• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

করোনাকালে রোজায় পুষ্টিবিদের মতে খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত?

  ২৮ এপ্রিল ২০২১, ২১:৩৮
করোনাকালে রোজায় পুষ্টিবিদের মতে খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত?
করোনাকালে রোজায় পুষ্টিবিদের মতে খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত?

মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে চলছে পবিত্র রমজান মাস। এ মাস মুসলিমবাসীর ইবাদতের জন্য শ্রেষ্ঠ সময়। এই রমজানের মধ্যেও আমাদের সুস্থ থাকতে খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখা খুব জরুরি। কেননা, আমরা সবাই জানি করোনাভাইরাসের ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। করোনা থেকে সুরক্ষার জন্য উপায় হলো শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। যেকোনো সংক্রমণের (ভাইরাস) বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা বেশি কার্যকরী তোলাই হলো এখন মূল চেষ্টা।

এই সময়ে গরম বেশি এবং বাতাসে আর্দ্রতা অনেক কম। তাই রোজা রাখার পরও শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট ব্যাল্যান্স করতে হবে।

প্রতিদিনের খাবার ব্যাল্যান্স হতে হবে। মানুষের শরীরে সব পুষ্টি উপাদান শোষণের জন্য একটি অন্যটির উপর নির্ভরশীল। যেমন ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য ভিটামিন-ডি প্রয়োজন। আয়রন শোষণের জন্য ভিটামিন-সি প্রয়োজন। এই কারণে প্রতিদিন প্রত্যেকটা খাদ্য গ্রুপ থেকে খাবার গ্রহণ বাঞ্ছনীয়। যেন সব পুষ্টি উপাদান আমরা আমাদের শরীরে প্রতিদিন পেতে পারি।

৬টি খাদ্য গ্রুপের মধ্যে প্রধান হলো শর্করা, আমিষ ও ফ্যাট এবং বাকিগুলো হলো ভিটামিন, মিনারেল ও পানি। প্রধানত ভাত, রুটি, মুড়ি, চিড়া, আলু ইত্যাদি থেকে আমরা শর্করা পেয়ে থাকি যা শরীরে শক্তি যোগায়। মাছ, মাংস, ডাল, দুধ, ডিম ইত্যাদি থেকে আমিষ পেয়ে থাকি যা শরীরে ক্ষয় রোধ করে, কোষের রক্ষণাবেক্ষণ করে। উদাহরণস্বরূপ, আমাদের শরীরে যদি কোনো সেল বা কোষ ড্যামেজ হয় তাহলে প্রোটিন বা আমিষযুক্ত খাবার খেলে সেটা রিকভার হয়। এজন্য আমিষের ভূমিকা আমাদের শরীরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ফ্যাট আমাদের জন্য উপকারী। ফ্যাট দুই প্রকার। একটি খারাপ ফ্যাট বা স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং অন্যটি ভালো ফ্যাট বা পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট।

আমাদের শরীরে ভিটামিন এবং মিনারেল’র ভূমিকা অনেক। বিশেষ করে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এর ভূমিকা অপরিসীম। এই সব পুষ্টি উপাদান আমরা পেয়ে থাকি শাক-সবজি এবং ফলমূল থেকে। তাই প্রতিদিন এই জাতীয় খাবার আমাদের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখতে হবে।

পানিও আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পানি আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয় ইউরিনের মাধ্যমে।

এখন জেনে নেয়া যাক এই করোনাতে রোজায় কি কি খাবার রাখা উচিত-

ইফতার :

  • ইফতারে এমন খাবার রাখতে হবে যা খেলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরে শক্তি পৌঁছাবে। মানে যেসব খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি সেসব খাবার একটি রাখতে হবে। যেমন খেজুর একটি ভালো খাবার।
  • প্রোটিন উৎস হিসেবে সিদ্ধ ডিম, ছোলা রান্না, চিকেন, হালিম রাখা যাবে।
  • সালাদ হিসেবে যেকোনো ফল এবং কিছু সবজি রাখা যায়।
  • টক দই রাখা যাবে। যদি কেউ চিড়া খেতে চায় তাহলে সঙ্গে টক দই দিয়ে খেতে পারবে।
  • পানির সঙ্গে ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। যাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে আছে এবং ডায়াবেটিস নেই তারা চিনি বা গুড় মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও রক্তচাপ ঠিক থাকলে ডাবের পানি বা স্যালাইন খাওয়া যেতে পারে। যেহেতু এখন গরমের সময়। শরীর থেকে অনেক পানি বের হয়ে যায় সঙ্গে ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যাল্যান্স হতে পারে তাই এই সময় ডাবের পানি বা স্যালাইন খাওয়া ভালো।

রাতের খাবার :
সবার জন্যই রাতের খাবার হালকা হলে বেশি ভালো। কারণ, খাওয়ার পরই ঘুমিয়ে পরি আমরা। তাই ক্যালোরি কম এমন খাবার হলে ভালো। তার মধ্যে সালাদ বা সবজির সঙ্গে ডিম সিদ্ধ বা চিকেন রাখা যেতে পারে। চাইলে কেউ সামান্য পরিমাণে ভাত বা রুটি দিয়ে মাছ বা মাংস খেতে পারবে। তবে পরিমাণ কম বা পরিমিত হতে হবে।

সেহরি’র খাবার :
সেহরির খাবার একটু ভারি এবং আঁশযুক্ত হলে বেশি ভালো। এই খাবার দিয়ে আমরা সারাদিন শক্তি নিয়ে চলব। তাই এমন সুষম খাবার রাখতে হবে যেন আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে না পরে। সঙ্গে প্রচুর পানি পান করতে হবে। এই গ্রীষ্মে পানির চাহিদা বেশি।

এই সব খাবার প্রতিদিন নিয়ম করে খেলে শরীর সব ধরনের পুষ্টি পেয়ে যাবে, ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। আমাদের খাবারকে আমাদের প্রয়োজনে গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত ক্যালোরি বহুল খাবার এবং ভাজা-পোড়া খাবার এই রোজায় বন্ধ করে ফ্রেশ ন্যাচারাল খাবার গ্রহণ করতে হবে।

পুষ্টিবিদ সামিয়া তাসনিম
ল্যাব এইড পল্লবী, প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট বনানী।

মন্তব্য করুন

daraz
  • পরামর্শ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের ইফতার 
স্পেনে বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের ইফতার মাহফিল
ইফতার পার্টি করে মিথ্যাচার চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের 
রোজায় বিনা পয়সায় যে হোটেল সেহরি-ইফতার করায়
X
Fresh