• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘দি ব্যাটল অব ব্রিকলেন’ বাঙালির আরও একটি যুদ্ধ জয়ের গল্প

শামীম আহমেদ

  ১৯ মে ২০১৮, ১২:৪৩

১৯৭৮ সালের ৪ মে লন্ডনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দিন তিন কিশোর মিলে বস্ত্র শ্রমিক আলতাব আলীকে হত্যা করে। ওই কিশোররা আলতাব আলীকে চিনতো না। মূলত ভিন্ন বর্ণের মানুষকে মারাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। তার মৃত্যুর পরে পর্ব লণ্ডনে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা নতুন করে উপলব্ধি করলো বেচেঁ থাকার জন্য সংগ্রাম ছাড়া কোনো পথ নেই। ‘দি ব্যাটল অব ব্রিকলেন’ বইটি বাঙালির আরও একটি যুদ্ধ জয়ের গল্প। বীরত্বের জাতি হিসাবে বাঙালিকে বিশ্বমঞ্চ নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার গল্প।

‘দি ব্যাটল অব ব্রিকলেন’ বইটি লেখক একে আজাদ কনর ১৯৭২ থেকে ১৯৯১ টাওয়ার হ্যামলোটস এলাকায় সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করতেন সে সুবাধে শাসকগোষ্ঠীর কাছ থেকে বাংলাদেশিদের জন্য অধিকার আদায়ে ভূমিকা রেখেছেন। পাশাপাশি বর্ণবাদ বিরোধী সংগঠন ‘বাংলাদেশি ইয়োথ ফ্রন্ট’ সক্রিয় সদস্য হিসাবে ১৯৭৮ সালের বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের ধারা বিবরণী গল্পের আদলে তার ‘দি ব্যাটল অব ব্রিকলেন’ বইয়ে স্থান পেয়েছে। যারা ইতিহাস নিয়ে ঘাটতে আগ্রহী তাদের জন্য বইটি বিশেষভাবে উপযোগী।

আজ বৃটেনে বাঙালি অধিবাসী নির্ভয়ে সর্বত্র বিচরণ করে বেড়াচ্ছেন এবং ব্যবসা বাণিজ্য, পড়াশোনা, রাজনীতি ও সাহিত্য-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থেকে দেশের নাম উজ্জল করছেন ৭০ দশকে এসব কল্পনাও করা যেতো না। তৎকালীন সময় বাঙালিদের জন্য পথে পথে ছিলো বিপদ, অন্ধকার আর মৃত্যুর হাতছানি। এ গল্পগুলো তরুণদের কাছে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে তুলে ধরা হয়েছে এ বইয়ে।

বৃটেনে বাঙালী শ্রমিক বিশেষ করে গার্মেট শ্রমিকদের করুণ জীবনযাত্রা ও তাদের বাসস্থান, চিকিৎসাসহ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত মানুষের গল্পগুলো শুধু উঠে আসেনি, পাশাপাশি বইটিতে তৎকালিন আন্দোলন, শ্রমিকদের জীবনযাত্রার অসংখ্য ছবি ব্যবহারের কারণে গল্পগুলো আরও বেশি জীবন্ত হয়ে উঠেছে।

বর্ণবাদের সরূপ সন্ধানে লেখক তৎকালিন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ব্রিটেনের কট্টর ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ফ্রন্ট ভূমিকা ও তাদের কার্যক্রমগুলো তুলে ধরেন। ‘দি ব্যাটল অব ব্রিকলেন’ বইয়ে লেখক বলেন, ব্রিটেনে এখন আমাদের সম্প্রদায়ের চতুর্থপ্রজন্ম বসবাস করছে। তাদেরকে এ গল্প বলবার আছে আমাদের। আমাদের এ গল্প সংরক্ষণ করা জরুরি। কিন্তু এ গল্প তৈরির তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আমি বেশ বিপত্তির মুখে পড়েছিলাম।

তিনি বলেন, ১৯৭৮ সালে যারা বর্ণবাদী ও আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলো তারা কেউ মারা গেছেন কেউবা আবার ব্রিটেনের অন্য কোনো শহরে চলে গেছেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশি সম্প্রদায় দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে। কিন্তু আমি এখনও অনুভব করি বর্ণবাদ দূর করতে হলে এখনও আমাদের কাজ করতে হবে। এখনও পুলিশ, এনএইচএস (জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা) এর মতো অসংখ্য সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বর্ণবাদী মনোভাবের শিকার হতে হয়।”

এ বইটিতে শুধু বর্ণবাদী আন্দোলনে ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবে নয় পাশাপাশি এ ইতিহাস তরুণ প্রজন্মকে তাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার, স্বাধীনতার অধিকারসহ যাবতীয় অধিকার আদায়ে লড়াই করার অনুপ্রেরণা যোগাবে।

এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • শিল্প-সাহিত্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh