• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

একান্ত সাক্ষাতকারে কক্সবাজারের জিওসি মেজর জেনারেল মাকসুদ

বিশৃঙ্খলভাবে ত্রাণ না দিয়ে আমাদের মাধ্যমে বিতরণ করুন : জিওসি মাকসুদ

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:৫৯

কী পরিমাণ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে আপনার মনে হয়?

মেজর জেনারেল মাকসুদ : আমি নিজেও জানি না রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ঠিক কত। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তথ্য আসছে। কেউ বলছে সাড়ে চার লাখ, কেউ বলছে পাঁচ লাখ কিংবা তারও বেশি হতে পারে। আমরা এখন চেষ্টা করছি এদের নিবন্ধন করানোর জন্য। যাতে আমরা কিছুদিন পর সঠিক সংখ্যাটা বলতে পারি। সেনাবাহিনী ত্রাণ দেয়ার দায়িত্ব পেয়েছে শনিবার থেকে। ওইদিনই আমরা এখানে এসে ক্যাম্প স্থাপন করেছি। ১৪টি বিতরণ কেন্দ্রের মাধ্যমে এখানে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা এখানে শৃঙ্খলা নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই, সকল শরণার্থী যেন তাদের প্রাপ্য ত্রাণ পায়। যারা ত্রাণ নিয়ে আসছে তাদের জন্য আমাদের একটাই আবেদন যে আপনারা বিশৃঙ্খলভাবে ত্রাণ বিতরণ না করে আমাদের মাধ্যমে বিতরণ করেন। আপনারা যেখানে দিতে চান, সেখানেই আমরা দেব। আপনারা যদি আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে ত্রাণ দেন, তবে আমরা সকলের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারব। তা না হলে দেখা যাবে একজন বারবার ত্রাণ নিচ্ছে, কেউ পাচ্ছেই না। আপনারা যারা ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আসবেন, তারা এসে ‍আমাদের চেক পয়েন্টে যোগাযোগ করবেন। আমাদের সহায়তা নিয়ে আমাদের লোকের মাধ্যমে যদি আপনারা ত্রাণ দেন, তাহলে তা সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা সম্ভব হবে।

রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারি বেসরকারিভাবে কেমন সহায়তা পাচ্ছেন?

মেজর জেনারেল মাকসুদ : বর্তমানে আমরা ব্যক্তিগতভাবে কিছু উদ্যোগী মানুষের কাছ থেকে ত্রাণসামগ্রী পাচ্ছি। সরকারিভাবেও আমরা প্রচুর ত্রাণ পেয়েছি। আমাদের কাছে যথেষ্ট ত্রাণ মজুত আছে। দুইটাকে সমন্বয় করেই আমরা ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এটা যদি আরো দীর্ঘায়িত হয়, তবে সেই বিষয়ে সরকারের অবশ্যই পরিকল্পনা আছে। আমাদেরকে যে দায়িত্ব দেয়া হবে, আমরা তা পালন করব।

যদি মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়, তবে তাদের ফেরত পাঠাতে কতদিন সময় লাগতে পারে?

মেজর জেনারেল মাকসুদ : এটা আসলে নির্ভর করে উভয়পক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে। মিয়ানমার কী পদ্ধতিতে তাদের নেবে? আমরা চেষ্টা করব মিয়ানমার যখনই বলবে, তখন তাদেরকে দ্রুততম সময়ে দিকনির্দেশনার ভিত্তিতে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করার।

এই ক্যাম্পে ঢোকার মুখ থেকে ২০ কিলোমিটার আগ পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশে শরণার্থীরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া দেখা যাচ্ছে বিচ্ছিন্নভাবে জঙ্গলে কিংবা পাহাড়ের মধ্যে ছাপড়া কিংবা ছোট ছোট ঘর বানিয়ে বসে আছে। তাদেরকে আপনারা কীভাবে একত্রিত করছেন, আর কী ব্যবস্থা নেবেন?

মেজর জেনারেল মাকসুদ : প্রতিদিনই শরণার্থীরা আসছে। নতুনভাবে যারা আসছে, তারা আসার পরে রাস্তার আশেপাশে অবস্থান গ্রহণ করছেন। আমরা যখন তাদেরকে আইডেন্টিফাই করতে পারছি, তখন তাদেরকে আমরা যেখানে ক্যাম্প আছে বা যেখানে ক্যাম্প তৈরি করার জায়গা নির্ধারিত আছে সেখানে নিয়ে যাচ্ছি। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি প্রতিদিন চলবে। যতদিন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের আসা বন্ধ না হয়। এছাড়া আমরা দুই হাজার একর জায়গা পেয়েছি সরকারের কাছ থেকে, যদিও এখনো চূড়ান্ত অনুমোদন আসেনি। ওই জায়গার মধ্যে আমাদের ক্যাম্প তৈরি করার পরিকল্পনা আছে।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এখানে কোনো মেডিকেল টিম আছে কিনা?

মেজর জেনারেল মাকসুদ : শনিবার আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর আজই প্রথম আমাদের মেডিকেল টিম এসেছে। আমরা তিনটি ব্রিগ্রেডকে এখানে ডিপ্লয় করেছি। তিনটি ব্রিগ্রেডে তিনটি মেডিকেল টিম এখানে কাজ শুরু করেছে। আগামীকাল বা আগামীপরশু থেকে ব্যাটালিয়ান পর্যায়ে আরো আটটি টিম কাজ শুরু করবে। প্রতিটি টিমেই দুইজন করে ডাক্তার এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট থাকবে। আমরা ওষুধও সরবরাহ করব। আমাদের মেডিকেল টিম মেডিকেল সহায়তা প্রদান করবে।

কে/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh