• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

তাদের চোখে স্বপ্নের বাংলাদেশ যেমন

কুশল ইয়াসির

  ১৮ মার্চ ২০১৭, ১২:৩৪

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ঘিরে চারদিকে ব্যাপক প্রস্তুতি। আসছে ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ৪৬ বছর পূর্ণ করবে দেশ। এমন পরিস্থিতিতে দেশকে নিয়ে যখন স্বপ্ন ও বাস্তবতায় সবাই দ্বিধায়! ঠিক তখন সামনে এগিয়ে নিতে বিশ্বের কাছে দেশকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন একদল তরুণ। দেশকে নিয়ে তারা দেখছেন অন্যরকম স্বপ্ন। সেই স্বপ্নের অংশ হিসেবে তাদের অর্জনগুলো কেমন তা দেখে নেবো।

ব্রিটেনের রাজ প্রাসাদে লুঙ্গি-গামছা পরে রানির হাতে 'কুইনস ইয়ং লিডারস' পুরস্কার নিয়ে শিরোনামে আসেন ওসামা বিন নূর। ২০১৬ সালে তরুণদের সহযোগিতায় স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাজ্য সরকারের দেয়া এ সম্মান পান তিনি।

‘ইয়ুথ অপরচুনিটিস’এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ওসামা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বস এশিয়ার সেরা অনূর্ধ্ব-৩০ বছরের তরুণ সামাজিক উদ্যোক্তাদের তালিকায় ছিলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি অর্জন এসেছে তরুণদের হাত ধরে এবং তরুণদের হাতেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ। এ তরুণ জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে তার লক্ষ্যে।

মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ার বাংলাদেশে ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর, পেশাজীবীদের ওয়েবসাইট লিঙ্কডইনের স্টুডেন্ট ভয়েসের লেখক জাহিদ হোসেন খান আশা। বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন), বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড (বিডিএমও) এবং ওপেন নলেজ ফাউন্ডেশন নেটওয়ার্কসহ (ওকেএফএন) বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত তিনি।

তার মতে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল আমাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংগ্রামের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। এখন দেশের শিক্ষা-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার প্রচুর সুযোগ আছে তরুণদের। আমরা বাইরে ৮০’র দশক থেকে শ্রমিক পাঠানো শুরু করি। তবে ভারতের মতো উচ্চশিক্ষিত মানবসম্পদ পাঠাতে পারিনি।

আশা বলেন, প্রকৌশলী, চিকিৎসকদের দেশের বাইরে মানবসম্পদ হিসেবে পাঠানোর দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে কপিক্যাট প্রযুক্তি বা ভাবনা নিয়ে এগোনোর প্রবণতা কমাতে হবে। টেকসই উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির লোকালাইজেন ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে।

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কাপড়কে পরিচয় করিয়ে দিতে বিশ্বজয়ে নেমেছেন আফসানা ফেরদৌসি উর্মি। ২০১০ সালে ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের আয়োজনে ইউরো বাংলা ফিউশন ফ্যাশন শো’ জয় দিয়ে তার যাত্রা। ২০১১ সালে ফ্যাশন ও টেক্সটাইল ডিজাইনের শিক্ষার্থী নিয়ে প্রতিযোগিতা স্টুডেন্ট ডিজাইন কম্পিটিশনে (এসডিসি) রানার্স-আপ হন। ২০১৪ সালে লন্ডনে আলকেমি ফ্যাশন প্রদর্শনী, ২০১৫ সালে বার্লিনের লোকাল ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাশন এক্সিবিশন এবং ২০১৬ তে লন্ডনে বাংলাদেশ ফ্যাশন উইকে জায়গা করে নেয় তার ডিজাইন।

এসডিসি’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি বলেন, দেশের প্রতিটি তরুণ নিজের দেশের ইতিহাস জানবে। মর্ম বুঝে তারা স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করবে। তা সারাবছর অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, দেশের ফ্যাশন ডিজাইনাররা অনেক ভালো কাজ করছেন। ডিজাইনার হিসেবে আমার অবশ্যই চাওয়া থাকবে তরুণরা যাতে বেশি করে দেশের পণ্য কিনে। এতে দেশের তাঁত শিল্প আরো বেশি সমৃদ্ধ হবে।

নিউ সাউথ ওয়েলসের টেকনিক্যাল অ্যান্ড ফারদার এডুকেশন (টিএএফই) ইনিস্টিটিউট থেকে ডিগ্রি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্রডকাস্টিং করপোরেশনে (এবিসি) টেকনেশিয়ান হিসেবে যোগ দেন মিরপুরের ছেলে সাব্বির চৌধুরী। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল দেশের মিডিয়ার জন্য কিছু করবেন। আর সে ইচ্ছে পূরণ করতেই টেলিফিল্ম প্রযোজনা শুরু করেন তিনি। হালের জনপ্রিয় তারকাদের সঙ্গে নতুন মুখ নিয়ে কাজ করছেন সাব্বির।

তিনি বলেন, আজ বিশ্বের অনেক ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। অ্যালেক্সা র‌্যাঙ্কিং দেখলেই বুঝতে পারি যে আমাদের উন্নতি হচ্ছে। সুতরাং, আমরা কিভাবে বলি এ দেশে আর কিছুই হবে না। যার যার অবস্থানে থেকে আমরা কি কিছুই করতে পারি না এ দেশটার জন্য? একটু চেষ্টা করলে অনেক কিছুই করতে পারে তরুণ সমাজ। শুধু সৃজনশীল হওয়া দরকার।

টেকনিশিয়ান বলেন, একটি অপ্রিয় সত্য কথা হলো, দেশের বাইরের যে কেউ আমাদের শুভাকাঙ্খী হোক না কেনো, তাদের একটাই লক্ষ্য ব্যবসা। এর বেশি কিছু নয়। সুতরাং, যা করার আমাদেরকেই করতে হবে। ভবিষ্যতের যে জেনারেশন তাদের জন্য আপনি কি কিছু করেছেন? আপনার কি কোনো সামাজিক দায়বদ্ধতা নেই?

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এখন আমাদের জনগণ অনেক সচেতন! আমাদের ধারণায় পরিবর্তন আসবেই। তবে তা আসবে সময়সাপেক্ষে। এজন্য ভবিষ্যতের স্বপ্ন বাস্তবায়নের বীজ বুনতে হবে আমাকে-আপনাকে সবাইকে। ভবিষ্যত স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রত্যাশায় এ ম্যাসজেটা ছড়িয়ে দিতে হবে সর্বত্র। যে স্বপ্নটা হলো তথ্যপ্রযুক্ততিতে স্বয়ংসম্পূর্ন বাংলাদেশ।

ওয়াই/ডিএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh