• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নিজের সমালোচনাই বুদ্ধিমানের কাজ

লাইফস্টাইল ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ২৩ নভেম্বর ২০১৯, ১৯:৩৮
নিজের সমালোচনাই বুদ্ধিমানের কাজ

আমরা মানুষ চলার পথে অনেক ভুল করি। কিন্তু ভুল আমাদের জীবনকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যায়। সেটা শুধু বোঝা যায় যখন ভুলের মাশুল আমরা গুণি। তাই আমরা অন্যের সমালোচনা কিংবা ভুল না ধরে নিজের সমালোচনা করে নিজেকে ঋদ্ধ করি। তাই অন্যের সমালোচনা না করে তার আগে নিজে কিছু করার আগে ভাবুন, কী করা উচিত আর কী উচিত নয়।

আমরা অন্যের ভালো-মন্দের বিচার যেভাবে করতে পারি, সেভাবে নিজের ভালো-মন্দের বিচার করতে পারি না কিংবা করি না। কাউকে যদি দায়িত্ব দেয়া হয়, অপর একজন ব্যক্তির দশটি দোষ খুঁজে বের করতে, দেখা যাবে তিনি হয়তো ওই ব্যক্তির শতাধিক দোষ খুঁজে বের করে ফেলেছেন। আমরা অন্যের চলাফেরা, কথাবার্তায়, কাজকর্মে ও সার্বিক দিক বিবেচনা করে অনেক দোষ বা ভুল ধরতে পারি। অন্যের ভুল বা দোষ নিয়ে একে অপরের সঙ্গে সমালোচনা করতে পারি। যদিও এটা একদমই অনুচিত ও গর্হিত কাজ। আমরা অন্যের ভুল বা দোষ খুঁজে বের করে তাকে সংশোধন করতে অনেক পরামর্শ দিয়ে থাকি, কিন্তু সেটা উচিত ছিল নিজের জন্য করা। নিজের সমালোচনা করাই হচ্ছে আত্মসমালোচনা।

আমরা মানুষ যেন কেমন হয়ে যাচ্ছি দিন দিন। কেমন মানে হলো কেউ কারো ভালো চায় না, সর্বদা সমালোচনা করা, ভালো কি করলো তা দেখি না, খারাপটা নিয়েই পড়ে থাকা। না আপনার কথা বলছি না। যারা এমন কাজ করেন তাদের কথা বলছি।

আরে আপা দেখলেন দেখলেন মেয়েটা কেমন করে হেঁটে গেলো।...আরে ভাবী ওই ভাবী শাড়িটা এমন করে পড়ল কেন? কোন সেন্সে পড়লো? এত্তো বাজে দেখাচ্ছে.. ছি!... এই গেলো ঘরোয়ামুখী কথাবার্তা... এবার আসি অফিসিয়াল কথাবার্তায়..... স্যার, জানেন ওরা আসলে কাজই জানে না, কিভাবে যে আপনার অফিস চলবে আমি তাই-ই বুঝি না... এই ধরনের কথা একমাত্র তারাই বলেন যারা নিজেকে বড় করতে নিজের সুবিধাটাকে টিকিয়ে রাখতে এই রকম পরিবেশ তৈরী করে এবং দিন দিন কোম্পানিকে সর্বস্বান্ত করে দেন।

সবজায়গাতেই কিছু সবজান্তা শমসের লোক থাকে... যেমন অর্ডার দিতে থাকেন কিন্তু নিজের অর্জনে কিছুই নেই। তারা চেষ্টা করেন কিভাবে নিজে বড় হয়ে অন্যদের অপমান করা যায়। এই ধরনের লোকজন আসলে যে যেভাবেই হোক না কেন নিজেরাই যে নিজেদের ছোট করছেন, তারা এটাই সময়মতো বোঝেন না।

আর তাই বলতে খারাপ লাগলেও আজকাল এ ধরনের মন্তব্য করা মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কে, কী করলো? কার কী দোষ আছে? তা যাচাই বাছাই করা ইত্যাদি। আজকাল অনেক মানুষই আছেন যারা কারণে-অকারণে অন্যের দুর্বল দিকগুলো জনসমক্ষে প্রকাশ করে খুব মজা পান। কিন্তু নিজের সমালোচনা কয়জনই বা করেন?

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একবার নিজের বিবেককে প্রশ্ন করে দেখুন তো? অন্যকে নিয়ে যে সমালোচনা করছেন, আসলেই কি তা ঠিক হচ্ছে? বিবেক ঠিকই সঠিক উত্তর দিবে। কারণ বিবেক সবসময় সঠিক দিক নির্দেশনা দেয়।

আমরা যে অন্যের সমালোচনায় মত্ত থাকি, আমরা নিজের সম্পর্কেই কতটাই বা জানি? নিজেকে আগে এই প্রশ্নগুলো করে দেখুন- ব্যক্তি হিসেবে আমি কতোটা পারফেক্ট? আমাদের কি কি দোষ ত্রুটি রয়েছে? তাহলেই দেখবেন একে একে নিজের খুঁত বা দুর্বলতা বের হয়ে আসছে এবং খুঁজে বের করাও কিন্তু খুব একটা কঠিন কাজ নয়। তাহলে নিজের ইম্পারফেকশনগুলো খুঁজে নিয়ে তা সমাধান করতে আমাদের খুব একটা কষ্ট হবে না।

নিজের দোষগুলো খুঁজে বের করে তা সমাধানের দিকে নিয়ে আসা একটু কঠিন হলেও অসম্ভব তো আর না! কেননা, আমরা নিত্য নৈমিত্তিক অন্যের যে দোষ ত্রুটি দেখে/শুনে থাকি, সেগুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখাই হচ্ছে নিজের সমালোচনা করার প্রথম ধাপ।

অন্যের সমালোচনা প্রকাশ্যে বলে না বেড়ানোর থেকে মনে মনে নিজের বিবেককে প্রশ্ন করলেই চলবে। এতে বিবেক যেদিকে রায় দিবে না, সেদিকে না চললেই হবে। আর এটাই হচ্ছে আত্মসমালোচনা, যা নিজেরই সমালোচনার ফলাফল।

ভালো একজন মানুষ হতে হলে অবশ্যই নিজেকে আগে জানতে হবে। আর যে নিজের সমালোচনা করতে পারে, সেই তো আসল বুদ্ধিমান। কারণ সে তার নিজেকে জানে, তার দোষ ত্রুটির খবর রাখে। অন্যকে জানার আগে নিজেকে জানা কি গুরুত্বপূর্ণ না?

আমাদের আত্মসমালোচনা করতে হবে। এতে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি হবে। কমে আসবে অপরের সমালোচনা। বর্তমানে আত্মসমালোচনা না করার কারণে পর সমালোচনাতেই আমরা ব্যস্ত। আর এতে সমাজ ও রাষ্ট্রে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে।

আসলে একজন মানুষকে চিন্তা করতে হবে আমি খেয়ে বাঁচতে পারলে আমার আর কাউকে পরোয়া করার প্রয়োজন নেই। সবাইকে ম্যানেজ করে চলতে হলে নিজের সাথে নিজেকেই ট্রিকস করে চলতে হবে। সবার আগে নিজেকে জানতে ও চিনতে হবে। এরপর বাইরের দুনিয়াকে জানার পালা। অন্যের সমালোচনা করা থেকে নিজেকে বিরত রাখলে সমাজও সুন্দর করা সম্ভব হবে। আর মনে রাখবেন রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। একমাত্র আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজের আত্মশুদ্ধি সম্ভব। তাই পরিশুদ্ধ মানুষ হতে হলে আত্মসমালোচনার কোনো বিকল্প নেই।

এস/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • লাইফস্টাইল এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দুর্ঘটনায় অভিনেত্রীর হাতের দুটো হাড় ভেঙে গেছে (ভিডিও)
বন্ধুর স্ত্রীকে শাড়ি উপহার দিয়ে সমালোচনার মুখে ব্যারিস্টার সুমন
সমালোচনার ঝড়, ইউটিউব থেকে সরিয়ে নেওয়া হলো ‘রূপান্তর’
হালান্ডের সমালোচনা করায় কিনকে এক হাত নিলেন গার্দিওলা
X
Fresh