রহমতের প্রথম দিন (ভিডিও)
পবিত্র রমজানের প্রথমদিন আজ। রমজানের প্রথম ভাগের দশদিন রহমতের। ইবাদত বন্দেগি আর বিশেষ আমলের মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে রহমত প্রাপ্তির অফুরন্ত সুযোগ এখনই।
মহান আল্লাহর বিশেষ রহমত প্রাপ্তি, জানা অজানা গোনাহ থেকে ক্ষমা লাভ এবং জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভের মাস মাহে রমজান। মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র রমজান সম্পর্কে শুভ সংবাদ দিয়েছেন। রোজাদার যে কোনো শ্রেণিরই অন্তর্ভুক্ত হোন না কেন, সে আল্লাহর রহমত বরকত ও মাগফিরাত থেকে কোনক্রমেই বঞ্চিত হবেন না। রোজা আমারই জন্য এবং আমি এর প্রতিফল প্রদান করবো। আল্লাহর এ ঘোষণায় স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, প্রকৃতপক্ষে পবিত্র রমজান মাস মনের আর্দ্রতালাভ, কোমলান্তকরণ, বিনয় ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের ভাবধারায় উজ্জীবিত হবার জন্য নির্দিষ্ট সময়। এ সময়ে রোজাদারের মধ্যে আধ্যাত্মিক ও দৈহিক ভাবধারা জাগ্রত হয়। এর মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভের দিকে ধাবিত হয়।
সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহ পাকের অনুগ্রহ লাভ করে মুক্তি ও নিষ্কৃতি প্রাপ্তদের মাঝে নিজেদের আসন প্রতিষ্ঠিত করা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের একান্ত কাম্য হওয়া খুবই বাঞ্ছনীয়।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘মাহে রমযানে সিয়াম সাধনার সুবর্ণ সুযোগ লাভ করা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি পেতে সক্ষম হলো না সে প্রকৃতপক্ষেই দুর্ভাগা।’ এ দুর্ভাগ্যের বোঝা মাথায় নিয়ে যারা নিজেদের জীবনকে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দিতে চায় তাদেরকে আজ এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া দরকার যে, সবারই মহান আল্লাহ পাকের কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। এ সীমাহীন যাত্রাপথের সম্বল সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জন করে নেয়াই শ্রেয়। জ্ঞান ও বিবেক সম্পন্ন মানুষ ন্যায় কল্যাণ এবং মঙ্গলময় জীবনযাপনেই আনন্দ পায়, শান্তি পায়। এ শান্তিই হোক সকলের কামনার ধন।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, রমজানের প্রথম ১০ দিন আল্লাহর রহমত নাযিলের, দ্বিতীয় ১০ দিন গোনাহ মাফ তথা মাগফিরাতের এবং তৃতীয় ১০ দিন আল্লাহর আজাব থেকে নাজাতের জন্য নির্ধারিত।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত মুসলিম শরীফের এক হাদিসে বলা হয়েছে, যারা রমজানের চাঁদের প্রথম তারিখ থেকে শেষ দিন পর্যন্ত রোজা রেখেছে তারা সে দিনের মতই নিষ্পাপ হয়ে যাবে, যেদিন তাদের মাতা তাদেরকে নিষ্পাপরূপে জন্ম দিয়েছিলেন। অর্থাৎ মাতৃগর্ভ থেকে মানুষ যেভাবে নিষ্পাপ অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হয়, রমজানের ত্রিশ দিন রোজা পালন করলে সে তেমন নিষ্কলুষ হয়ে যাবে।
পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ মাহে রমজানের বিশেষ বৈশিষ্ট্য বিবৃত করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, এটা এমন এক মাস যে প্রথম ১০ দিন রহমতের বারিধারায় পরিপূর্ণ। মাঝের ১০ দিন ক্ষমা ও মার্জনা লাভের জন্য নির্ধারিত এবং শেষ ১০ দিন জাহান্নাম হতে মুক্তি লাভের উপায়রূপে নির্দিষ্ট। রোজাদারদের মাঝে এমন এক শ্রেণির লোক আছেন যারা তাকওয়া ও পরহেজগারী সম্পন্ন এবং পাপ ও বর্জনীয় কাজকর্ম হতে বেঁচে থাকার জন্য সর্বদাই যত্নবান। তারা সিয়াম সাধনার মাঝে কোনো ভুলত্রুটি হয়ে গেলে চেতনা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তওবা ও এস্তাগফার করে নিজেদের সংশোধন ও ত্রুটিমুক্ত করে নেন। এ শ্রেণির রোজাদারদের প্রতি রমযান মাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রহমতের বারী বর্ষণ হতে থাকে। তারা যখন রোজার প্রথম ১০ দিন একান্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে অতিবাহিত করেন, তখন তারা আর সেই লোক থাকেন না। যেমনটি রোজা শুরু হওয়ার প্রাক্কালে ছিলেন। বরং তাদের মাঝে মুমিন সুলভ মহৎ গুণাবলী আগের তুলনায় অনেক বেশি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে যায়।
এমকে/আরকে/এসএস
মন্তব্য করুন