শিশুদেরও বসন্ত
ফাল্গুনের হাত ধরেই ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতির আজ এতো বর্ণিল সাজ। কুয়াশার ঘোমটা সরিয়ে, গাছে গাছে ফুলে ফুলে রঙ ধরিয়ে এসেছে বসন্ত। বসন্ত এখন আর শুধু বড়দের উৎসব নয়। এ যেন শিশুদেরও বসন্ত।
বাসন্তী রঙের শাড়ি, হাতভর্তি কাচের চুড়ি আর মাথায় ফুলের মুকুট পরে মা-বাবার হাত ধরে চারুকলা, বইমেলায় এখন ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় ছোট্ট শিশুদেরও। বসন্তের রঙ তো শিশুদেরও বর্ণিল করে তোলে। তাই বসন্তে বড়দের মতো সাজতে চায় শিশুরাও।
আর তাই তো প্রিয় এই ঋতুটিকে বরণ করে নিতে শিশুদের জন্যও চাই বাসন্তী পোশাক। শিশুদের পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, শার্ট, সালোয়ার-কামিজ, ঘাগড়া, ফ্রক, স্কার্ট, শাড়িতে ঋতুভিত্তিক নকশা করা হয়েছে। ব্লক, ডিজিটাল প্রিন্ট, মেশিন প্রিন্ট, এমব্র্রয়ডারির মাধ্যমে বসন্তের প্রকৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে শিশুদের পোশাকে। মোটিফ হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে ফুল, লতাপাতা, গাছ, প্রজাপতি, জীবজন্তুসহ মজার মজার সব থিম।
শিশুদের ফ্রক, স্কার্ট ও টপসে এখন লেয়ার নকশা এবং অনেক বেশি ঘের চলছে। স্কার্ট ও টপসের একটি অংশ ফ্লাওয়ার প্রিন্ট থাকলে অন্য অংশে ব্যবহার হচ্ছে একরঙ। লেয়ারের ফাঁজের একটিতে ব্যবহার হচ্ছে একরঙ তো একটিতে ফুলেল প্রিন্ট। ব্লক ও ডিজিটাল প্রিন্টের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে শিশুদের বাসন্তী সালোয়ার-কামিজ।
‘সোনামণিদের জন্য এবার লাল, হলুদ, কমলা বাসন্তী পাঞ্জাবি, কোটি, ফতুয়া, ফ্রক তৈরি করা হয়েছে। ফুলের রঙনকশার সালোয়ার-কামিজ তো রয়েছেই। নেট ও সুতি কাপড়ে ফ্লাওয়ার মোটিফের পাশাপাশি বিভিন্ন লোকজ মোটিফও ব্যবহার করা হয়েছে শিশুদের পোশাকে।
শিশুদের পাঞ্জাবির নকশায় বেছে নেয়া হয়েছে বড়দের মতো ব্লক, এমব্রয়ডারি, প্রিন্ট প্রভৃতি। পাঞ্জাবির সঙ্গে সোনামণিকে পরিয়ে দিতে পারেন খাদি, তসর কিংবা অ্যান্ডি ফেব্রিকের কোটি। সোনামণিকে আকর্ষণীয় লাগবে বর্ণিল চেক, প্রকৃতি, প্রজাপতিসহ নানারকম জীবজন্তু নকশার শার্ট ও টি-শার্টেও। ছোট্ট সোনামণিরা নজর কাড়বে বর্ণিল বাটিকের ফতুয়াতেও।
শিশুদের বসন্তের পোশাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে ফ্লাওয়ার মোটিফ। ফ্রক, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, শার্টসহ সব ধরনের পোশাকে এখন ফ্লাওয়ার মোটিফ ব্যবহার করা হচ্ছে। শিশুদের আরামের কথা মাথায় রেখে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পিওর সুতি ফেব্রিক ব্যবহার হয়েছে। সারা দিন ঘুরে বেড়ানোর জন্য এক পার্টের ফ্রক, টপস আরামদায়ক।
বসন্ত উপলক্ষে কোনো অনুষ্ঠানে যেতে চাইলে জরি, চুমকি বাদ দিয়ে লেয়ার পোশাক বেছে নিতে পারেন। এ ধরনের পোশাকগুলোয় শিশুদের গরমও লাগবে না আবার যেকোনো অনুষ্ঠানে মানিয়ে যায়। রঙের ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে লাল, হলুদ, কমলা, সবুজের মতো উজ্জ্বল সব রঙ।’
বসন্ত উৎসবে শিশুদেরও এখন বড়দের মতো শাড়ি পরার বায়না থাকে। অনেক দিন ধরেই শিশুদের জন্য ছোট শাড়ি পাওয়া যায়। এখন পাওয়া যাচ্ছে রেডি শাড়ি। কুচিসহ পুরো শাড়ি সেট করা থাকায় এ ধরনের শাড়ি শিশুদের পরাতে ঝামেলা হয় না। শিশুদের বসন্তের শাড়ি একরঙা তাঁত, চেক ও ফ্লাওয়ার মোটিফের।
সঙ্গে ব্যবহার হয়েছে বুটি ও জরির নকশা। শাড়ির পাড় ও আঁচলে একরঙ আর জমিনে ব্যবহার হচ্ছে ভিন্ন রঙনকশা। রঙের ক্ষেত্রে হলুদ, মেরুন, গোলাপি, নীলের সমন্বয় চোখে পড়বে।
ছোট সোনামণিকে বসন্তের সাজে সাজিয়ে তুলতে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো সেজে উঠেছে লাল, হলুদ বাসন্তী সাজে। ছোট শিশুদের জন্য বাসন্তী রঙের কুর্তা, ফতুয়া, ছোটদের ফ্রক, সালোয়ার-কামিজ ছাড়াও আছে গ্রামীণ ছাপের তাঁতের শাড়ি।
এস/সি
মন্তব্য করুন