• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

করোনাভাইরাস: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পেয়ারা

অনলাইন ডেস্ক
  ০৪ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৩০
করোনাভাইরাস: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পেয়ারা

বারোমাসী ফল পেয়ারা। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এর জুড়ি নেই। ভিটামিন সি-তে ভরপুর এই ফল। দেশি ফলগুলোর মধ্যে পেয়ারা যেমন পুষ্টিগুণে ভরা তেমনি খেতে বেশ সুস্বাদু। সাধারণ এবং সহজলভ্য এই ফলটির পুষ্টিগুণ অনেক। ফল হিসেবে, ভর্তা করে, এমনকি জেলী বানিয়ে খাওয়া যায় মজাদার এই ফলটি। অনেকে পেয়ারা সহজলভ্য বলে অবহেলা করে, খেতে চান না। কিন্তু এর মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান ও গুণাবলীগুলো জানলে পেয়ারাকে আর কখনোই উপেক্ষা করবেন না।

বর্তমানে বিশ্বে করোনাভাইরাসের তান্ডবে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে জনজীবন আতঙ্কগ্রস্থ। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে আমাদের সচতন হতে হবে এবং অন্যদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে সঙ্গে শরীর স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াতে হবে। ফলমূল- শাকসবজি, ভিটামিন সি এসব কে আর অবহেলা করো যাবে না। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়াতে পেয়ারা খেতে পারেন।

প্রতিদিন মাত্র ১ টি পেয়ারা আপনার নানা ধরণের শারীরিক সমস্যা খুব সহজেই দূর করে দিতে পারে। পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ। এছাড়া ভিটামিন বি২, ই, কে, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, কপার, আয়রন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম রয়েছে। এর উচ্চমাত্রার ভিটামিন-এ ও সি ত্বক, চুল ও চোখের পুষ্টি জোগায়, ঠাণ্ডাজনিত অসুখ দূর করে।

প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারাতে রয়েছে- খাদ্যশক্তি ৬৮ কিলোক্যালরি, আমিষ ২.৫৫ গ্রাম, শর্করা ১৪.৩ গ্রাম, ফাইবার ৫.৪ গ্রাম, কোলেস্টেরল ০ মিলিগ্রাম, চর্বি ০.৯৫ গ্রাম, ভিটামিন এ ৬২৪ আইইউ, ভিটামিন সি ২২৮ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪১৭ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৮ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ২২ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১১ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.২৬ মিলিগ্রাম, জিংক ০.২৩ মিলিগ্রাম, লাইকোপেন ৫২০৪ মাইক্রোগ্রাম।

পেয়ারা যেভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় জেনে নিন-

ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রতিরোধ করে
পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এবং এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এটি কোষকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া পেয়ারায় অবস্থিত ভিটামিন সি বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত ভাবে লাইকোপিন সমৃদ্ধ গোলাপি পেয়ারা খেলে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমায়। তাছাড়া পেয়ারা ট্রাইগ্লিসারাইড এবং LDL নামক একটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় যার ফলে হার্টের অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে
ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য পেয়ারা দারুণ উপকারী। পেয়ারার ফাইবার দেহে চিনি শোষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। পেয়ারার রসে থাকা উপাদান ডায়াবেটিস মেলাইটাসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পেয়ারা পাতাও বেশ কার্যকর। পেয়ারাতে প্রচুর ফাইবার এবং কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকার কারণে এটি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে আর তাই ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুকি কিছুটা কম থাকে।

ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করে
পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের সাথে যুদ্ধ করার শক্তি প্রদান করে। তাছাড়া যে কোনও ইনফেকশন থেকে পেয়ারা শরীরকে সুস্থ রাখে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে
পেয়ারাতে লাইকোপিন, ভিটামিন সি, কোয়ারসেটিন এর মত অনেকগুলো উপাদান রয়েছে যা শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে আর এই এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুকি কমায় এবং শরীরের ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি রোধ করে। বিশেষ করে এটি প্রোসটেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

চোখের রোগকে প্রতিরোধ করে
পেয়ারাতে ভিটামিন এ আছে আর ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন এ কর্নিয়াকে সুস্থ রাখে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। তাছাড়া এটি খেলে চোখের ছানি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়। কাঁচা পেয়ারা ভিটামিন এ এর ভাল উৎস।

ওজন এবং ত্বক, চুল ও দাঁতের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি
পেয়ারা খেলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন খুব সহজেই ঝড়ানো যেতে পারে। যাদের ওজন অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তারা পেয়ারা খেতে পারেন। পেয়ারা ত্বককে ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ত্বক, চুল ও দাঁতের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

পেয়ারা গর্ভবতী মায়েদের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। পেয়ারায় বিদ্যমান ফলিক অ্যাসিড গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্র গঠনে ভূমিকা রাখে এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ প্রতিহত করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়
এছাড়া পেয়ারা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি ও লাইকোপিন রয়েছে। এর ফলে রক্ত পরিষ্কার হয় ও ত্বক অনেক বেশি উজ্জ্বল হয়। পেয়ারা চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা করে ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পেয়ারা নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। ভিটামিন সি থাকার কারণে সাধারণ সর্দি-কাশি দূর করতেও সাহায্য করে পেয়ারা।

এস

মন্তব্য করুন

daraz
  • লাইফস্টাইল এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, চলতি বছরে ২৪
প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের ফল যেদিন প্রকাশ হতে পারে
স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন পাস করা হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বিকেএসপির খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যবীমা দেবে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স
X
Fresh