• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

খোদার রঙে রঙিন হবার মাস রমজান

হাফেজ মাওলানা নাসিরউদ্দিন

  ১৩ জুন ২০১৭, ১৭:৩০

চলছে পবিত্র রমজান মাস। জানি না তাকওয়ার পোশাকে কতটা আবৃত করতে পেরেছি নিজেকে। হতে পেরেছি কতটা আল্লাহর রঙে রঙিন। মাটির দেহে আল্লাহর রং চুনকাম করতেই সিয়াম সাধনা। আল্লাহ বলেন, আমার রঙে রঙিন মানুষ আজ বিরল। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার উম্মত যদি জানতো রোজা কি জিনিস, তাহলে রোজা রাখা এত কষ্টকর হওয়া সত্ত্বেও সারা বছর রমজান মাসের কামনা করতো।(বায়হাকি শরিফ)

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, রমজান মাসে তোমরা চারটি কাজ বেশি করে করবে। এর দু’টি হচ্ছে আল্লাহর জন্য। একটি কালিমায়ে তাইয়্যেবা বেশি করে পড়া এবং অপরটি ইসতেগফার বেশি করে পড়া। আর বাকি দু’টি কাজ এমন যা না করে তোমাদের উপায় নেই। একটি হলো জান্নাতুল ফেরদৌস কামনা করা এবং অপরটি হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া।

এই আমলগুলো পালনে সচেষ্ট হলেই হওয়া যাবে আল্লাহর রঙের মানুষ। হওয়া যাবে সিয়ামের প্রকৃত সাধক। আল্লাহ তাআলা রমজান মাসকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। প্রথম ১০ দিনে আল্লাহ তাআলা রহমত নাজিল করেন। দ্বিতীয় ১০ দিনে আল্লাহ তাআলা গোনাহ থেকে মাগফেরাত দেন। তৃতীয় ১০ দিনে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।

নবীজী বলেন, রমজান মাসে আল্লাহ রোজাকে ফরজ ও তারাবীহ সুন্নত করেছেন। রমজান মাসে ফরজ আদায়ের পাশাপাশি নফল ইবাদতগুলো গুরুত্ব দিয়ে আদায় করতে বলা হয়েছে। নামাজের ক্ষেত্রে কাজা নামাজগুলো আদায় করা। এছাড়া তাহাজ্জুদ, এশরাক, চাশত, আওয়্যাবিনসহ নামাজগুলো আদায় করা। এবং রমজান মাসে বিশেষভাবে জবান, চোখ, কান এর হেফাজত করতে হবে। মিথ্যা কথা বলা, গিবত করা বা শোনা, অশ্লীল কথা বলা বা শোনা অথবা দেখা এবং অযথা গল্প গুজব না করে জিকিরের মাধ্যমে মনকে সতেজ রাখতে হবে।

ইফতার অবশ্যই হালাল খাদ্য দিয়ে করতে হবে। অন্যথায় সারাদিন অনাহারে থাকা ছাড়া কিছুই অর্জিত হবে না। হাদিসে এসেছে, ধ্বংস ওই ব্যক্তির জন্য যে রোজা পেল অথচ নিজের গোনাহ মাফ করাতে পারলো না। তাই আমাদের রমজান মাসটিকে শুধু পানাহার আর কেনাকাটার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে নিজের আত্মার পানাহার ও সাজসজ্জার প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।

নবীজী বলেছেন, যদি কেউ খালেস নিয়তে প্রত্যেক নিয়ম মেনে রোজা আদায় করে, তাহলে এ রোজায় তার অন্তর নূরানি হয় এবং এতে করে সে প্রত্যেক নেক আমল করতে আগ্রহী হয়। হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবীজী বলেছেন, রমজান মাসে আমার উম্মতকে বিশেষ করে পাঁচটি জিনিস দেয়া হয়েছে। যথা- ১) রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশক আম্বরের ঘ্রাণের চেয়েও প্রিয়। ২) রোজাদারের জন্য সব প্রাণি এমনকি সমুদ্রের মাছ পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে। ৩) রোজাদারের জন্য জান্নাতকে প্রতিদিন সসজ্জিত করা হয় এবং আল্লাহ বলেন, খুব তাড়াতাড়িই আমার নেক বান্দারা দুনিয়ার কষ্ট দূর করে জান্নাতে আসবে। ৪) এই মাসে দুষ্ট ও অবাধ্য শয়তানকে আটকে রাখা হয়। ফলে অন্যসব মাসের তুলনায় এ মাসে গোনাহ হবার আশঙ্কা কম থাকে। ৫) রমজানের শেষ রাত্রে প্রত্যেক রোজাদারের গোনাহ মাফ করে দেয়া হয়।

সাহাবারা এ হাদিস শুনে আরজ করলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ, এটা কি শবে কদরের রাত? নবীজী বললেন, না বরং, এটা মজদুরকে তার মজুরি দেয়ার সময়। আসুন আমরা সবাই রোজার পরিপূর্ণ হক আদায় করি। এবং এমনভাবে আমরা ইবাদতে লেগে থাকবো যাতে করে আল্লাহ আমাদেরকে মাফ করে দেন। আল্লাহ আমাদেরকে কবুল করুন।(আমিন)

কে/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh