• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

আলেকজান্ডার ক্যাসলে তিনদিন ছিলেন রবীন্দ্রনাথ: নির্মলেন্দু গুণ

সজল অনিরুদ্ধ

  ০৮ মে ২০১৮, ১৫:৪০

ভূ-প্রকৃতির বৈচিত্র্যের কারণে ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষের সামাজিক জীবন, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, জীবিকা ও সংস্কৃতি বৈচিত্র্যপূর্ণ। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের সূতিকাগার হিসেবে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলাকে গড়ে তুলতে স্থানীয় রাজা ও জমিদারদের অনেক বড় অবদান রয়েছে। ময়মনসিংহ শহরের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। এ নদের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েই শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বহু ছবি এঁকেছিলেন। এখানে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জমিদারবাড়িগুলো। প্রজাদের শিক্ষানুরাগী করতে রাজা জমিদাররা বিভিন্ন সময় নিমন্ত্রণ করতেন কবি, সাহিত্যিক ও বরেণ্য ব্যক্তিদের।

মহারাজা শশীকান্তের আমন্ত্রণেই ১৯২৬ সালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তিনদিনের সফরে ময়মনসিংহে তার অতিথিশালা আলেকজান্ডার ক্যাসলে ছিলেন।

বর্তমান সময়ের অন্যতম প্রধান কবি নির্মলেন্দু গুণ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ১৯২৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিমন্ত্রণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে আসেন।

সে সময়ে তিনি শশীকান্ত মহারাজার নিমন্ত্রণে ময়মনসিংহে যান এবং তিনদিন মহারাজার অতিথিশালা আলেকজান্ডার ক্যাসলে ছিলেন।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : রবীন্দ্র পুরস্কার পেলেন দুই গুণী
--------------------------------------------------------

তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ তখন বিশ্বভারতী ও শান্তিনিকেতনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন। তাই জমিদারদের কাছে তার যাতায়াত ছিল। ১৯২৬ সালের জানুয়ারি মাসে ১৫ বা ১৬ তারিখে তিনি আলেকজান্ডার ক্যাসলে ছিলেন।

নির্মলেন্দু গুণ বলেন, ঢাকায় এসে রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি-লিট ডিগ্রি গ্রহণ করেন। কার্জন হলে তিনি লেকচার দিয়েছিলেন। তারপর তিনি সলিমুল্লাহ ও জগন্নাথ হলসহ বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করেছেন।

রমেশ মজুমদার তখন জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট ছিলেন। সেই রমেশ মজুমদারের এখানেই তিনি ছিলেন। সেখানে তিনি ওদের পত্রিকার জন্য ‘আমি যে গান গেয়েছিলাম এই কথাটি মনে রেখ’ এই গানটি লিখেছিলেন।

তারপর এখান থেকে শশীকান্তের অতিথি হয়ে দুই-তিনদিন পর ময়মনসিংহ যান। ময়মনসিংহে অবস্থানকালে তিনি আনন্দমোহন কলেজ পরিদর্শন করেন, সিটি স্কুল ও বিদ্যাময়ী স্কুলে ভাষণ দেন। বিদ্যাময়ী স্কুলের সিঁড়িতে দাঁড়ানো রবীন্দ্রনাথের একটি ছবিও আছে। আমি দেখেছি সেটা এখন শিলাইদহে সংরক্ষিত আছে।

ঊনবিংশ শতকের স্থাপনা এ আলেকজান্ডার ক্যাসল। ১৮৭৯ সালে মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য এ প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন। এতে সে সময় ৪৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছিল। ভবন চত্বরে ছিল দীঘি ও বাগান। ভবন নির্মাণে লোহা ব্যবহার বেশি হয়েছিল বলে এটি মানুষের কাছে ‘লোহার কুঠি’ নামেও পরিচিত লাভ করে। এখনও স্থানীয়ভাবে এ নামেই পরিচিত প্রাসাদটি। বর্তমানে এটি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের গ্রন্থাগার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

আলেকজান্ডার ক্যাসলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছাড়াও লর্ড কার্জন, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ, কামাল পাশার মতো ব্যক্তিত্বরা অবস্থান করেছেন।

আরও পড়ুন :

জেবি/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh