'নদীটা মরে গেল' (ভিডিও)

'সিকিম থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত আসার পথে তিস্তা নদীতে ২৯টি ব্যারেজ নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ পর্যন্ত আসতে আসতে তিস্তা নদীটা মরে গেল। আর নদীটা মরে যাওয়ার সঙ্গে সেখানকার সিভিলাইজেশনও মরে গেছে।'

বললেন ভারতে ‘পর্যটন গান্ধী’ নামে সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব সুপ্রতিম রাজ বসু।

শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে 'মনন' আয়িজিত সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পশ্চিম বাংলার নন্দিত তথ্যচিত্রকর অজয় রায় পরিচালিত ‘দ্য টেলস্ অব তিস্তা : স্টোরি অব আ ডায়িং রিভার’ চলচ্চিত্রের একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

প্রদর্শনী শেষে নদী, নদীর জীবন, নদীবর্তী মানুষের জীবন, আন্তর্জাতিক নদী, নদী ও রাজনীতি এ-সব নিয়ে সংলাপে
রাজ বসু আরো বলেন, ইকো সিস্টেমকে রিপ্রেজেন্ট করে পানি। ইকো সিস্টেমের ভাষা হচ্ছে পানি। আর তিস্তা নদীতে ইকো সিস্টেমের ভাষা হাইড্রো সিস্টেমে রুপ লাভ করেছে। যে তিস্তা বাংলাদেশের ১৫ শতাংশ কৃষিকে রিপ্রেজেন্ট করে, ড্যাম নির্মাণের মাধ্যমে সে ক্ষতিটা বাংলাদেশকে বহন করতে হচ্ছে। স্বার্থবাদী মহলের কারণে তিস্তায় ডেভেলাপমেন্টের বিপরীতে সাসটেনিবিলিটিকে দাঁড় করানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, নদী বাঁচলে মানুষ বাঁচবে। ড্যাম নির্মিত এলাকার মানুষ সাময়িক অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য তিস্তা নদীর সর্বনাশ নিয়ে কিছু বলে না। কিন্তু তিস্তাকে বাঁচানোর জন্য বর্ডারকে বাদ দিয়ে, পলিটিক্যাল ব্যারিয়ারকে অতিক্রম করে সবাইকে একসঙ্গে কথা বলতে হবে।

‘দ্য টেলস্ অব তিস্তা” চলচ্চিত্রের নির্মাতা অজয় রায় বলেন, নদী হচ্ছে সভ্যতার ধারা। নদীর ওপর লাখ লাখ মানুষের জীবন নির্ভর করে। শুধু তিস্তা নয়, নদীমাতৃক দেশের সব নদীতেই বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। নদীগুলোকে এভাবে মেরে ফেলা হচ্ছে, অথচ রাজনৈতিক কারণে আমরা কিছুই বলছি না।

তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশের বহু পুরনো ইস্যু হচ্ছে তিস্তা। ন্যায্য হিস্যার ব্যাপারে এবং তিস্তাকে বাঁচাতে সবাইকে একসঙ্গে স্লোগান তুলতে হবে। কারণ তিস্তা বাঁচলেই মানুষ বাঁচবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সেলিম মোজহারের নির্দেশনায় সংলাপটি পরিচলনা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জুনায়েদ আহমেদ হালিম।

দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ ভারতের কাছে তিস্তা নদীর পানির নায্য হিস্যা চেয়ে আসছে বাংলাদেশ। এই ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার বেশ কয়েকবার ভারতীয় সরকার প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করে আসছে। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির মুখে আলোচনার কোনো কার্যকর অগ্রগতি হয়নি।

এসজে