• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

কী করবেন শবে বরাতের রাতে

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ১০ মে ২০১৭, ২৩:০৬

শাবান মাসের মধ্য রজনী ‘শবে বরাত’ বান্দাকে শ্রষ্টার কাছে নেয়ার রাত। মহান আল্লাহ তার বান্দাকে ইবাদতের বিশেষ কিছু সুবিধা দিয়েছেন। বান্দার জন্য এমন পাঁচটি রাত দিয়েছেন যেসব রাতকে হাদিসে অতি মহিমান্বিত রজনী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পাঁচটি রাত হলো: শবে জুমা বা জুমার রাত, শবে ঈদাইন বা দুই ঈদের রাত, শবে বরাত বা শাবান মাসের মধ্য রাত এবং শবে কদর বা কদরের রাত।

শবে বরাত নিয়ে অনেক আলোচনা ও বিতর্ক রয়েছে। এই রাতটি উপমহাদেশে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে পালিত হয়। এছাড়া শিয়া মুসলিমরাও আনন্দ ও ‍উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করে শবে বরাত। শিয়া সম্প্রদায় বিশ্বাস করে, শবে বরাতে রাসুল (স.) এর বংশের ১২তম ইমাম, ইমাম মাহদী (আ.) জন্ম নেন। তাই তারা ইমাম মাহদীর জন্মদিন হিসেবেই পালন করে শবে বরাত। তবে আরব বিশ্ব ও অন্যান্য অঞ্চলে শবে বরাতকে এতোটা গুরুত্ব দিয়ে পালন করা হয় না।

ইবনে মাজাহ’র ১৩৮৮ নম্বর হাদিসে উল্লেখ আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন মধ্য শাবানের রজনী আসে, তখন তোমরা রাতে দণ্ডায়মান থাকো এবং দিনে রোজা রাখো। কারণ, ওই দিন সূর্যাস্তের পর মহান আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, কোনো ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। কোনো রিজিক প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তাকে রিজিক দেব। কোনো দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তি আছে কি? আমি তাকে মুক্ত করব। এভাবে সুবহে সাদিক উদয় পর্যন্ত চলতে থাকে। তবে এ হাদিসের বিষয়ে ইমামদের মাঝে মতপার্থক্য আছে।

সিহাহ সিত্তার প্রধান দুই হাদিস গ্রন্থ বুখারি ও মুসলিম শরিফে আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমাদের প্রতিপালক প্রতি রাতের শেষ এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করে বলেন, আমাকে ডাকার কেউ আছে কি? আমি তার ডাকে সাড়া দেব। আমার কাছে চাওয়ার কেউ আছে কি? আমি তাকে তা প্রদান করব। আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার কেউ আছে কি? আমি তাকে ক্ষমা করব। বুখারি ও মুসলিমের এই হাদিস দ্বারা বোঝা যাচ্ছে যে, মুমিনের প্রতি রাতই ফজিলতপূর্ণ।

শবে বরাতের নফল নামাজ ইবাদত

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন শাবানের মধ্য রজনী আসবে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে। (ইবনে মাজাহ)। ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নামাজ। আর নফল ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নফল নামাজ।

রাতের নিয়মিত নফল ইবাদতের মধ্যে রয়েছে; বাদ মাগরিব ছয় থেকে বিশ রাকাত আউওয়াবিন নামাজ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ছয় রাকাত নামাজ আদায় করবে; এসবের মাঝে কোনো মন্দ কথা না বলে তার এই নামাজ ১২ বছরের ইবাদতের সমতুল্য গণ্য হবে। হজরত আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত: যে ব্যক্তি মাগরিবের পর বিশ রাকাত নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন। (তিরমিজি, মিশকাত, ফয়জুল কালাম, হাদিস: ৪৪৯-৪৫০)।

রাতের শ্রেষ্ঠতম ইবাদত হলো তাহাজ্জুদ নামাজ। (আল কোরআনুল করিম, পারা: ১৫, সুরা-১৭ ইসরা-বনি ইসরাইল, আয়াত: ৭৯)। এ ছাড়া সালাতুস তাসবিহ এবং অন্যান্য নফল নামাজ আদায় করা যায়। আর ইবাদতের আরেকটি উত্তম পথ হচ্ছে কোরআন তেলাওয়াত। এছাড়া শবে বরাতের এই পবিত্রতম রাতে যতটুকু সম্ভব দান খয়রাত করা। কারণ আল্লাহ দানকারীকে পছন্দ করেন এবং কেয়ামতের দিন অতি উত্তম স্থানে তাকে রাখবেন।

শবে বরাত হালুয়া-রুটি

শবে বরাতের সঙ্গে হালুয়া-রুটির একটি সম্পর্ক দেখা যায়। হালুয়া আরবি শব্দ, যার অর্থ হলো মিষ্টি বা মিষ্টান্ন। শবে বরাতের রাতে ইবাদত বাদ দিয়ে হালুয়া রুটিতে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। কিন্তু শবে বরাত ইবাদতের রাত। এ রাতে দান-খয়রাত করে ও মানুষকে খাইয়ে ইবাদত করতে হবে।এই রাতকে হালুয়া-রুটিতে পরিণত করে ইবাদত থেকে গাফেল হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh