• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

পোশাকের বাজারে শীতের আঁচ

লাইফস্টাইল ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ৩০ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:৩১
পোশাকের বাজারে শীতের আঁচ
শীতের পোশাক

রাজধানীতে এখনও শীত না পড়লেও পোশাকের বাজারে তার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। ফ্যাশন সচেতন তরুণ-তরুণীরা শীতকালে নিত্যনতুন ফ্যাশনের সাথে ভিন্ন মাত্রার ফ্যাশনের মিশেল ঘটানোর সুযোগ পায়। প্রতিনিয়তই তরুণ-তরুণীদের ফ্যাশন পরিবর্তন হচ্ছে; তাই তাদেরকে যদি নতুন কোন চেহারায়, নতুন কোন রূপে দেখা যায়, তাহলে এতে মোটেই অবাক হবার কিছু নেই।

এবারও শীতের পোশাকে এসেছে বেশ বৈচিত্র্য। পুরোনো ও নতুন ফ্যাশনের সংমিশ্রণে জমে উঠেছে পোশাকের বাজার। হয়তো অনেক আগেই দোকানিদের কাছে শীতের আগমনী বার্তা পৌঁছে গিয়েছিল, তাই দোকানে গরম পোশাকের যেন কমতি নেই। শীতকে কেন্দ্র করে নানা রঙ আর ঢঙ এর পোশাক আসে বাজারে।

ফ্যাশন সচেতনদের এই শীত কিন্তু ভীষণ প্রিয়। কেননা শীত নিবারণের হাজারো পোশাকে বাজার সরগরম। শীতের ফ্যাশন কেমন হতে পারে তা ডিজাইনারদের মতে অনেকটা এমন যে, শীতের পোশাকের জম্পেশ কালেকশন নিয়ে এসেছে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোও। জ্যাকেট, ব্লেজার, সোয়েটার, হুডিতে যেমন রয়েছে ফ্যাশন বৈচিত্র্য তেমনি রয়েছে বাহারি রঙ।

শীতের শুরুর দিকে এই সব শীতবস্ত্রের দাম তুলনামূলকভাবে কম রয়েছে। সে কারণে অনেক ক্রেতাই সাধ্যের মধ্যে শীতের সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে শীতবস্ত্রের বাজারে ভিড়ও করছেন। ঢাকার শপিং মলগুলোতে বা রাস্তার পাশে ফুটপাতগুলোতে সারি সারি পোশাকের দোকানগুলোর দিকে তাকালেই শীত নিবারণে পোশাকের প্রয়োজনের কথা মনে পড়ছে।

ঢাকার এলিফ্যান্ট রোড থেকে শুরু করে ঢাকা কলেজ, নিউ মার্কেট এলাকা পর্যন্ত সব জায়গায় শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় বিক্রেতাদের। রয়েছে ফুলপ্যান্ট, ফুলহাতা গেঞ্জি, জ্যাকেট, মাফলার, হাতমোজা, পা মোজা, টুপি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ও দামের কম্বল।

ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় বড় শপিং মলগুলোতে দেখা যায় এসব পোশাক কিনতে সব ধরনের ক্রেতার ভিড়। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে এসব শীতবস্ত্রের আবার রয়েছে শ্রেণিভেদ।

ঢাকা সিটি কলেজের মোড়েই গ্রামীণ ইউনিকলোর শো-রুমে রয়েছে বিভিন্ন দামের শীতের পোশাক। সেখানকার ব্যবস্থাপক ফাহিম বলেন, শীতের সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন পোশাক হুডিতে রয়েছে বিশেষ ছাড়। এছাড়াও অন্যান্য শীতপোশাকের উপরও রয়েছে বিভিন্ন মাত্রায় মূল্যছাড়। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই তাদের শোরুমে শীতকালীন পোশাক আসা শুরু হয়েছে বলে জানান ফাহিম।

যেহেতু শীত এখনও তেমনভাবে পড়ছে না, ক্রেতার সংখ্যা তেমন বেশি না। তবে খুব কমও না। তবে শীত ছাড়া অন্য সময়টায় তার দোকানে টি শার্ট-গেঞ্জিসহ বিক্রি হয় ছেলেদের নানা ধরনের পোশাক। ঠাণ্ডা আসার আগে থেকেই আমরা ফুলহাতার পোশাক আনা শুরু করি। প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার পোশাক বিক্রি হয়। বঙ্গবাজার ও গুলিস্তান ট্রেড সেন্টার থেকে এই পোশাকের সংগ্রহ আসে বলে জানান তিনি।

নানা ধরনের শীতবস্ত্রের পাশাপাশি শীতের আনুষঙ্গিক হিসেবে চাহিদা রয়েছে হাতমোজা, পা মোজাসহ বিভিন্ন ধরনের টুপির। মার্কেটঘুরে শীতের পোশাক কেনার পর টুপি-মোজার দোকানে এসেছিলেন ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী হুমায়রা। তিনি বলেন, ভাই-বোন আর নিজের জন্য শীতের কাপড় কিনলাম। সামনে কক্সবাজার কিংবা সাজেক যাওয়ার পরিকল্পনা আছে। তাই ভাবছি টুপি কেনা দরকার।

নূরজাহান শপিং কমপ্লেক্সের নজি গার্মেন্টসে সারা বছরই মেলে শীতের নানা ধরনের পোশাক। দুই হাজার টাকা থেকে শুরু করে আট-নয় হাজার টাকা দামের পোশাকও পাওয়া যায় এখানে।

এই দোকানে কর্মরত আনিসুর রহমান বলেন, শীত ছাড়া অন্য মওসুমে যারা দেশের বাইরে যায়, তারা এখান থেকে গরম কাপড় কেনে। শীতকালে মোটামুটি সবাই ভিড় করে এখানে। এত সব দোকান ঘুরে দেখার পর চোখ যায় ঢাকা কলেজের পাশেই নিজের স্বল্প পুঁজি নিয়ে রহিজ উদ্দিন নামের ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধের মাফলারের দোকানে। প্রতিটি রুমাল কিংবা ছোট মাফলার ১০ টাকা করে বিক্রি করছেন তিনি।

এদিকে, আসছে শীত বিভিন্ন জেলায় লেপের দোকানে বাড়ছে ব্যস্ততা।

এছাড়াও চোখে পড়ে কিছু পুরোনো, রঙ ঝলসে যাওয়া স্যুয়েটার আর জ্যাকেট। নিম্নবিত্ত কিংবা দারিদ্র্যসীমারও নিচে বসবাস করছে এমন ক্রেতাদের জন্যই যে এই পসরা সাজানো হয়েছে তা সহজেই স্পষ্ট হয়।
নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক, এলিফ্যান্ট রোড ছাড়াও ফার্মগেট, বঙ্গবাজার, বায়তুল মোকাররম, মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর, মিরপুর-১ গোল চত্বর এলাকায় ফুটপাতে ও ফ্যাশনপণ্যের বিপণিবিতানগুলোতে বসেছে শীতবস্ত্রের পসরা। নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এসব দোকান থেকে কেনাকাটা করছেন।

এস/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • লাইফস্টাইল এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh