প্রাকৃতিক উপায়েই দূর হবে চোখের অঞ্জলি
আমরা অনেকেই চোখ ওঠা বা চোখের অঞ্জলি সমস্যায় ভুগি। এটি মূলত আইলিড সিস্ট, যার মেডিক্যাল নাম ক্যালাজিয়ন। এই সমস্যা সাধারণত অপরিষ্কার হাতে চোখ ধরা অথবা চোখের পাতার কোনো গ্ল্যান্ডে তেল জমে বন্ধ হয়ে যাবার কারণে হয়ে থাকে। সমস্যাটি খুব বড় কোনো সমস্যা নয়। কিন্তু এর থেকে চোখে প্রচণ্ড ব্যথা হওয়া বা পুঁজ পড়ার যন্ত্রণাও ভোগ করতে হয়।
তবে বারবার যাদের অঞ্জলি হয় তাদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত। এই সমস্যাটি নিজে থেকে সেরে যেতে প্রায় ২ থেকে ৮ সপ্তাহ লাগে। কিন্তু আপনি চাইলে ওষুধ না খেয়েও ঘরোয়া কিছু উপায়ে এই সমস্যার হাত থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারেন। তাহলে জেনে নিন ওষুধ না খেয়ে চোখের অঞ্জলি দূর করার সহজ কিছু উপায়।
- চোখে গরম ভাপ নিলে এই যন্ত্রণা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারেন। গরম ভাপ নেয়ার ফলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া গ্ল্যান্ড খুলতে সহায়তা করবে। এটি ব্যথা ও প্রদাহ দূর করতেও সহায়তা করবে। একটি নরম পরিষ্কার কাপড় গরম পানিতে ভিজিয়ে ভালো করে চিপে নিন। এই গরম ভেজা কাপড়টি আক্রান্ত চোখের ওপরে আলতো চেপে ধরে রাখুন ৫ মিনিট। প্রতিদিন ৩-৪ বার করুন ঠিক না হওয়া পর্যন্ত।
- ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করে অতি সহজে চোখের অঞ্জলি দূর করা সম্ভব। ক্যাস্টর অয়েলে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান যা ব্যাথা ও প্রদাহ দূর করে ।
এর জন্য প্রথমে যেভাবে গরম ভাপ নিয়েছিলেন সেভাবে আক্রান্ত চোখে গরম ভাপ নিন ৫ মিনিট। এরপর একটি তুলোর বলে ক্যাস্টর অয়েল লাগিয়ে নিয়ে চোখে লাগান। এভাবে প্রতিদিন ২ বার করুন সেরে যাওয়া পর্যন্ত। - পেয়ারা পাতায়ও রয়েছে প্রাকৃতিক ঔষধি ক্ষমতা যা দ্রুত চোখের অঞ্জলি সমস্যা সমাধানে কাজ করে। ৫-৬ টি পেয়ারা পাতা ভালো করে ধুয়ে নিন।
- ওভেনে বা একটি গরম পানির পাত্রের ওপরে বাটি রেখে তাতে পাতা রেখে গরম করে নিন পেয়ারা পাতাগুলো।
- গরম পেয়ারা পাতাগুলো একটি পরিষ্কার নরম কাপড়ে রেখে মুড়ে নিন। পাতাসহ এই কাপড় আক্রান্ত স্থানে আলতো চেপে ধরে রাখুন। ঠাণ্ডা হলে আবার পাতা গরম করে নিন। এভাবে দিনে ২ বার করুন । দেখবেন খুব দ্রুত সেরে যাবে এ সমস্যা ।
আরকে/এমকে
মন্তব্য করুন
রং মেশানো ভেজাল তরমুজ চিনবেন যেভাবে
গরমে তরমুজকে বলা যায় এক প্রকার আশীর্বাদ। কারণ এই ফলে পানি থাকে নব্বই ভাগের বেশি। তাই রমজানে শরীরে পানির যে ঘাটতি তৈরি হয় তার অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব তরমুজ খাওয়ার মাধ্যমে। শুধু পানির ঘাটতি পূরণ নয়, তরমুজের বীজকে বলা হয় সুপার ফুড। আর তাই রমজানেও তরমুজের চাহিদা বাড়ে। প্রতিদিনের ইফতারে তরমুজের জুস খেতে পছন্দ করেন রোজাদার মুসলিমরা। তাই এই সময় তরমুজের দামও থাকে চড়া। কিন্তু চড়া দাম দিয়েও অনেকে ভেজাল তরমুজ কিনে নেন। অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় তরমুজে কৃত্রিম রং মিলিয়ে বিক্রি করেন। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও সারাদিন রোজা রেখে ভেজাল তরমুজ খেলে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়। তাই তরমুজ কেনার আগে ভালোভাবে দেখে কেনার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা জানান, গরমে প্রচুর ঘাম হয়। শরীর থেকে পানির পরিমাণ কমে যায়। যা পূরণ করতে পারে তরমুজ। কিন্তু ভেজাল তরমুজ খেলে উপকার পাওয়া যাবে না। এই বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
কী করে চিনবেন আসল তরমুজ আর নকল তরমুজ –জেনে নিন
কৃত্রিম লাল রং মেশানো থাকে
সাধারণ মানুষ লাল তরমুজ খেতে পছন্দ করেন। কারণ লাল তরমুজ খেতে মিষ্টি হয়। তাই তরমুজকে পাকা বা বেশি লাল দেখাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা লাল এরিথ্রোসিন রং মিশিয়ে দেন। যা দেওয়ার পর তরমুজের ভেতরের অংশ লাল টকটকে হয়। এটি বুঝতে একটি তুলো নিয়ে পরীক্ষা করে নিন। আসল তরমুজের লাল অংশে তুলো ধীরে ধীরে ঘষুন। কোনও রং উঠবে না। কিন্তু নকল তরমুজে তুলো ঘষলে তা থেকে লাল রং উঠে আসবে।
স্বাদ কম হবে
ভেজাল তরমুজের রং যতই লাল হোক কোন স্বাদ হবে না। অন্যদিকে আসল তরমুজের স্বাদ থাকবে। এটি খাওয়ার পর মুখে তরমুজের আসল স্বাদ পাওয়া যাবে। তাই কেনার আগে একটু টুকরো খেয়ে দেখুন।
দ্রুত পচে যাবে
তরমুজ কিনে এনে সঙ্গে সঙ্গে না খেয়ে রেখে দিন। দুই একদিন পর খাবেন। এতে যদি তরমুজ পঁচে যায় তবে বুঝে নিবেন এটি ভেজাল ছিল। ভেজাল রং মেশানো ছিল বলে তা দ্রুত পচে গেছে। অন্যদিকে আসল তরমুজ দ্রুত পঁচবে না। বরং এর স্বাদও ঠিক থাকবে।
পানিতে দিয়ে দেখুন
বাজার থেকে তরমুজ কেনার পর বাড়িতে এনেই খাওয়া শুরু করবেন না। আগে পরখ করে দেখুন। তরমুজে রং মেশানো আছে কিনা তা বুঝতে একটি কড়াইয়ে কিছুটা পানি গরম করে নিন। এবার এতে এক টুকরো তরমুজ দিয়ে দিন। দ্রুত পানি লাল হয়ে গেলে বুঝবেন তরমুজে রং মেশানো ছিল। ভালো তরমুজে কোনো রং উঠবে না।
রমজানে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি কমাবেন যেভাবে
ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। ভিটামিন ডি’র প্রধান কাজ শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ করা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ভিটামিন ডি’র ঘাটতি পূরণে সবচেয়ে সহজ আর দ্রুত কাজ করে সূর্যস্নান। নিয়মিত বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে ১৫ মিনিট সূর্যস্নান করা গেলে শরীরের ৭০ ভাগ ভিটামিন ডি’র চাহিদাই পূরণ হয়ে যায়।
শরীরে যদি ভিটামিন ডি’র ঘাটতি থাকে তাহলে আস্তে আস্তে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। যাকে অস্টিওপরোসিস রোগও বলা হয়। পবিত্র মাহে রমজান মাস চলছে, এ মাসে সেহরির পর লম্বা সময় পর্যন্ত ঘুমাতে পছন্দ করেন অনেকেই। ফলে শরীরে সকালের রোদ না লাগায় ভিটামিন ডি’র ঘাটতি থেকে যায়। পাশাপাশি এ সময় সারাদিনের খাবার ও পানীয় গ্রহণ বন্ধ থাকায়, খাদ্যাভাসও পরিবর্তন হয়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক রমজানে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি পূরণের উপায়গুলো-
১. ভিটামিন-ডি গ্রহণ: আপনার শরীরে যদি সূর্যের আলো লাগানো সম্ভব না হয় বা ডিম খেতে না পারেন তাহলে ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। ভিটামিন ডি সম্পূরকগুলো বিভিন্নভাবে পাওয়া যায়, যেমন ভিটামিন ডি-২ এবং ডি-৩ ট্যাবলেট বা পাউডার। এগুলো মুখে খেলে শীতকালে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা বাড়বে। তবে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
২. শরীরে রোদ লাগানো: খুব পুরাতন মনে হলেও পর্যাপ্ত ভিটামিন-ডি গ্রহণের সর্বোত্তম উপায় শরীরে সূর্যের আলো লাগানো। যাকে "সানশাইন ভিটামিন" হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। ভিটামিন-ডি সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসার পর ত্বকে সংশ্লেষিত হয়। সুতরাং, রোদে বের হওয়া ভিটামিন-ডি এর মাত্রা বাড়ানোর সবচেয়ে প্রাকৃতিক এবং কার্যকর উপায়গুলোর মধ্যে একটি। যখন ত্বক সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসে, তখন এটি ভিটামিন-ডি৩ সংশ্লেষিত করে। ১০ থেক ৩০ মিনিট রোদে কাটালে আপনার দেহে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি অনেকটায় কমে যাবে।
৩. ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ: ভিটামিন ডি বাড়ানোর অন্যতম ভালো উপায় হলো ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ। ভিটামিন ডি’র চমৎকার প্রাকৃতিক উৎস হলো- স্যামন, ম্যাকেরেল ও টুনার মতো চর্বিযুক্ত মাছ। এছাড়াও ফোর্টিফাইড দুধ, কমলালেবুর রস এবং দইয়ের মতো শক্তিশালী খাবারও আপনার দেহে ভিটামিন ডি’র চাহিদা পূরণ করতে পারে। তাই খাদ্য তালিকায় মাছের তেল, দুগ্ধজাত পণ্য এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ বাড়ালে তা শরীরের ভিটামিন ডি’র ঘাটতি পূরণ করে।
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের মতে, ভিটামিন ডি-এর সেরা খাদ্য উৎস হলো স্যামন, ম্যাকেরেল এবং সার্ডিনসহ তৈলাক্ত মাছ। অন্যান্য উৎসগুলোর মধ্যে রয়েছে ডিমের কুসুম, লাল মাংস ও কলিজা।
নিয়মিত ডিমের কুসুম খেলে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি কমে যাবে। ডিম সিদ্ধ বা অন্য যে কোনো উপায়ে খেলেও তা ভিটামিন-ডি বাড়াতে সাহায্য করবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
ইফতারে রাখুন চিড়ার ডেজার্ট
সারাদিন পর যেহেতু ইফতার খাওয়া হয়, তাই ভুল খাবারে পেট না ভরিয়ে ভালো ও স্বাস্থ্যকর খাবার রাখা উচিত এ সময়। তাহলে শরীর দ্রুত অ্যানার্জিও পাবে আবার সুস্থও থাকবেন। আর সারাদিন না খেয়ে থাকার পর ইফতারে একটু ঠান্ডা ডেজার্ট খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। তবে স্বাস্থ্যের দিকেও তো খেয়াল রাখতে হবে।
এজন্য ইফতারে রাখতে পারেন প্রাণ জুড়ানো চিড়ার ডেজার্ট। এই খাবার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
জেনে নিন কীভাবে তৈরি করবেন-
উপকরণ:
১. চিড়া আধা কাপ
২. গুঁড়া দুধ আধা কাপ
৩. চিনি স্বাদমতো
৪. বেদানা পরিমাণমতো
৫. কলা পরিমাণমতো ও
৬. জেলো আধা কাপ।
পদ্ধতি:
প্রথমে চিড়া পানি দিয়ে ২-৩ বার ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর চিড়া ৫-৬ মিনিটের মতো রেখে দিন। এরই মধ্যে চিড়া ফুলে উঠবে অনেকটাই। তারপর চুলায় একটা প্যান বসিয়ে তাতে ২ কাপ পানি দিন। এর মধ্যে গুঁড়া দুধ ও পরিমাণমতো চিনি মিশিয়ে নিন। তারপর চুলার আঁচ মিডিয়ামে রেখে ৩-৪ মিনিট জ্বাল করে নিন দুধ।
এরপর নামিয়ে দুধ একেবারে ঠান্ডা করে নিতে হবে। এবার ২-৩টি ছোট ছোট বাটি বা কাপ নিয়ে তার মধ্যে চিড়া, জ্বালানো দুধ, ফল ও জেলো মিশিয়ে নিন। আপনি চাইলে পছন্দসই অন্যান্য ফলও মেশতে পারেন এই ডেজার্টে। এরপর ফ্রিজের নরমালে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন।
ইফতারের আগে বের করে পরিবেশন করুন ঠান্ডা ঠান্ডা চিড়ার ডেজার্ট।
‘স্লিপ ডিভোর্স’ দাম্পত্য জীবনে কার্যকর কি না, জানালেন মনোবিদরা
বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া এবং নিশ্বাস নেওয়ার মত ঘুম আমাদের জীবনে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। তবে নানা কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এই ব্যাঘাত যেন না ঘটে সেজন্য অনেক দম্পতি বিয়ের পর আলাদা ঘুমান। এটাই ‘স্লিপ ডিভোর্স’। কিন্তু কেন জরুরি এই ঘুম-বিচ্ছেদ, এর ফলে কী কোনো উপকার আছে কি না জেনে নেওয়া যাক।
ঘুমের ‘মান’ বাড়ায়: জাপানিদের দেখা যায় ছোট ছোট বিছানায় ঘুমায়। বলা চলে একা ঘুমানো তাদের ঐতিহ্য। ঐতিহাসিক আর সাংস্কৃতিকভাবেই জাপানিরা সাধারণত একা ঘুমান। কোনো কিছুর জন্যই তারা ঘুমের মান বিসর্জন দিতে প্রস্তুত নন। কেননা সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম খুবই জরুরি।
কাস্টমাইজড স্পেস: একেকজনের ঘুমের অভ্যাস একেক রকম। কেউ আলো জ্বালিয়ে ঘুমান, কেউ আলো মোটেই সহ্য করতে পারে না। কেউ এসি ছেড়ে ঠান্ডায় কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমায়, কারও কারও আবার এসি ‘সহ্য’ হয় না। কারও কারও ঘুম খুবই পাতলা। ফলে নিজের মতো করে ঘুমের একটা পরিবেশ তৈরি করেন।
সন্তানের জন্য: শিশুর জন্য অন্তত দুই বছর পর্যন্ত মায়ের কাছে ঘুমানো খুবই জরুরি। বুকের দুধ খাওয়ার পাশাপাশি মায়ের কোল, মায়ের পাশে ঘুমানো, মায়ের ‘ওম’-এ থাকা খুবই জরুরি। নানা কারণে বারবার বাবু ঘুম থেকে উঠে যাওয়ায় জীবনসঙ্গীর ঘুমের অসুবিধার কারণেও অনেক সময় স্লিপ ডিভোর্স হয়। জীবনসঙ্গী আলাদা ঘুমান।
তবে নতুন মায়ের এমন সংকটের সময় শিশুর বাবার উচিত দায়িত্ব যতটা সম্ভব ভাগাভাগি করে নেওয়া। ন্যাপি, কাঁথা বদলে দেয়া। কোলে নিয়ে ঘুরে ঘুরে ঘুম পাড়ানো। তবে একেবারেই যদি তিনি কোনো সাহায্য না করতে পারেন, তাহলে আলাদা ঘুমানোই সমীচীন।
সার্বিক সুস্থতা, স্বস্তি : অনেক সময় স্বামী-স্ত্রী আলাদা ঘুমানোর ফলে তাদের ঘুম ভালো হওয়া, নিজেদের স্বাস্থ্য ভালো থাকা, সারা দিন এনার্জি নিয়ে পার করা থেকে শুরু করে নিজেদের সম্পর্কে ভারসাম্য রাখাও সহজ হয়।
তবে দাম্পত্ব জীবন সুখী করতে হলে জীবনসঙ্গীকে নিয়ে একসঙ্গে আরামে ঘুমানো সবচেয়ে ভালো। সম্পর্কের গভীরতার জন্য শারীরিকভাবে কাছাকাছি থাকার কোনো বিকল্প নেই।
ঘুমবিশেষজ্ঞ ও মনোবিদ ডা. ওয়েন্ডি ট্রক্সেল একই বিষয়ে সিএনএনের একটা প্রতিবেদনে বলেন, ‘জীবনসঙ্গীর সঙ্গে ঘুমানো দুজনকেই সম্পর্কে গভীর নিরাপত্তার অনুভূতি দেয়। এ ছাড়া ঘুমের আগে আলিঙ্গন করা, যৌন সম্পর্ক বা হালকা গল্প করা, চুমু খাওয়া-এসবের ফলে হ্যাপি হরমোনের নিঃসরণ হয়। আর তা অনেকক্ষণ পর্যন্ত শরীরে থাকে। ফলে ঘুমের মানও ভালো হয়।’
এই মনোবিদ আরও জানিয়েছেন, আলাদা ঘুমানোর ফলে সম্পর্কে ছন্দপতন ঘটে। ভুল-বোঝাবুঝির আশঙ্কা তৈরি হয় বেশি। এমনকি একে অপরকে অকারণে সন্দেহ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় সহজেই। তাই কী কারণে আলাদা ঘুমানোর প্রয়োজন, সেটা আগে সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক। আলাদা ঘুমানোটা এরপরের ধাপের বিকল্প।
৭ ফুট লম্বা চুলের অধিকারী কে এই আনিকা?
নিজের থেকে বড় চুলের অধিকারী বাংলোদেশের মেয়ে শামিমা আক্তার আনিকার সুনাম দেশ পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। আনিকা পড়াশেনা করেছেন অস্ট্রেলিয়ায়। বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়াতে আইটি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর পড়াশোনা শেষ করা আনিকার দাবি, বাংলাদেশের সবথেকে বড় চুলের অধিকারিনী তিনি।
আনিকা লম্বায় ৫ ফুট ২ ইঞ্চি হলেও তার চুল ৭ ফুট। সেজন্য দেশের সবচেয়ে লম্বা চুলের নারী হিসেবে নিজেকে দাবি করেন তিনি।
এমন বড় চুল হওয়ার পেছনের কারণ হিসেবে গণমাধ্যমকে আনিকা বলেন, আমার মা-খালাদেরও এমন পা ছুঁই ছুঁই চুল রয়েছে। তারাও আমার চুল দেখে নিজেদের স্মৃতিচারণ করেন।
বড় চুল সামলানোর প্রসঙ্গে আনিকা বলেন, অনেকবার ভেবেছি চুল কেটে ফেলবো। কারণ আমার চুলের ভারে প্রায়ই ঘাড় ব্যথা করে। তাই চিকিৎসকরাও পরামর্শ দিয়েছিলেন চুল কাটতে, তবে আমি এই সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। অজানা এক মায়াতে আটকে চুল সযত্নেই রেখে দিয়েছি।
অস্ট্রেলিয়ার অনেকেই আনিকার কাছে জানতে চান তিনি কোন দেশের বাসিন্দা। এতো বড় চুল কীভাবে হলো। তাদেরকেও আনিকা বাংলাদেশ সম্পর্কে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন।
আনিকা আরও বলেন, আমার চুল নিয়ে একটি স্বপ্ন আছে। আমি এখনও আমার জীবনসঙ্গীর দেখা পাইনি। পেলে তাকে সারপ্রাইজ দেবো। তারপর হয়তোবা চুল ছোট করার কথা চিন্তা করতে পারি।
রোজায় পান করবেন যে ধরনের শরবত ও পানীয়
রোজা রেখে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। যেহেতু রোজায় লম্বা সময় ধরে পানি না খেয়ে থাকা হয়, সেহেতু পর্যাপ্ত পানি পান না করলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পানি ও পানীয় গ্রহণের পাশাপাশি পানি জাতীয় সবজিও খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। এতে সারাদিন শরীর হাইড্রেটেড থাকবে।
ইফতারে যে ধরনের পানীয় শরীরের জন্য উপকারী :
পানি : স্বাস্থ্যকর পানীয়র মধ্যে প্রথমেই থাকবে সাদা পানি। চিনি, লবণ ছাড়া শুধু সাদা পানি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসম্মত পানীয়। ইফতারের শুরুতেই সাদা পানি খান।
আখের গুড়ের শরবত : পানির সঙ্গে আখের গুড় আর একটু লবণ মিশিয়ে শরবত তৈরি করা হলে এটি স্যালাইনের কাজ করে এবং রক্তের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স করতে সাহায্য করে।
লেবু পানি : পানি ও লেবুর সঙ্গে এক চিমটি পরিমাণ লবণ, বিট লবণ বা পিংক সল্ট মিশিয়ে পান করতে পারেন। চিনি দেওয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে, চিনি শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই লেবু পানিও চমৎকারভাবে শরীরের ইলোকট্রোলাইট ব্যালান্স করতে সাহায্য করবে। সারাদিনে শরীরে যে ভিটামিন সি’র ঘাটতি তৈরি হয়, সেটিও পূরণ করবে এটি। ভিটামিন সির চাহিদা পূরণ হলে রোজার মাসে ঠান্ডা, জ্বর, কাশি হওয়ার ঝুঁকি একটু কমে যাবে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে।
ফলের রস: বাসায় যেকোনো সতেজ ফলের জুস তৈরি করে খেতে পারেন। ফলের রস অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ এবং ভিটামিন ও মিনারেলসে ভরপুর। এই ফলের রসের মধ্যে ইসবগুল, তোকমা, চিয়াসিড যোগ করে খাওয়া হলে তখন সেটি ফাইবার সমৃদ্ধ পানীয় হবে। এ ধরনের পানীয় শরীরকে দীর্ঘক্ষণ হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।
ডাবের পানি: রোজার সময় দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থেকে কাজ করার ফলে ঘাম হয়। ফলে ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালান্স হয়। ডাবের পানি প্রাকৃতিকভাবে মিনারেলস সমৃদ্ধ পানীয়। ইফতারে এক গ্লাস ডাবের পানি খেলে শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স হবে।
মিল্কশেক : দুধ দিয়ে তৈরি করা যেকোনো শেক ইফতারে খেতে পারেন। এতে মেশাতে পারেন খেজুর, বাদাম, পেঁপে বা পছন্দের যেকোনো ফল।
গাজরের জুস: বিশেষ করে বাচ্চা ও বয়স্ক যারা রোজা রাখেন তাদের জন্য উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ পানীয় গাজরের জুস। গাজরের জুস বা স্মুদিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ থাকে।হারবাল টি: ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত এক বা দুই কাপ হারবাল টি খেতে পারেন। গ্রিন টি, তুলসি টি ইত্যাদি হতে পারে। এগুলো খাবার হজম করতে সাহায্য করবে। ফ্যাট জাতীয় খাবার বেশি গ্রহণ করা হলে বিএমআর বাড়িয়ে সেই ফ্যাটকে দ্রুত বার্ন করতে সাহায্য করে এগুলো।
আপেলের জুস: আপেল ভালোভাবে পরিষ্কার করে কেটে নিন। খোসা ও বিচি বাদ দেবেন। এবার আপেলের টুকরাগুলো ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ড হয়ে গেলে ছেঁকে নিন যাতে শরবত পরিষ্কার দেখা যায়। পানি ও পরিমাণমতো চিনি মিশিয়ে আধা ঘণ্টার মতো ফ্রিজে রেখে দিন। এরপর ফ্রিজ থেকে বের করে বরফ কুচি ও পুদিনা পাতা দিয়ে পরিবেশন করুন।
ডালিমের জুস: ডালিমের খোসা ছাড়িয়ে রসালো বিচিগুলো বের করে নিন। এরপর ব্লেন্ডারে দিয়ে রস বের করে নিন। এতে কিছু পানি এবং লেবুর রস দিয়ে মিশ্রিত করে নিন। রসে পরিমাণ মতো চিনি ও লবণ দিয়ে নেড়ে নিন। এরপর একটি জগে ছেঁকে নিয়ে ঠাণ্ডা করার জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। ইফতারের সময় বের করে গ্লাসে ঢেলে পরিবেশন করুন।
বেলের শরবত: যাদের শরীর বেশি ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয় তারা বেলের শরবত খাবেন। এটি খুবই উপকারী পানীয়। বেল যদি মিষ্টি না হয় তখন প্রয়োজনে চিনির বিকল্প উপাদান মিছরি, যষ্টিমধু, খেজুরের পাউডার, গুড় ইত্যাদি দিয়ে শরবত তৈরি করা যেতে পারে।
এসব পানীয়তে চিনির বিকল্প উপাদান ব্যবহার করতে হবে। তাহলেই পানীয় স্বাস্থ্যকর হবে।
যে কারণে ইফতারে রাখবেন স্বাস্থ্যকর দই-চিড়া
সারাদিন রোজার পর ক্লান্ত হয়ে পড়ে শরীর। প্রয়োজন একটু সতেজতা। আপনার শরীরে সেই সতেজতা এনে দিতে পারে দই চিড়া। একই সঙ্গে বাড়বে হজম প্রক্রিয়া, দূর হবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। চিড়া কার্বোহাইড্রেটের অন্যতম উৎস। প্রোটিন, খাদ্য আঁশ, জিংক, আয়রনের উৎস। এ ছাড়া এতে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। সারাদিন রোজা রাখার পর আমাদের শরীরের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ শক্তি সরবরাহ করতে পারে এই চিড়া। সাদা চিড়ার পরিবর্তে লাল চিড়া খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ইফতারে মিষ্টি দইয়ের চেয়ে টক দই বেশি উপকারী। ইফতারে চিড়া-গুড় কিংবা দই-চিড়াও খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই। চিড়া ভিজিয়ে তাতে চিনি, গুড় কিংবা দই মিশিয়ে খাওয়া হয়। চিড়া আমাদের পেট ঠান্ডা করে, পানির অভাব পূরণ করে এবং একইসঙ্গে ক্ষুধা মেটায়।
পুষ্টিবিদদের মতে, স্বাস্থ্যের অবস্থা ও বয়সের ওপর ভিত্তি করে পরিবারের সবার জন্য স্বাস্থ্যকর, ভিটামিন ও মিনারেলসমৃদ্ধ ইফতার হওয়া উচিত। যা শারীরিক শক্তি জোগাবে, কর্মচঞ্চল রাখবে, প্রোটিন, শর্করাসহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করবে। শরীরের পানিশূন্যতা পূরণ করবে, ক্লান্তি ভাব দূর করতে কাজ করবে তেমনই একটি খাবার দই চিড়া।
পুষ্টিবিদরা জানান, চিড়ায় পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকার জন্য কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা অনেক। সিলিয়াক ডিজিজের রোগীদের জন্যও চিড়া খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। চিড়া আমাদের পেট ঠান্ডা করে, পানির অভাব পূরণ করে এবং একইসঙ্গে ক্ষুধা মেটায়। চিড়ায় আঁশের পরিমাণ অনেক কম থাকে, যা ডায়রিয়া, ক্রনস ডিজিজ, আলসারেটিভ কোলাইটিস, অন্ত্রের প্রদাহ এবং ডাইভারটিকুলাইসিস রোগ প্রতিরোধে এর উপকারিতা অনেক। জেনে নিতে পারেন ইফতারে দই চিড়া খাওয়ার দারুণ এই রেসিপি।
দই চিড়া তৈরিতে যা যা লাগবে-
টক দই (২ কাপ), চিড়া (১/২ কাপ), পাকা কলা (স্কয়ার করে কাটা ১টি), চিনি (প্রয়োজন মতো), লবণ (প্রয়োজন মতো), এলাচি গুঁড়া (১/৪ চা চামচ), কিসমিস (১ টেবিল চামচ)।
যেভাবে তৈরি করবেন-
প্রথমে চিড়া ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এরপর বাটিতে টকদই, চিনি ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে ফেটে নিতে হবে। ফেটানো দইয়ে চিড়া মেখে ফ্রিজে রাখুন। এক ঘণ্টা পর ফ্রিজ থেকে বের করে কলা, এলাচি গুঁড়া ও কিশমিশ ভালোভাবে মিশিয়ে পরিবেশন করুন।