জাবিতে মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় চার শিক্ষার্থীকে মারধর
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহ-সভাপতি বিরুদ্ধে।
মারধরকারী ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম রাজিবুল হাসান ওরফে রাজিব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী (৩৮তম ব্যাচ)। মারধরের সময় রাজিবের সঙ্গে আরও দু’জন ছিলেন বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল এলাকার পরিবহন ডিপোতে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার চার শিক্ষার্থী হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের আজিমুশশান নওরোজ প্রণয় (৪৩তম ব্যাচ), ফার্মেসি বিভাগের মাহমুদুল হাসান (৪৩তম ব্যাচ), উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের বিপ্লব হোসেন (৪৩তম ব্যাচ) ও মার্কেটিং বিভাগের আবুল কালাম আজাদ (৪৪তম ব্যাচ)। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কার্যালয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল এলাকা থেকে দুটি মোটরসাইকেলে তেল ভরে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন ওই চার শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ডিপোর কাছাকাছি গেলে পরিত্যক্ত একটি বাসের ভেতর থেকে হট্টগোলের শব্দ শুনতে পান তারা। হট্টগোলের কারণ জানতে শিক্ষার্থীরা বাসটির দিকে এগিয়ে গেলে তিনজনকে ইয়াবা সেবনরত অবস্থায় দেখতে পান। শিক্ষার্থীরা রাজিবুলসহ ওই তিন জনকে বাসের ভেতর থেকে বের হয়ে আসতে বলেন এবং বাসের মধ্যে ইয়াবা সেবনের কারণ জানতে চান। এসময় ওই তিনজন শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন ও তাদের মারধর করেন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী সেখানে গিয়ে মারধরের শিকার শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান থেকে আহত চার শিক্ষার্থীকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা রাজিবুলকে আটক করে নিরাপত্তা কার্যালয়ে নেন। তবে তার সঙ্গে থাকা বাকি দুজন পালিয়ে যান।
মারধরের শিকার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘তারা বাসে ইয়াবা সেবন করছিল বুঝতে পেরে আমরা তাদের নেমে আসতে বলি। তারা বাস থেকে নেমে কোনও কথার উত্তর না দিয়েই আমাদের মারধর করতে শুরু করেন।’
মারধরের বিষয়ে জানতে রাজিবুল হাসানের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘মাদক গ্রহণের বেশ কিছু চিহ্ন রাজিবুলের শরীরে পাওয়া গেছে। তাকে মুচলেকা নিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। সেই সঙ্গে তাকে রিহ্যাবে পাঠানোর জন্যও তার পরিবারকে পরামর্শ দিয়েছি। আমরা সব তথ্য নিয়ে রেখেছি। বাকি দুজনকে খুঁজে বের করতে আমরা কাজ করছি।’
এসএস
মন্তব্য করুন