• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ভ্রমণে কসর নামাজ, বিশ্বনবি যেভাবে পড়তেন

আরটিভি নিউজ

  ১৬ মে ২০২২, ১৮:০৬
ভ্রমনে কসর নামাজ, বিশ্বনবি যেভাবে পড়তেন
ছবি : সংগৃহীত

ব্যক্তিগত প্রয়োজন, অফিসের কাজ কিংবা আনন্দ-ভ্রমণসহ বিভিন্ন কারণে আমাদের দূর-দূরান্তে সফর করতে হয়। এটা মানুষের জীবনযাত্রার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মানুষ নিজের আবাস্থলে থাকলে পুরোপুরি নামাজ আদায় করতে হয়। কিন্তু ভ্রমণে গেলে নামাজ সংক্ষেপ করাই ইসলামের বিধান।

মূলত কোনো ব্যক্তি তার অবস্থানস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরে সফরের নিয়তে বের হয়ে তার এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির। আর মুসাফিরের নামাজকে শরিয়তের পরিভাষায় কসর বলা হয়। (জাওয়াহিরুল ফিক্কহ ১-৪৩৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৪-১০৫)

আরবি কসর শব্দের অর্থ হলো- কম করা, কমানো। মুসাফির ব্যক্তি চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত (কসর) পড়বেন। আর তিনি যদি সেখানে ১৫ দিনের কম সময় থাকার নিয়ত করেন, তবুও চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত পড়বেন। এই সংক্ষেপে আল্লাহপ্রদত্ত কল্যাণ রয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে— ‘তোমরা যখন জমিনে সফর করবে, তখন তোমাদের জন্য নামাজের কসর করায় কোনো আপত্তি নেই। (সুরা নিসা, আয়াত: ১০১)

শহরের ক্ষেত্রে ওই শহরের করপোরেশনের নির্ধারিত সীমানা থেকে সফরের সীমা নির্ধারিত হবে। অনুরূপ সফর থেকে ফিরে আসার ক্ষেত্রেও নিজ এলাকার সীমানায় প্রবেশের সঙ্গেই তার সফরের বিধান শেষ হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার ২-১২৮)

সফরে রোজা না রেখে পরবর্তী সময়ে কাজা করলেও চলবে। অনুরূপভাবে মোজায় মাসেহ করা ইত্যাদি বিধানে সাধারণ অবস্থা থেকে ভিন্নতা রয়েছে। মুসাফির সফর অবস্থায় কোনো মুকিম (স্থানীয়) ইমামের পেছনে নামাজের নিয়ত না করলে, তার জন্য চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত পড়া জরুরি। এটাকে কসরের নামাজ বলে। এটাই ইসলামের বিধান।

মুসাফির চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ একাকী পড়লে বা তার মতো মুসাফির ইমামের পেছনে আদায় করলে, নামাজ কসর করা জরুরি। এক্ষেত্রে পূর্ণ নামাজ পড়া ঠিক নয়। এ প্রসঙ্গে হাদিসে বলা হয়েছে- হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আল্লাহতাআলা তোমাদের নবির জবানে নামাজকে মুকিম অবস্থায় চার রাকাত ও সফর অবস্থায় দুই রাকাত ফরজ করেছেন।’ (মুসলিম, হাদিস নং: ৬৮৭)

মুসাফির ব্যক্তি স্থানীয় ইমামের পেছনে ইকতিদা করলে সে ইমামের অনুসরণে পূর্ণ নামাজই আদায় করবে। (আল মাবসুত, সারাখসি ১-২৪৩)। এ বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মুসাফির যদি মুকিমদের সঙ্গে নামাজে শরিক হয় তবে সে তাদের মতো (চার রাকাত) নামাজ পড়ে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৩৮৪৯)

স্থানীয় কোনো ব্যক্তি যদি মুসাফির ইমামের পেছনে ইকতিদা করে, তাহলে চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজগুলোতে ‘মুসাফির ইমাম’ নামাজ দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরানোর পর মুকিম (স্থানীয়) মুক্তাদি দাঁড়িয়ে সুরা পড়া ছাড়া বাকি দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিবে।

কোনো জায়গায় ১৫ দিন বা ততধিক অবস্থানের নিয়ত করলে সে সেখানে মুকিম হয়ে যাবে। সেখান থেকে সামানা-পত্রসহ প্রস্থানের আগ পর্যন্ত সেখানে পূর্ণ নামাজ পড়বে এবং মুকিমের বিধান জারি থাকবে। (বাদায়েউস সানায়ে ১-১০৪)

সফর অবস্থায় ছুটে যাওয়া নামাজ মুকিম অবস্থায় (আবাস্থলে এসে) কাজা করলে ‘কসর’ই আদায় করবে, আর মুকিম অবস্থায় ছুটে যাওয়া নামাজ সফরে কাজা করলে তা পূর্ণ আদায় করবে। (হেদায়া ১-৮১)

তবে মাগরিব, বিতর ও ফজরের নামাজ পূর্ণই আদায় করতে হবে। এগুলোর কসর নেই। তেমনিভাবে সুন্নত নামাজেরও কসর হয় না। তাই সুন্নত পড়লে পুরোটাই পড়বে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ
বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ
এশা না পড়ে তারাবির নামাজ পড়া যাবে কী
কাবা থেকে ৩ কিলোমিটারেরও বেশি দূর গেলো তারাবির কাতার
X
Fresh