যুক্তরাষ্ট্রে ভাড়া না দিয়ে পালাতে চাওয়া যাত্রীকে ধরতে গিয়ে বাংলাদেশির মৃত্যু
নিউইয়র্কে ব্রঙ্কসে বাংলাদেশি এক ইয়েলো ক্যাব ড্রাইভার নিজ ক্যাবের আঘাতে নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় রোববার রাতে এই ঘটনা ঘটে।
ক্যাব চালক মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ রাতে যাত্রী নিয়ে ব্রঙ্কসের সাউন্ড ভিউ এলাকায় আসেন। এসময় ভাড়া না দিয়েই ওই যাত্রী পালানোর চেষ্টা করলে ভাড়ার জন্য তিনি তাকে ধাওয়া করেন। তাড়াহুড়ার মধ্যে পার্কিং না করে ড্রাইভিংয়ে রেখেই তিনি গাড়ি থেকে বের হন।
এই অবস্থায় নিজ গাড়ীর আঘাতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হলে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান জাফর উল্লাহ। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
ডি/
মন্তব্য করুন
নেট ব্যবহারকারীদের জন্য সুখবর
ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ জিপনের বিশেষ সাশ্রয়ী প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ ঘোষণা দেন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বিটিসিএলের ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ জিপনের বিশেষ সাশ্রয়ী প্যাকেজের আওতায় ৫ এমবিপিএসের বিদ্যমান মূল্যে ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন সাশ্রয়ী এই প্যাকেজের আওতায় ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউথ পাওয়া যাবে ৫০০ টাকায়। ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেটের বিদ্যমান মূল্য ৮০০ টাকা।
তিনি জানান, তবে এখন থেকে ১৫ এমবিপিএস পাওয়া যাবে ৮০০ টাকায়। ১২৫০ টাকার ২০ এমবিপিএস মিলবে ১০৫০ টাকায়। ১৪৫০ টাকার ২৫ এমবিপিএস মিলবে ১৩০০ টাকায়। ১৬৫০ টাকার ৩০ এমবিপিএসের নতুন মূল্য ১৫০০ টাকা। ২০৫০ টাকার ৪০ এমবিপিএসের মূল্য ২০০০ টাকা। ২৪৫০ টাকার ৫০ এমবিপিএস মিলবে ২৪০০ টাকা।
প্রতিমন্ত্রী জানান, জিপনের নতুন ঘোষিত প্যাকেজের এ সুযোগ সীমিত সময়ের জন্য প্রযোজ্য হবে।
এদিন টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ই-সিমও উদ্বোধন করা হয়। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষা শহীদদের স্মরণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন বাংলা ভাষাভিত্তিক তিনটি অ্যাপ ও নতুন একটি বাংলা ফন্ট ‘পূর্ণ’ উন্মুক্ত করা হয়।
শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস দিলো আবহাওয়া অফিস
বসন্তে শীতের প্রভাব কেটে গরম পড়তে শুরু করেছে। দেশের সব বিভাগে বৃষ্টির সঙ্গে কিছু অঞ্চলে শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এ সময় তাপমাত্রাও কমতে পারে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমনটি জানানো হয়েছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, এদিন ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। ভোরের দিকে সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে এছাড়া দেশের অন্যত্র তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। ভোরের দিকে সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু'এক জায়গায় বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। ভোরের দিকে সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আগামী পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, এ সময়ের প্রথমদিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।
শবে বরাতেও যারা ক্ষমা পাবেন না
ফারসি ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত এবং ‘বরাত’ অর্থ সৌভাগ্য। এ দু’টি শব্দ নিয়ে ‘শবেবরাত’, অর্থাৎ সৌভাগ্যের রজনী। আরবিতে একে বলে ‘লাইলাতুল বরাত’।
হাদিসের ভাষায় বলা হয়- ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ বা ১৫ শাবানের রাত। এই রাতে আল্লাহ তাআলা মানুষকে অভাব-অনটন, রোগ-শোক, বিপদ-আপদ ও গুনাহ থেকে মুক্তি চাওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে অনেকগুলো হাদিস বর্ণিত হয়েছে। ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, ‘এমন পাঁচটি রাত রয়েছে, যেগুলোতে আল্লাহ তাআলা বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেন না। সেই রাতগুলো হলো, জুমার রাত, রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৫ তারিখের রাত, দুই ঈদের রাত।’ (সুনানে বায়হাকি, হাদিস : ৬০৮৭; শুয়াবুল ঈমান, হাদিস : ৩৪৪০; মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৯২৭)
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) এই রাতে মদিনার কবরস্থান জান্নাতুল বাকিতে এসে মৃতদের জন্য দোয়া ও ইস্তিগফার করতেন। তিনি বলেন, এই রাতে কালব গোত্রের বকরির পশমের সংখ্যার চেয়েও বেশিসংখ্যক বান্দাকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৩৯, ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৭৯, শুয়াবুল ঈমান, হাদিস : ৩৫৪৪)।
অনেক হাদিসে এসেছে, ক্ষমার রাত শবে বরাত। আল্লাহ তাআলা এই রাতে অসংখ্য মানুষকে ক্ষমা করে দেবেন। কিন্তু এরপরও কিছু লোক আছেন, যাদের আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। এই রাতে তাদের ভাগ্যে ক্ষমা নেই।
মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) সূত্রে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, মধ্য শাবানের রাতে, অর্থাৎ শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিকুলের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক, হিংসুক ও বিদ্বেষী লোক ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৬৬৫; আল মুজামুল কাবির : ২০/১০৯; শুয়াবুল ঈমান, হাদিস : ৬৬২৮)।
রাসুল (সা.) যেভাবে কাটাতেন শবেবরাত
মুসলমানদের জন্য অন্যতম বরকতময় একটি রাত শাবান মাসের ১৪ তারিখের দিবাগত রাত। ভারতীয় উপমহাদেশ, পারস্যসহ পৃথিবীর অনেক দেশে যা ‘শবেবরাত’ নামেই অধিক পরিচিত। শবেবরাত কথাটি ফারসি থেকে এসেছে। শব মানে রাত আর বরাত মানে মুক্তি; অর্থাৎ শবে বরাত অর্থ মুক্তির রাত। ‘শবেবরাত’-এর আরবি হলো ‘লাইলাতুল বারকাত’। হাদিস শরিফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী বলা হয়েছে।
আরবি দিনপঞ্জিকার হিসেবে আজ (২৫ ফেব্রুয়ারি) সেই শবে বরাত। আজকের রাতের ফজিলত সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। আলী বিন আবু তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘অর্ধ শাবানের রাত তোমরা ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলা রোজা রাখো। কেননা, এ রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে এসে বলেন, কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছো কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। কোনো রিজিক অন্বেষণকারী আছো কি? আমি তাকে রিজিক প্রদান করবো। আছো কি কোনো রোগাক্রান্ত? আমি তাকে আরোগ্য দান করবো। এভাবে সুবহে সাদিক পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে তাদের ডাকতে থাকেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৩৮৮)
মুফাসসিরিনগণের ভাষ্য অনুযায়ী, শাবান মাসের ১৪ তারিখের এ সম্পূর্ণ দিনটি ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটাতেন মহানবী (সা.)। পুরো রাত জেগে ইবাদত করতেন তিনি। রাতভর মশগুল থাকতেন নফল নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত, তাসবিহ-তাহলিল পাঠ, তওবা-ইস্তেগফার ইত্যাদি আমলে।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) এর বর্ণনা অনুযায়ী রাসুল (সা.) বলেন, পাঁচটি রাত এমন আছে, যে রাতে বান্দার কোনও দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। আর তা হলো- জুমার রাতের দোয়া, রজব মাসের প্রথম রাতের দোয়া, নিসফা শাবান তথা অর্ধ শাবানের রাতের দোয়া, ঈদুল ফিতর তথা রোজার ঈদের রাতের দোয়া, ঈদুল আজহা তথা কুরবানির ঈদের রাতের দোয়া।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ৭৯২৭)।
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, একবার রাসুল (সা.) রাতে নামাজে দাঁড়িয়ে এত দীর্ঘ সময় সেজদায় রইলেন যে, আমার ধারণা হলো, হয়তো তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তখন আমি তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিয়ে দেখলাম। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়েশা, ওহে হুমাইরা! তোমার কি আশঙ্কা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসুল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না হে আল্লাহর রাসুল! আপনার দীর্ঘ সেজদায় আমার আশঙ্কা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। রাসুল (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভালো জানেন। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত অর্থাৎ শাবানের চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত। আল্লাহ তায়ালা অর্ধ শাবানের রাতে তাঁর বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন, অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন, বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই’ (শুয়াবুল ঈমান : ৩৫৫৪)। শবে বরাতে নবীজি (সা.) রাতভর ইবাদত করতেন এবং দিনের বেলা রোজা রাখতেন। উম্মে সালমা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে শাবান ও রমজান ছাড়া দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি। (আবু দাউদ : ২৩৩৬)
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে আরও বর্ণিত হয়েছে, নবীজি (সা.) এ রাতে মদিনার কবরস্থান ‘জান্নাতুল বাকি’তে এসে মৃতদের জন্য দোয়া ও ইস্তিগফার করতেন। তিনি আরও বলেন, নবীজি (সা.) তাঁকে বলেছেন, এ রাতে বনি কালবের ভেড়া বকরির পশমের (সংখ্যার পরিমাণের) চেয়েও বেশিসংখ্যক গুণাহগারকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস: ৭৩৯)।
শবে বরাতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো বেশি বেশি তওবা-ইস্তেগফার করা। কারণ, বরকতময় এই রাতে আল্লাহ তায়ালা প্রথম আকাশে এসে বান্দাদের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন। তাদের গোনাহগুলো মাফ করেন। হাদিস শরিফে বিবৃত হয়েছে, রাসুল (সা.) বললেন, ‘যখন অর্ধ শাবানের রাত আসে তখন আল্লাহ তায়ালা প্রথম আকাশে অবস্থান করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষপোষণকারী ছাড়া অন্যদের ক্ষমা করে দেন।’ (মুসনাদে বাজজার : ৮০)
তবে এ রাতকে কেন্দ্র করে ভিত্তিহীন কোনও কাজ করা যাবে না। হাদিস শরিফে শবে বরাতে রাসুল (সা.) থেকে বিশেষ পদ্ধতির কোনও ইবাদত প্রমাণিত নেই এবং সাহাবায়ে কেরামদের থেকেও এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।
আসুন, আমরা অর্থনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতিতে রাসুলুল্লাহ (স.) এর উম্মত হিসেবে এই রাতে আল্লাহর দিকে মনোযোগী হই, বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং বিশুদ্ধ আমলের মাধ্যমে শবে বরাতের ফজিলত, বরকত ও মাগফিরাত হাসিল করি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের তওফিক দান করুন।
তার ছাড়াই ব্রডব্যান্ড পাবেন গ্রাহকরা
গ্রাহকদের ফিক্সড ওয়্যারলেস অ্যাকসেস (এফডাব্লিউএ) সেবা দেওয়ার অনুমতি পেয়েছে দেশের টেলিকম অপারেটররা। এতে তার ছাড়াই ওয়াইফাই সংযোগ লাভ করতে পারবেন তাদের গ্রাহকরা।
ফলে, দেশের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আশা করা যাচ্ছে সামনে। কারণ, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহকারীদের (আইএসপি) সঙ্গে দারুণ এক প্রতিযোগিতা শুরু হতে যাচ্ছে মোবাইল অপারেটর কোমানিগুলোর। আর গ্রাহকদের সামনে হাজির হতে যাচ্ছে বিকল্প সুযোগ।
