অকাল মৃত্যুঝুঁকি থেকে বাঁচতে নিয়মিত হাঁটুন
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং এতে কয়েকশ মানুষের প্রাণহানির খবরের পর ছোঁয়াচে এই রোগটি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাসকে প্রতিরোধে দেশের প্রায় সব জায়গায় এখন লকডাউন করা হয়েছে। এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে সুস্থ্যতার জন্য সচেতনাতাই আগে জরুরি।
সুস্থতায় হাঁটার কোনও বিকল্প নেই। হাঁটলে শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন পৌঁছায়। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। খুব সহজেই অসুখে পড়ার ঝুঁকি কমে আসে। আর শারীরিক পরিশ্রমের সবচেয়ে সহজ পন্থা হলো হাঁটা। নিয়ম করে সকালে বা বিকেলে হাঁটতে পারেন।
গবেষকরা বলেন, যত বেশি হাঁটবেন ততই আপনার স্টেপ কাউন্ট বাড়বে আর কমবে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি।
‘জেএএমএ’ শীর্ষক জার্নালে হাঁটার ওপর এই গবেষণা প্রকাশিত হয়। গবেষকরা বলেন, হাঁটার গতি যেমনই হোক, একদিনে একজন মানুষের স্টেপ কাউন্টের সংখ্যার সঙ্গে তার মৃত্যুঝুঁকির শক্ত সম্পর্ক আছে।
গবেষণার প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের (এনসিআই) পেদ্রো সেইন্ট মরিস বলেন, হাঁটা শরীরের জন্য খুবই উপকারী– এ কথা আমাদের অনেকের জানা। তবে ঠিক কতগুলো ‘স্টেপ কাউন্ট’ মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে পারে তা আমরা অনেকেই জানি না।
তিনি বলেন, কতটুকু গতিতে হাঁটা জরুরি তা আমাদের অজানা ছিল। এ বিষয়টি বিস্তারিত জানতে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। এই গবেষণা হাঁটার উপকারিতা জানাবে ও সাধারণ মানুষকে সঠিকভাবে হাঁটতে সাহায্য করবে। আর প্রযুক্তিপণ্যগুলো থেকে পাওয়া স্টেপ কাউন্টয়ের যথাযথ প্রয়োগ তারা করতে পারবে।
এর আগেও হাঁটার ওপর গবেষণা চালানো হয়েছে। এ গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা ছিলেন বয়স্ক ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত।
এই গবেষণায় অংশ নেন ৪০ ও তদূর্ধ্ব বয়সের ৪ হাজার ৮০০ মানুষ। ২০০৩ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী সর্বোচ্চ সাত দিন ‘অ্যাক্সেলেরোমিটার’ পরিধান করেছেন।
হাঁটা শরীরের জন্য কতটা উপকারী জানেন?
. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
. ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে
. শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি থাকলে অনায়াসেই রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বেড়ে যায়
. ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে
. হাড়ের ক্ষয়রোগ জয়েন্টে ব্যথার ঝুঁকি কমে
. হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে
. পায়ের শক্তি এবং পেশী শক্তি বৃদ্ধি হয়
. স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়
. স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়
. ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে
. মন মেজাজ ভালো রাখে
এখন শুধু হাঁটলে হবে তা কিন্তু নয়, হাঁটার নিয়মকানুন মানতে হবে। প্রচুর পানি খেতে হবে। হাঁটার পর এক ঘণ্টার মধ্যেই কিছু খেয়ে নিতে হবে। হাঁটার সময় অবশ্যই ঢিলেঢালা পোশাক এবং উপযুক্ত জুতো পরে হাঁটা উচিত।
প্রতিদিন হাঁটার ফলে যেমন শরীর ও মন সুস্থ এবং প্রাণবন্ত থাকে তেমনি হাঁটার সময় গতির দিকটাও দেখা দরকার। ব্যায়ামের ফলে সহজেই জীবন থেকে ওষুধের দাপট সরিয়ে ফেলা যায়। আর সবচেয়ে সহজ পদ্ধতির ব্যায়াম হলো হাঁটা, তাই সকলের উচিত প্রতিদিন ব্যস্ত জীবনের মধ্যে থেকেই একটু সময় বার করে হাঁটা।
এস
মন্তব্য করুন