• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

কর্মস্থলে হিজাব নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিতে বিল পাস

কামরুজ্জামান হেলাল, যুক্তরাষ্ট্র

  ০৪ মার্চ ২০১৯, ১২:৪০

বহুল প্রত্যাশিত ‘ধর্মীয় পোশাক’ বিল পাস হলো নিউ ইয়র্ক স্টেট পার্লামেন্টের একটি কক্ষে। স্টেট অ্যাসেম্বলিতে ১০৬-১ ভোটে (এ ৪২০৪) পাস হওয়া এ বিল উত্থাপন করেন নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যামাইকার অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন। স্টেট সিনেটেও বিলটি পাস হলে তা আইনে পরিণত হবে। স্টেট সিনেটে এই বিলকে পাস করানো দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশিদের আরেক ভরসাস্থল সিনেটর জন ল্যু।

জন ল্যু এ প্রসঙ্গে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান সকল ধর্ম, বর্ণ, গোত্র আর জাতিগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করেছে। সেটি নিউ ইয়র্ক স্টেটেও সমুন্নত রাখতে হবে।

৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলার পর কর্মস্থলে হিজাব এবং টারবান পরে যারা যেতেন, তাদেরকে নানা পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। বিমাতাসুলভ আচরণের অভিযোগ রয়েছে অসংখ্য। অনেকে চলতি পথে আক্রান্তও হয়েছেন। নিহত হয়েছেন বাংলাদেশি নাজমা খানম। এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসীরা দাবি উঠিয়েছিলেন কর্মস্থলের ধর্মীয় পোশাক বিরোধী নিষিদ্ধের একটি বিধির জন্যে। শুধু তাই নয়, নিউ ইয়র্কে প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি হিজাব দিবসও পালিত হচ্ছে গত কয়েক বছর যাবৎ। সেই হিজাব দিবসকে জাতিসংঘও স্বীকৃতি দিয়েছে।

২৮ ফেব্রুয়ারি বিলটি পাশের পর আলবেনী পার্লামেন্ট ভবনের সংবাদ সম্মেলন থেকে অ্যাসেম্বলিম্যান ওয়েপ্রিন সকল সহকর্মীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

ডেভিড ওয়েপ্রিন বলেন, ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক অপরাধের মাত্রা বেড়ে চলায় নিউ ইয়র্কের সকল প্রশাসনের জন্য দায়িত্ব হয়ে পড়েছে কর্মস্থল এবং চলতি পথে কেউ যাতে হয়রানি, হেনস্তা এবং বিমাতাসূলভ আচরণের শিকার না হয়। এ বিল পাসের মধ্য দিয়ে এটি এখন নিশ্চিত হবে যে, এই স্টেটের কেউই ধর্মীয় পোশাকের কারণে কোনও ধরনের হয়রানির শিকার হবে না।

উল্লেখ্য, এই বিলটি সর্বপ্রথম উত্থাপন করা হয় ২০১১ সালে। ডেভিড ওয়েপ্রিনের উত্থাপিত বিলটি ২০১৩ সাল থেকে প্রতিটি অধিবেশনেই পাস হয়েছিল। কিন্তু স্টেট সিনেটে সেটি উত্থাপিত না হওয়ায় তা আইনে পরিণত করার উপযোগী হয়নি। তবে এবার সে নিশ্চয়তা দিলেন স্টেট সিনেটর জন ল্যু। এ বছরই তা সিনেটেও পাস হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে আশ্বাস দেন সিনেটর ল্যু।

কারণ এখন স্টেট সিনেটেও ডেমোক্রেটরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। জন ল্যু উল্লেখ করেন, তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে সারাবিশ্ব যেখানে একটি ভিলেজে পরিণত হয়েছে, সে অবস্থায় ধর্মীয় কারণে কারও সাথেই দ্বিমত পোষণের সুযোগ থাকতে পারে না। এমন একটি বিধির প্রয়োজন অনেক আগে থেকেই অনুভূত হচ্ছে এই স্টেটে।

অ্যাসেম্বলিতে এই বিলের কো-স্পন্সর ছিলেন ব্রুকলিনের অ্যাসেম্বলিম্যান সিমচা আইচেনস্টাইন। আর এই বিলের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া একমাত্র রিপাবলিকান সিনেটর হলেন ক্রিস্টফার ফ্রেন্ডস।

এ প্রসঙ্গে নিউ আমেরিকান ভোটার এসোসিয়েশনের (নাভা) নির্বাহী সচিব রোকেয়া আকতার বলেন, নাম ফ্রেন্ডস হলেও, কার্যত তিনি ধর্মবিশ্বাসীদের বন্ধু হতে পারেননি। আশা করছি, নিকট ভবিষ্যতে তার বোধোদয় ঘটবে।

ওই সংবাদ সম্মেলনে নাভার প্রেসিডেন্ট ড. দীলিপ নাথসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে বিল পাসের পর গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন হিজাব দিবসের অন্যতম প্রবর্তক কমিউনিটি নেতা মাজেদা এ উদ্দিন। তিনি বলেছেন, দীর্ঘ প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটতে যাচ্ছে। এজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যের প্রক্রিয়ায় স্টেট পার্লামেন্টে এই স্টেটের সকল পাবলিক স্কুলে হালাল খাদ্য পরিবেশনের দাবিও আদায় করা সম্ভব হবে।

এ/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
কর্মস্থলে ফেরার পথে আশুলিয়ায় ট্রাকচাপায় স্বামী-স্ত্রী নিহত
দৌলতদিয়ায় কর্মস্থলগামী মানুষের চাপ, নেই ভোগান্তি
কোকা-কোলায় চাকরির সুযোগ, কর্মস্থল ঢাকা 
হিজাব-নিকাব পরায় হেনস্থা, অভিযুক্ত রাবি শিক্ষককে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা 
X
Fresh