নতুন ফাইভ-জি নির্দেশিকা কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এফডাব্লিউএ পরিষেবা অনুমোদনসহ ওয়ারলেস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বাসাবাড়ি ও ব্যবসার মতো নির্দিষ্ট স্থানে দ্রুত-গতির ইন্টারনেট সেবা দিতে পারবে মোবাইল অপারেটরগুলো। ফলে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার পরিসর আরও বাড়বে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় তার দিয়ে ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার সুযোগ সীমিত, সেসব এলাকার মানুষও ব্রডব্যান্ড স্পিডের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন অনায়াসে। তবে, এ জন্য হাতে থাকা লাগবে একটি ফাইভ-জি সাপোর্টেড মোবাইল ফোন বা ডিভাইস। কারণ, তারবিহীন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সরবরাহ করতে সাধারণত ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের উচ্চগতির ক্ষমতা ব্যবহার করে এফডাব্লিউএ।
আর তাই শিল্প সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দেশের টেলিকম অপারেটরগুলো এখনও বাণিজ্যিকভাবে ফাইভ-জি চালু করতে অনিচ্ছুক হওয়ায় এই সেবা সম্প্রসারণে সময় লাগবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে টেলিকম অপারেটররা মোবাইল ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে এবং আইএসপি লাইসেন্সধারীরা ব্রডব্যান্ড সেবা প্রদান করে। সাধারণত মোবাইল অপারেটররা থ্রিজি, ফোরজি ও ফাইভ-জির মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেলুলার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে। এই নেটওয়ার্কগুলো স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটে ওয়্যারলেস ডেটা ট্রান্সমিশন করতে সক্ষম।
অন্যদিকে ব্রডব্যান্ড অপারেটররা তার বা ফাইবার অপটিক্সের মতো সংযোগের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সরবরাহ করে। তারা মোবাইল নেটওয়ার্কের তুলনায় বেশি ব্যান্ডউইথ ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে থাকে।
তবে, এখন মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটররাও একই ধরনের সেবা দিতে পারবে। এজন্য গ্রাহকদের শুধু সিগনালের জন্য বাইরে একটি অ্যান্টেনা, ভিতরে একটি মডেম বা রাউটার ও অপারেটরের কাছ থেকে সাবস্ক্রিপশন নিতে হবে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১৩ কোটি ১৩ লাখ, যার মধ্যে ১১ কোটি ৮৪ লাখ মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক। বাকি ১ কোটি ২৮ লাখ ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারী।
বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা বলেন, ভবিষ্যতে ফাইভ-জি সেবা চালুর কথা মাথায় রেখেই মোবাইল অপারেটরদের এফডাব্লিউএ সেবা চালুর অনুমতি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
ঘুম থেকে উঠেই যে দোয়া পড়তেন রাসুল (সা.)
ইসলামি জীবন ব্যবস্থার মূলভিত্তিই কোরআন এবং সুন্নাহ। কোরআন মানুষের জন্য পথ নির্দেশক। আর তার ব্যাখ্যা হচ্ছে বিশ্বনবীর সুন্নাহ। রাসুল (সা.) এর দিকনির্দেশনাই মুক্তির একমাত্র পথ।
বিশ্বনবীর দেখানো পথ অনুসরণ করে আমল করলে সহজ হয় মহান আল্লাহ তা'আলার নৈকট্য অর্জন। কোন সময়ে কি দোয়া পড়তে হবে, নিজে আমল করে তা শিখিয়ে গেছেন রাসুল (সা.), যার উল্লেখ আছে হাদিসে। সকালবেলা পড়ারও দোয়া শিখিয়েছেন তিনি।
হযতর আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তোমরা ভোরে উপনীত হয়ে (ঘুম থেকে উঠে) এই দোয়া পড়বে।
দোয়াটি হলো- আল্লাহুম্মা বিকা আসবাহনা ওয়া বিকা আমসাইনা ওয়া বিকা নাহইয়া ওয়া বিকা নামুতু।
অর্থ: হে আল্লাহ! তোমার আদেশেই আমরা প্রভাতে উপনীত হই এবং তোমার আদেশেই আমরা সন্ধ্যায় উপনীত হই, তোমার আদেশেই আমরা জীবন ধারণ করি এবং তোমার আদেশেই আমরা মৃত্যুবরণ করি। (ইবনে মাজাহ: ৩৮৬৮)
এছাড়া, বুখারি শরীফে বর্ণিত আরেকটি দোয়া আছে, যা রাসুল পাক (সা.) ঘুম থেকে উঠেই পড়তেন।
দোয়াটি হলো- আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বা’দা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর।
অর্থ : সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদের মৃত করার পর পুনরায় জীবিত করেছেন। আর তার দিকেই সবার পুনরুত্থান। (বুখারি, হাদিস : ৬৩২৪)
সকাল থেকে সন্ধ্যা মহান আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামত ভোগ করে মানুষ। এসব নিয়ামতের যথাযথ কৃতজ্ঞতা আদায় সবার কর্তব্য। একটি হাদিসে রাসুল (সা.) নিম্নের দোয়াটি পাঠের মাধ্যমে নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা আদায় করতে বলেছেন।
দোয়াটি হলো- আল্লাহুম্মা মা আসবাহা বি মিন নিমাতিন আউ বিআহাদিন মিন খালকিকা ফামিনকা ওয়াহদাকা, লা শারিকা লাকা, ফালাকাল হামদু ওয়া লাকাশ শুকরু।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি ও আপনার অন্য কোনও সৃষ্টি যে নিয়ামত ভোগ করছি তা একমাত্র আপনার পক্ষ থেকেই। আপনার কোনও অংশীদার নেই। সুতরাং আপনারই প্রশংসা ও আপনারই কৃতজ্ঞতা।
হাদিস : আবদুল্লাহ বিন গান্নাম আল-বায়াজি থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ভোরে (ঘুম থেকে) উঠে উল্লিখিত দোয়াটি পড়বে সে যেন সকালের কৃতজ্ঞতা জানাল। যে ব্যক্তি তা বিকালে পড়বে সে যেন রাতের কৃতজ্ঞতা জানাল।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৭৩; ইবনু হিব্বান, হাদিস নং : ৮৬১)
এছাড়া ফজরের নামাজের সালাম ফেরানোর পরপর একটি দোয়া পড়তেন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এ আমলটি প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদার। কেননা মুমিন মুসলমানের জন্য হালাল রিজিক, উপকারী জ্ঞান, কবুলযোগ্য আমলই জীবনে একমাত্র চাওয়া-পাওয়া। হাদিসের বর্ণনায় দোয়াটি এসেছে এভাবে-
হযরত উম্মু সালামাহ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতিদিন ভোরে ফজরের নামাজ পড়ে সালাম ফিরিয়ে বলতেন-
'আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিআ ওয়া রিযকান তায়্যিবা ওয়া আমালান মুতাকাব্বালা।'
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে উপকারী জ্ঞান প্রার্থনা করছি, উত্তম-পবিত্র রিজিক কামনা করছি এবং কবুল হওয়ার মতো কর্ম তৎপরতা কামনা করছি।’ (ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ)
রাসুল (সা.) নিয়মিত ফজরের নামাজের পরপরই আল্লাহর কাছে হালাল রিজিক কামনা করতেন। এমন জ্ঞান কামনা করতেন, যাতে মানুষের উপকার হয়। আর নিজের আমলগুলো কবুল হওয়ার জন্যও দোয়া প্রার্থনা করতেন।
পরিশেষে, সুন্নাতের অনুসরণে জীবন-যাপন মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ। বিশ্বনবী (সা.) মানুষকে দেখিয়েছেন সেই সঠিক পথ। দিয়েছেন সুখ ও বরকতময় জীবন পাওয়ার পাথেয় ও দিকনির্দেশনা। তিনি নিজে আমল করেছেন এবং নিজের উম্মতদেরকে আমল করতে বলেছেন।
বিশ্বব্যাপী একই তারিখে রোজা ও ঈদ পালনের আহ্বান
ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সর্বোচ্চ ফিক্হ একাডেমির নেওয়া সিদ্ধান্তে বিশ্বব্যাপী অভিন্ন হিজরি তারিখ বাংলাদেশেও বাস্তবায়নের জানিয়েছে মুসলিম উম্মাহ ট্রাস্ট।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়েছে।
মুসলিম উম্মাহ ট্রাস্ট জানায়, বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতি হওয়ায় আকাশে চাঁদ দেখা গেলে সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে খবর পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে একই সময়ে রোজা ও ঈদ পালনে ইসলামী শরিয়তে কোনো বাধা নেই। তাই ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সর্বোচ্চ ফিক্হ একাডেমির নেওয়া সিদ্ধান্তে বিশ্বব্যাপী অভিন্ন হিজরি তারিখ বাংলাদেশেও বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি দাবি জানায়।