চীনে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে নামানো হলো শেখ মুজিবের ছবি
চীনে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও ছবি সম্বলিত নোটিশ নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশটিতে বসবাসরত বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতিবাদের মুখে দূতাবাস কর্মীরা শেখ মুজিবের ছবি নামিয়ে ফেলেন।
স্থানীয় সময় বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে বেইজিংয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে উপস্থিত হয়ে ছবি নামাতে বলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
বিএনপি নেতারা বলেন, একজন স্বৈরশাসকের বিদায় হলেও বিভিন্ন জায়গায় এখনো তাদের প্রেতাত্মারা বিরাজমান। আজকে বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রতিবাদ করায় তারা নিজ দায়িত্বে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও ছবি সম্বলিত নোটিশ সরিয়ে নেয়।
এ সময় বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদের নির্দেশনায় উপস্থিত ছিলেন, হোসাইন মোহাম্মদ সাখাওয়াত, শেখ মাহবুবুর রশীদ, মো. রুহুল আমিন, আসিফ হক রুপু, মো. ওয়ালী উল্লাহসহ অনেকে।
আরটিভি/এএইচ/এসএ
মন্তব্য করুন
অধঃপতনের ৫ কারণ, কোরআন-হাদিসে যা আছে
অপরাধ যখন ব্যক্তিপর্যায়ে থাকে তখন অধঃপতন ব্যক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। ব্যাপক হারে যখন কোনো দেশ বা জাতি অপরাধে লিপ্ত হয়, তখন সে অপরাধের দায় সবাইকেই বহন করতে হয়।
ইবনে মাজাহ-এর এক হাদিসে আছে, কোনো দেশে পাঁচ ধরনের অপরাধ চলমান থাকলে, তারা কখনই উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারবে না। তাদের অধঃপতন সুনিশ্চিত।
অশ্লীলতা :
আল্লাহ বলেন, হে মানুষ, ভূমণ্ডলে বিদ্যমান বস্তুগুলো থেকে হালাল উত্তম জিনিসগুলো খাও এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলো না, বস্তুত সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। সে তোমাদেরকে শুধু অসৎ এবং অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেয়, আর তোমাদেরকে নির্দেশ দেয় আল্লাহর সম্বন্ধে এমন কথা বলার যা তোমরা জান না। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৬৮-১৬৯)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখনই কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, (যেমন সুদ, ঘুষ, ব্যভিচার ইত্যাদি) তখন তাদের মধ্যে মহামারি আকারে প্লেগ ও এমন সব ব্যাধির জন্ম হয়, যা আগেকার লোকেদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।
ওজনে কম দেওয়া :
ইসলামে বেচাকেনায় ওজন করার সময় সঠিকভাবে দাঁড়িপাল্লা ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ওজনে কারচুপি করার অপরাধে পূর্বে এক জাতি ধ্বংসও হয়েছে। (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৩৫)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন কোনো জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে, তখন তাদের ওপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ ও কঠিন বিপদ-মসিবত। আর তাদের ওপর শুরু হয় জালেম শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন।
যাকাত না দেওয়া :
যাকাত হলো ধনীর সম্পদে গরিবের অধিকার। যাকাত না দিয়ে সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখা গরিব-দুঃখীর সম্পদ আত্মসাৎ করারই নামান্তর। (সুরা জারিয়াত, আয়াত: ১৯)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো জাতি যখন সম্পদের যাকাত আদায় করা থেকে বিরত থাকে, তখন আসমান তাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়। যদি ভূ-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু-জানোয়ার (গরু, ছাগল, ভেড়া, কুকুর, ঘোড়া ইত্যাদি) না থাকত তা হলে আর কখনো জমিনে বৃষ্টিপাত হতো না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪০১৯)
অঙ্গীকার ভঙ্গ করা :
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এখানে অঙ্গীকার বলতে, আল্লাহতায়ালা বান্দার কাছ থেকে ঈমান ও ইবাদত সম্পর্কিত যেসব অঙ্গীকার নিয়েছেন অথবা তার নাজিলকৃত বিধি-বিধান হালাল ও হারাম সম্পর্কিত যেসব অঙ্গীকার নিয়েছেন, আয়াতে সেগুলোই উদ্দেশ্য। (তাফসিরে মাআরেফুল কুরআন)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে জাতি আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, আল্লাহ তাদের ওপর বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করে দেন। সে তাদের ধন-সম্পদসহ সবকিছু কেড়ে নেয়।
শরিয়াবহির্ভূত বিচারব্যবস্থা :
আল্লাহ বলেন, হুকুম বা কর্তৃত্বের মালিকানা আল্লাহ ছাড়া কারও কাছে নেই। তিনিই সত্যকথা বর্ণনা করেন, আর তিনিই সর্বোত্তম ফায়সালাকারী। (সুরা আনয়াম, আয়াত: ৫৭)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, শাসকবর্গ যখন আল্লাহর কিতাব মোতাবেক ফায়সালা করে না এবং বিচার বিভাগে আল্লাহর নাজিলকৃত বিধানকে অগ্রাহ্য করে, তখন তিনি তাদের পরস্পরের মধ্যে (যুদ্ধ) দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাঁধিয়ে দেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪০১৯)
আরটিভি/একে
তাপমাত্রা ও বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়ার নতুন বার্তা
আগামী তিন দিন সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা হ্রাস-বৃদ্ধি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের তিন বিভাগে বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আবহাওয়া অফিসের দেওয়া আগামী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাস থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সংস্থাটি জানায়, মৌসুমের স্বাভাাবিক লঘুচাপটি দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
এ অবস্থায় শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
রোববার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, তাপমাত্রা সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
আরটিভি/এসএপি
ফের ২৫ পয়সা কলরেটে ফিরছে সিটিসেল
চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আবারও সাশ্রয়ী মূল্যে কথা বলার সুযোগ দিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে ফিরছে বাংলাদেশের প্রথম সিডিএমএ প্রযুক্তির মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল।
সম্প্রতি রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত সিটিসেলের হেড অফিস থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে বিটিআরসি থেকে মোবাইল ফোন প্রবর্তনের জন্য বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (বিটিসিএল) তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বরাদ্দ লাভ করে। লাইসেন্স নেওয়ার পরের বছর হংকং হাচিসন টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড ওই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে এর নাম বদলে হয় হাচসন বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড। ১৯৯৩ সালে এটির মালিকানায় আবার পরিবর্তন আসে। বিএনপির সাবেক সিনিয়র নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের মালিকানাধীন প্যাসিফিক মটরস ও ফারইস্ট টেলিকম মিলে এইচবিটিএল-এর শেয়ার কিনে নেয়। কোম্পানির নাম বদলে হয় প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড ও সিটিসেল নামে ব্র্যান্ডিং শুরু হয়। ২০০৪ সালে এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে সিঙ্গাপুরের সিংটেল। ২০০৭ সালের শেষের দিকে সিটিসেল নতুন লোগো উন্মোচন করে। গ্রাহক সংখ্যার দিক থেকে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম মোবাইল অপারেটর কোম্পানি ছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে তৎকালীন আওয়ামী সরকারের রোষানলে সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। ওই বছরের ২০ অক্টোবর বিটিআরসি কোম্পানিটির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। এ সময় এর গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ লাখের কিছু বেশি। ৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিটিসেলের তরঙ্গ আবার খুলে দেওয়া হয়। যা ৬ নভেম্বর আবার বন্ধ করা হয়। ২০২৩ সালে সিটিসেলের লাইসেন্স চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হয়।
সিটিসেল বন্ধের সময় বিটিআরসির এক বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, সিটিসেলের কাছে সরকারের পাওনা ছিল ৪৭৭ কোটি টাকা। পরে ২৪৪ কোটি টাকা পরিশোধ করে সিটিসেল। সে হিসাবে সিটিসেলের বকেয়া ২৩৩ কোটি টাকা। কিন্তু কোর্টের গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে দেখা যায়, সিটিসেলকে ১০ মেগা হার্জ তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে ৮ দশমিক ৮২ মেগা হার্জ। সে হিসাবে সিটিসেলের কাছে সরকারের সবশেষ মোট বকেয়ার পরিমাণ ১২৮ কোটি টাকা।
গত ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) চিঠি পাঠিয়ে অপারেটিং ও রেডিও ইকুইপমেন্ট লাইসেন্স দুটি ফেরত চেয়েছে। চিঠিতে কোম্পানিটি দাবি করেছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে প্রথমে তাদের তরঙ্গ স্থগিত করা হয়। এ জন্য সাবেক টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমকে দায়ী করেছেন তারা।
বিটিআরসিকে পাঠানো চিঠিতে প্যাসিফিক টেলিকম জানায়, তরঙ্গ বন্ধ করায় গত ৮ বছরে ব্যাংক ঋণ, কর্মচারীদের বকেয়া, অবকাঠামোর ক্ষতি–সবমিলিয়ে তাদের প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। ৮ বছর কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় সম্ভব হয়নি। এতে সরকার প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা কর ও ফি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তারা এখন লাইসেন্স বাতিলের জন্য জারি করা পত্রের প্রত্যাহার চায়। পাশাপাশি প্রযুক্তি নিরপেক্ষ লাইসেন্স চায়, যাতে ফাইভজিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তারা এজন্য অর্থ পরিশোধ করবে, তবে তা রাজস্ব আদায়ের পর।
সিটিসেলের চিফ স্ট্রেটিজিক অ্যাডভাইজার মেহবুব চৌধুরী জানান, তারা কোন কিছু আইনের বাইরে যেয়ে করেননি। সিটিসেলের ফ্রিকুয়েন্সি পাওয়ার কথা ছিল ১০ মেগা হার্জ, তাদের লাইসেন্সেও তাই ছিল। তবে অনুমোদনের কাগজে তারা ফ্রিকোয়েন্সি পান রিজোনাল ৬ মেগা হার্জ, আর ঢাকায় ৮ দশমিক ৮২ মেগা হার্জ।
তিনি জানান, লাইসেন্স পাওয়ার পর তারা বিটিসিএল অফিসে গেলে তারা বলে আপনার এই মেগা হার্জই পাবেন। অথচ সিটিসেল ১০ মেগা হার্জের টাকাই পরিশোধ করে সরকারকে। তারা দ্বিতীয়বারের মতো সিটিসেলকে কোনো সুযোগই দেয়নি। কম ফ্রিকোয়েন্সি দিয়ে ১০০ কোটির বেশি টাকা পাওনা করা হয়েছিল তাদের কাছে। সেই টাকা পরিশোধ না করায় এই টেলিকম কোম্পানিটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সিটিসেলের হেড অব দ্যা টেজরি মাকসুদা হাবিব বলেন, ২০১৬ সাল থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তারা। সেই সঙ্গে ব্যাংকের লস তো আছেই। তাদের ব্যান্ড ভ্যালু ক্ষুণ্ন হয়েছে, সেই সঙ্গে কোম্পানিটির সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সরকার প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা কর ও ফি বঞ্চিত হয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী বলেন, সিটিসেল আবেদন করেছে। আমারা তাদের সঙ্গে বসব। তাদের আবেদন পর্যালোচনা করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরটিভি/এসএপি/এআর
কোরআনসহ তিন ধর্মগ্রন্থে রহস্যময়ী এক সুন্দরী রানি
প্রাচীন ইতিহাসে অসংখ্যা নারী চরিত্রের মধ্যে রয়েছেন রহস্যময়ী সুন্দরী এই রানি। তার নাম ছড়িয়ে আছে ধর্মগ্রন্থ থেকে লোকগাঁথায়, তার রাজত্ব যেন ক্ষমতা আর প্রজ্ঞার প্রতিমূর্তি। কোরআন, বাইবেল ও ইহুদিদের তানাখসহ—প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থেই এই রানির কাহিনী ঘুরে ফিরে এসেছে। তার ক্ষমতা বুদ্ধিমত্তা সবকিছুই যেন এক রহস্যের জাল। তিনি শুধু একজন শাসক ছিলেন না, ছিলেন বুদ্ধিমতী আর শক্তির প্রতীক।
এ গল্পটি রানি বিলকিসের, যাকে কেউ বলেন ইয়েমেনের শাসক, আবার কেউ মনে করেন তিনি ইথিওপিয়ার রানী। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ইতিহাসবিদদের মধ্যে তার রাজ্যের অবস্থান নিয়ে বিতর্ক চলেছে, তবে তার প্রজ্ঞা আর কৌশল সবসময়ই প্রশংসিত।
পবিত্র কোরআনের ২৭ নম্বর সূরা আন-নামল-এ নবী সুলায়মান (আ.) এবং ও বিলকিসের ঘটনা আল্লাহ তায়ালা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। সুলায়মান (আ.) তার দরবারের হুদহুদ নামক এক পাখির মাধ্যমে বিলকিসের রাজ্যের খবর পান। জানা যায়, তার রাজ্য ছিল ধন-সম্পদে সমৃদ্ধ, কিন্তু তারা সূর্য পূজা করত। সুলায়মান (আ.) এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের বার্তা পাঠান রানীর কাছে। রানী বিলকিস সেই বার্তা পেয়ে সুলায়মানের প্রজ্ঞা ও ক্ষমতা যাচাই করতে আসেন তার দরবারে।
বলা হয়ে থাকে তিনি শুধু সুলায়মান (আ.) কে পরীক্ষা করতেই যাননি, বরং তার সঙ্গে সোনা, মশলা, মূল্যবান পাথরসহ অমূল্য উপহারও নিয়ে গিয়েছিলেন। এই উপহারগুলো কেবল প্রতীকী নয়, বরং ছিল তার গভীর শ্রদ্ধার প্রতিফলন। রানি তার কঠিন প্রশ্নগুলো দিয়ে সুলায়মানের জ্ঞান পরীক্ষা করেছিলেন, এবং সুলায়মান (আ.) সব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেন। এতে রানী মুগ্ধ হয়ে সুলায়মানের প্রজ্ঞাকে স্বীকার করেন এবং ইসলামের প্রতি তার বিশ্বাস স্থাপন করেন।
ইহুদি ধর্মগ্রন্থ তারগুম শেনিতে বলা আছে রাজা সুলাইমান পশুপাখির ভাষা বুঝতে পারতেন। একদিন বনমোরগ জাতের একটি পাখি এসে জানায়, পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি আসলে রাজা সুলাইমান নন, বরং বিলকিসর রানী। সুলাইমান (আ.) এই কথা শুনে বিলকিসর রানীকে আমন্ত্রণ জানান, এবং সেই মুহূর্তে রাজা সুলাইমান তার ক্ষমতার পরিচয় দিতে শুরু করেন। এই গল্পটি বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন সংস্করণে বর্ণিত হয়েছে, যার মধ্যে রাজা সুলাইমান (আ.) জ্ঞান এবং রানীর বিচক্ষণতা নিয়ে আলোচনা বেশি পাওয়া যায়।
ইহুদি, খ্রিস্টান, এবং ইসলাম ধর্মে রানী বিলকিসের কাহিনী প্রায় একইরকম, তবে ইথিওপিয়ার ‘কাবরা নাগাস্ট’ গ্রন্থে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের কথাও বলা হয়েছে। ঐতিহ্য অনুযায়ী, তাদের সন্তান মেনেলিক ইথিওপিয়ার প্রথম রাজা হয়েছিলেন, এবং রানী বিলকিস ইথিওপিয়ার গর্বিত পূর্বপুরুষ হিসেবে বিবেচিত হন। আজও ইথিওপিয়ার মানুষ তাকে জাতীয় ইতিহাসের অংশ হিসেবে গর্বের সাথে স্মরণ করে।
রানি বিলকিসের এই গল্প শুধু প্রাচীন ধর্মগ্রন্থে স্থান পায়নি, বরং শতাব্দী পেরিয়েও বেঁচে আছে মানুষের মনের কোণে। তার প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা এবং ক্ষমতার এই গল্প হয়তো ভবিষ্যতে আরও শতাব্দী ধরে মানুষকে মুগ্ধ করে যাবে।
আরটিভি/এফআই
আগের নিয়মে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা
আগের নিয়মে ফিরে আসছে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা। একসময় এ দুটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে দেশজুড়ে বৃত্তি পরীক্ষা হতো। এতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পেতেন। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা চালু করার পর আলাদা বৃত্তি পরীক্ষা তুলে দেওয়া হয়।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১’ বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ২০১২ সালে প্রণীত সৃজনশীল পদ্ধতি বহাল করা হয়েছে। এতে গতানুগতিক ধারায় আগের মতো বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। ফলে আগের নিয়মে বৃত্তি পরীক্ষা হবে কি না, তা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, আগামী শিক্ষাবর্ষে পুরোনো পদ্ধতিতে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রাথমিকের সমাপনীর (পঞ্চম শ্রেণি) আগে পৃথক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দফায় দফায় পরীক্ষা নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক চাপ বাড়বে বলেই বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছিল। এখন তা আবার চালু করলে কোচিং ও গাইড ব্যবসা রমরমা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেন, এটা নতুন কিছু না। আগের নিয়মে আবার ফেরা হচ্ছে। পঞ্চম শ্রেণির সব শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা হবে না। যারা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহী, কেবল তাদের পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হবে। এমনটিই ছিল একসময়। শিশুরা ছোটবেলা থেকে প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বড় হতে শিখবে।
আরটিভি/একে
রাসূল (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতে নতুন নির্দেশনা
মহানবি মুহাম্মদ (সা.)-এর সমাধি পবিত্র রওজা শরিফ জিয়ারতে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সৌদি আরব। ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে এখন থেকে মহানবি মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতের জন্য আগাম অনুমতি নিতে হবে। সেই সঙ্গে বছরে একবারের বেশি রওজা শরিফ পরিদর্শন করা যাবে না।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় এক্স পোস্টে এ তথ্য জানায়।
সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ঘোষণায় বলা হয়, রওজা শরিফে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও অনিয়ম কমানোর লক্ষ্যে এই নিয়ম চালু করা হয়েছে। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া রওজা শরিফে প্রবেশ করা যাবে না। আগের মতো অনুমতি ছাড়া প্রবেশের বিষয়টি আর বৈধ থাকবে না।
এ ছাড়া জিয়ারতের সময় এক ঘণ্টায় সীমিত রাখা হবে। এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো অপেক্ষার সময় কমানো এবং ভিড় এড়িয়ে জিয়ারতকারীদের জন্য একটি সহজ ও সুশৃঙ্খল অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা।
নতুন নির্দেশনার আওতায় রওজা শরিফ জিয়ারতের জন্য বছরে একবারের বেশি সুযোগ পাবেন না মুসল্লিরা। এই নিয়মটির মাধ্যমে বৃহত্তর সংখ্যক মুসলিমকে রওজা শরিফ জিয়ারতের সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
সৌদি সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রায় ১ কোটি মুসলিম রওজা শরিফ জিয়ারত করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেশি। হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের মতে, বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ ও ভ্রমণ সহজলভ্য হওয়ায় রওজা শরিফ জিয়ারতকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের জন্য রওজা শরিফ জিয়ারত একটি পবিত্র আকাঙ্ক্ষা। তবে অতিরিক্ত ভিড় এবং প্রশাসনিক জটিলতা মোকাবিলা করতে গিয়ে সৌদি সরকার বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। নতুন এই নির্দেশনা সেই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বলছে, আমরা চাই প্রত্যেক মুসলিম যেন সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ পরিবেশে রওজা শরিফ জিয়ারত করতে পারেন। এই নিয়ম শুধু ভিড় কমানো নয়, বরং জিয়ারতের অভিজ্ঞতাকে আরও স্মরণীয় করার জন্য।
সৌদি সরকারের এই নতুন নির্দেশনা মুসলিম বিশ্বের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। অনেকে এ নিয়মকে সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে কেন বছরে একবারের বেশি জিয়ারতের সুযোগ সীমিত করা হলো।
বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য রওজা শরিফ জিয়ারত এক অনন্য অনুভূতির জায়গা। এই নতুন নিয়ম নিয়ে যেকোনো সমন্বয় ও পরিবর্তন যেন তাদের জন্য সহজ এবং গ্রহণযোগ্য হয়, সেদিকে সৌদি সরকারের নজর থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সৌদি সরকারের হিসাবে চলতি বছর এক কোটির বেশি মুসলিম রওজা জিয়ারত করেছেন, যা গত বছরের চেয়ে ২৬ শতাংশ বেশি।
আরটিভি/এফআই
যে কারণে দেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে সিঙ্গেল ব্যান্ডের রাউটার
ভার্চুয়াল জগত ছাড়া মানুষের জীবন এখন অচল। আর ঘরে বসেই অবাধে সেই ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে ওয়াইফাই রাউটার। প্রতিটি বাসা এবং অফিসে রাউটার এখন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। দেশের বাজারে বিভিন্ন ধরনের রাউটার পাওয়া যায়। এর মধ্যে সিঙ্গেল ব্যান্ড, ডুয়াল ব্যান্ড বা ট্রাই-ব্যান্ডের রাউটার রয়েছে।
সিঙ্গেল ব্যান্ড রাউটারগুলোতে ২ দশমিক ৪ গিগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করতে দেখা যায়। এতে ইন্টারনেটের গতি অনেকটাই কম। এ ক্ষেত্রে ডুয়াল-ব্যান্ড বা ট্রাই-ব্যান্ডের রাউটার সিঙ্গেল ব্যান্ডের চেয়ে বেশি কার্যকর। এ জন্য দেশে সিঙ্গেল ব্যান্ডের রাউটারের আমদানি ও উৎপাদন নিষিদ্ধ হচ্ছে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) নতুন সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। এটি ২০২৫ সালের ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।
জানা গেছে, আগামী বছর থেকে ডুয়াল-ব্যান্ড সাপোর্ট করে শুধু এমন রাউটারই বিদেশ থেকে আমদানি এবং দেশে উৎপাদন করা যাবে। দেশের বাজারে যেসব ওয়াইফাই রাউটার বাজারজাত করা হবে সেগুলোতে বাধ্যতামূলকভাবে ২ দশমিক ৪ থেকে ২ দশমিক ৪৮৩ গিগাহার্জ এবং ৫ দশমিক ৭২৫ থেকে ৫ দশমিক ৮৭৫ গিগাহার্জ, উভয় ব্যান্ড সাপোর্ট করতে হবে। এই দুটির মধ্যে একটিকে সাপোর্ট করে এমন ওয়াইফাই রাউটার বাজারজাত করা যাবে না। ফলে নিম্নমানের এবং কম ব্যান্ডের রাউটার বিদেশ থেকে আমদানি ও দেশে উৎপাদনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। যদিও আমদানিকারক ও উৎপাদকদের ওপর বিষয়টি হঠাৎ চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। তাদের ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের ১ এপ্রিল থেকে নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
বিটিআরসির তরঙ্গ বিভাগের পরিচালক ড. মো. সোহেল রানা বলেন, বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে এক ব্যান্ডের রাউটার আমদানিকারকদের কোনো কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হবে না। বিদেশ থেকে এগুলো আমদানির প্রক্রিয়া হচ্ছে বিটিআরসি থেকে প্রথমে অনুমতি নিতে হয়। তারপর এলসি খুলে দেশে আনা হয়। এরপর বাজারজাত করতেও আমাদের অনুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ এপ্রিলের পর থেকে এগুলো আর বাজারজাত করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি এরই মধ্যে সবাইকে জানানো হয়েছে। নতুন করে কেউ আর সিঙ্গেল ব্যান্ড রাউটার আমদানির ব্যাপারে মনোনিবেশ না করেন। এ ছাড়া বিষয়টি বাস্তবায়ন করা হলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।
আরটিভি/এসএপি/এআর