প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ট্যাক্স চালু করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য
বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নতুনভাবে ডিজিটাল ট্যাক্স আরোপের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাজ্য। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় আয়ের ওপর এই কর নীতি ২০২০ সালের মধ্যে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। শিল্পোন্নত দেশটির এমন পদক্ষেপ আধুনিক যুগে কর ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
যুক্তরাজ্য ছাড়া আরও প্রায় ১২টি দেশ নতুন কর নীতি চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে। মূলত নিজেদের রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যেই এ ধরনের পরিকল্পনা করছে তারা। চলতি মাসে স্পেন সরকারও একই উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এটা চালু করতে দেশটির সংসদের অনুমোদন লাগবে।
মুনাফার চেয়ে বরং মোট আয়ের ওপর কর চালুর জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত বেশ কয়েকটি দেশ। এসব প্রস্তাবের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্তত আরও ৭টি দেশ এমন উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। এছাড়া বিদেশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আরও বেশি কর আদায় করতে এমন পরিকল্পনা করছে মেক্সিকো, চিলিসহ অন্য ল্যাটিন আমেরিকান দেশগুলো।
এদিকে নতুন এই কর নীতির বিরোধিতা করেছে বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। গুগল, ফেসবুকের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী ওয়াশিংটনভিত্তিক লবি গ্রুপ ইনফরমেশন টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি কাউন্সিল বলছে, ডিজিটাল ট্যাক্স চালু হলে যুক্তরাজ্যে বিনিয়োগ শিথিল হয়ে পড়বে এবং সব ধরনের ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
নতুন কর নীতি সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বলেন, বড় এবং লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রেই এই নীতি প্রযোজ্য হবে। এক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে ৫০ কোটি পাউন্ড আয় করা প্রতিষ্ঠানগুলো বড় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হবে।
নতুন কর নীতির আওতায় কোনও প্রতিষ্ঠানকে মোট রাজস্বের ২ শতাংশের মতো কর দিতে হতে পারে। এতে যুক্তরাজ্যের বার্ষিক রাজস্ব আয় বাড়বে ৪০ কোটি পাউন্ড।
অবশ্য এ ধরনের কর নীতির ক্ষেত্রে বৈশ্বিক চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান সম্ভব বলে মনে করছেন হ্যামন্ড। কিন্তু এই কার্যক্রম খুব ধীর গতিতে এগোচ্ছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড জানান, বৈশ্বিক একটি সমাধানের পরই কেবল এ ধরনের কর ব্যবস্থা চালু হবে। তবে এর জন্য সারাজীবন আলোচনা চালিয়ে যেতে পারবেন না বলেও জানিয়েছেন হ্যামন্ড।
বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো কী পরিমাণ কর দেয় তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন বিক্রয়ের প্লাটফর্ম অ্যামাজনের যুক্তরাজ্য শাখাটি ২০১৭ সালে ১৯৮ কোটি পাউন্ড রাজস্ব আয় করে। যেখানে তাদের মুনাফা হয় ৭ কোটি ২৩ লাখ পাউন্ডেরও বেশি। কিন্তু তারা কর দেয় মাত্র ১৭ লাখ পাউন্ড। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা দেখা যায়। এ কারণেই নতুন কর ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে যুক্তরাজ্য।
ডি/এমকে
মন্তব্য করুন