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠা করেছে দেশের প্রথম রসায়নভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট কেমফিউশন ডট নেট। এ ওয়েব সাইটে রসায়নের নানাবিধ বিষয়কে বাংলায় সহজ-সাবলীলভাবে তুলে ধরা, রসায়নের নতুন গবেষণা সম্পর্কে ধারণা দেয়া এবং রসায়নকে আকর্ষণীয় করতে অনবদ্য ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্টদের আশাবাদ।

চলতি বছরে (২০২০) ২৯ এপ্রিল রসায়ন, ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল এর উদ্যমী একঝাঁক শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে ‘কেমফিউশন’ আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে এই সংগঠনের বিভিন্ন টিমে ১০০ এর অধিক তরুণ কাজ করে যাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানটির কো-অর্ডিনেটর সাঈদ নেওয়াজ চৌধুরী নিশান বলেন, বিজ্ঞানের মৌলিক শাখাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো রসায়ন৷ বিশ্বজগত সৃষ্টির শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মানুষ এবং তার পারিপার্শ্বিক সকল কিছুর কারণ এবং ব্যাখ্যার সঙ্গে রসায়ন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। তবে অপ্রিয় হলেও সত্য যে, বাংলাদেশে রসায়ন চর্চা এখনো যথাযথ প্রসার লাভ করতে পারেনি। এই পিছিয়ে পড়া থেকেই তারুণ্যের হাত ধরে নতুন চ্যালেঞ্জে কেমফিউশন। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা সম্পর্কিত একটি ইনফরমেশন হাব তৈরির কাজ করছে 'কেমফিউশন'। সেই সাথে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একাডেমিক নলেজ ও রিসোর্স শেয়ার এর একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে সংগঠনটি।


সংগঠনটির সদস্য সচিব সৌরভ বিশ্বাস জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা নানা ধরণের একাডেমিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এক্ষেত্রে তাদের জন্য যথাযথ গাইডলাইন প্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনের সদস্যরা। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে বিজ্ঞানমনা ও সৃজনশীল প্রতিভা অন্বেষণ করছে সংগঠনটি। পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সমস্যা সমাধানে লাইভ আলোচনা করে হচ্ছে। এ ছাড়া কেমফিউশন’র অনেক সদস্য বর্তমানে গবেষণায় যুক্ত আছেন। অনেকের বিভিন্ন প্রকাশনা আন্তর্জাতিক জার্নালে জায়গা করে নিচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটির আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ হাসান জানান, উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও ক্যারিয়ার পরিকল্পনা নিয়ে সর্বদাই সচেষ্ট আমাদের এ সংগঠন। রসায়নের উপর দেশে মৌলিক গবেষণায় আগ্রহী প্রজন্ম গড়ে তুলতে চেষ্টা করছি আমরা। তাই নতুন প্রজন্মের সামনে গবেষণার প্রেরণা তুলে ধরার এ প্রচেষ্টার কারণে শিক্ষানুরাগীদের কাছ থেকে আমরা উৎসাহ পাচ্ছি। সেই সাথে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একাডেমিক নলেজ ও রিসোর্স শেয়ারের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে আমাদের এই সংগঠন।

এ সংগঠনের একজন গ্রিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক সুব্রত পাল। তিনি জানান, বাংলাদেশে একটি রসায়ন সমিতি রয়েছে। কিন্তু এতে যুগোপযোগী রসায়ন চর্চার ঘাটতি রয়েছে। যার কারণে আমাদের এ কেমফিউশন। আমরা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিকমানের কার্যক্রম শুরু করেছি। পাশাপাশি সংগঠনের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। যা প্রতিদিন রসায়নের উপর আপডেট দেয়া হচ্ছে। রসায়ন চর্চাকে কাছে নিয়ে আসার জন্য জেলা শহরগুলোতে শিক্ষার্থীদের ল্যাব সুবিধার চিন্তা করা হচ্ছে। করোনা সংকট উত্তরণের সাথে সাথেই ল্যাবের কার্যক্রমের দিকে ধাবিত হবো।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • শিক্ষা এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh