• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

দেশ ভ্রমণ ও হজ সফরের পার্থক্য

হাফেজ মাওলানা নাসির উদ্দিন

  ১১ আগস্ট ২০১৭, ১২:০১

হাজি সাহেবরা আল্লাহর মেহমান। আল্লাহ তাআলা পবিত্র ভূমিতে যাবার জন্য যাদের কবুল করেছেন তারাই এই সফরের সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। ।

দেশ ভ্রমণ আর হজের সফর কি এক? হজের সফরকে কি মনে করা উচিত তা জেনে নিই।

আলেম-ওলামারা হজের সফরকে আখিরাতের সফরের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কারণ, মানুষ যখন হজের উদ্দেশে আপন ঘরবাড়ি থেকে বের হয়, তখন আত্মীয়-স্বজন, ঘরবাড়ি, বন্ধুবান্ধব সব ছেড়ে যেন পরকালের সফরে বের হয়। মৃত্যুর সময় যেমন- বাড়িঘর, দোকানপাট সবকিছু ত্যাগ করতে হয়, অনুরূপ হজের সময়ও এ জাতীয় সব ছেড়ে বের হতে হয়। হজের সফরের যানবাহন, একজন হাজিকে মৃত্যু খাটে সওয়ার হবার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

ইহরামের দুই টুকরা সাদা কাপড় হাজির মনে কাফনের কথা মনে করিয়ে দেয়। ইহরামের পর ‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক’ কিয়ামতের দিন আল্লাহর পক্ষ থেকে আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেয়ার সমতুল্য। বাইতুল্লাহর চারদিকে তাওয়াফ করা আরশে আজিমের চারদিকে তাওয়াফ করার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের ‘সাই’ করা হাশরের ময়দানে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করার নামান্তর। সেদিন মানুষ দিশাহারা হয়ে নবীদের কাছে দৌড়াদৌড়ি করবে। অনুরূপভাবে হাজিরও সাফা ও মারওয়ায় দৌড়াদৌড়ি করেন।

আরাফার ময়দানে লাখ লাখ মানুষের অবস্থান হাশরের ময়দানের নমুনার কথা বলে দেয়। সূর্যের প্রচণ্ড তাপে আশা ও ভয়ের এক করুণ দৃশ্যের অবতারণা হয় এ ময়দানে। এক কথায়, হজের প্রতিটি আমল থেকেই আখিরাতের সফরের চিত্র ভেসে ওঠে একজন হাজির সামনে।

দেখা যাচেছ হাজি সাহেবরা মক্কা মদিনায় গিয়ে কেনা-কাটা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আবার অনেককে সেলফি বা মোবাইলে চ্যাটও করতে দেখা যায়। এটা কি ঠিক?

যুগশ্রেষ্ঠ একজন বুজুর্গের হজ সফরের কথা শুনুন। হজরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) হজে গেলেই সৌদির প্রধান বিচারপতি গ্র্যান্ড মুফতি এবং বাদশাহ ফাহাদের চাচা আব্দুল্লাহ বিন বাজ তার সহবতে এসে বসে থাকতেন। তাকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেছিল, শেখ আপনি এই বুজুর্গের কাছে এসে বসে থাকেন কেন? তখন তিনি উত্তরে তাদেরকে বলেন, আমি এই শায়খের কাছে আসলে আমার অন্তরে কোরআনের নূর উপলব্ধি করতে পারি। এই জন্য আমি তার কাছে এসে বসে থাকি।

শুধু তাই না হাফেজ্জী (রহ.) কে শেখ বাজ রাষ্ট্রীয় মেহমান খানায় নিতেও আগ্রহ প্রকাশ করতেন। একদিন খুবই বেশি আগ্রহ করলে তিনি বিন বাজকে বলেন, আমি যার মেহমান হয়ে এসেছি, তার মেহমান হয়ে তার কাছেই থাকতে চাই। তারপর থেকে বিন বাজ তাকে নেয়ার জন্য আর আগ্রহ প্রকাশ করতেন না। এসে এসে তার কাছে বসে থাকতেন।

এই ঘটনা হাফেজ্জী(রহ.) এর ছোট ছেলে একাধিকবার বলেছেন।

দেখুন তারা হজের সফরকে কেমন মনে করতেন। আর আমরা কি করছি বা কিভাবে হজ সফরে নিয়েছি।

আল্লাহ আমাদের হজকে কবুল করুন হজের সফরে যেন কোনো গোনাহ না হয় সেই তাওফিক দান করুন।(আমিন)

কে/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh