• ঢাকা রোববার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১
logo

বন্যায় বিপদ এড়াতে প্রস্তুতি ও করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ২৪ আগস্ট ২০২৪, ১৪:৩০
ছবি: সংগৃহীত

টানা বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানিতে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় কবলিত হয়েছে দেশের ১১ জেলা। তলিয়ে গেছে দেশের নিম্নাঞ্চলের অসংখ্য বসতবাড়ি। অসংখ্য মানুষের দিন কাটছে পানির নিচে। বন্যা হচ্ছে আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই দুর্যোগ কিছু অঞ্চলের জন্য প্রতিবছরই অবধারিত। কিন্তু এই বছর বন্যার চিত্র ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশের একাংশ তলিয়ে গেছে পানির নিচে। অনাহার আর বিশুদ্ধ পানির অভাবে আঁকড়ে ধরছে রোগবালাইও। বন্যা পরিস্থিতি সবার জন্যই ভীতিকর হলেও এ সময় সবার শান্ত থেকে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বন্যা পরবর্তী সময়ে নিজেকে ও পরিবারকে বাঁচাতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোতে কিছু প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। যা স্বাস্থ্য সুরক্ষা আর জীবন বাঁচাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্যার সময় এবং বন্যা পরবর্তী সময়ে আমাদের করণীয় কিছু বিষয় নিয়ে জানুন এই আয়োজনে।

বন্যার সময় করণীয়—

বন্যার পানি বাড়িতে প্রবেশ করলেই বাড়ির শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী, প্রতিবন্ধীদের দ্রুত বন্যামুক্ত নিরাপদ স্থানে কিংবা আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে রেখে আসুন।

দলিল, সনদপত্র, লাইসেন্সের মতো প্রয়োজনীয় ও জরুরি কাগজপত্র একাধিক পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে বন্যামুক্ত এলাকায় কোনো আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত ব্যক্তির কাছে রাখতে পারেন। বাড়ির উঁচু স্থানেও এসব কাগজ রাখা নিরাপদ নয়। কারণ, যেকোনো সময় বন্যা বড় আকার বাড়তে পারে। পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে পারে।

বাড়িতে উঁচু স্থান থাকলে দামি এবং পানিতে নষ্ট হয়ে যাবে এমন প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সেখানে দ্রুত সরিতে রাখুন। উঁচু স্থান না থাকলে একটি উঁচু মাচা তৈরি করতে পারেন। চাইলে বন্যামুক্ত এলাকায় সরিয়ে নিতে পারেন।

বন্যা মোকাবিলায় সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য ব্যবহার করা। কারণ, বন্যায় অধিকাংশ রোগই পানি ও খাদ্যবাহিত। তাই বিশুদ্ধ পানি পান করা জরুরি। পানি ছেঁকে কমপক্ষে আধাঘণ্টা ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পান করুন। এই ব্যবস্থা না থাকলে ফিটকিরি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়েও পানি বিশুদ্ধ করা যায়।

এ সময় নোংরা পানি, আবহাওয়া, টানা বৃষ্টির কারণে নানা স্বাস্থ্যসমস্যা দেখা দেয়। সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় ডায়রিয়ার প্রকোপ। হাতের কাছে খাবার স্যালাইন রাখুন। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য স্যাভলন ও ব্যান্ডেজ রাখতে পারেন।

বন্যার পানি ধেয়ে আসলে ঘরের সকল বিদ্যুতের সুইচ এবং মেইন সুইচ বন্ধ করে দিন। এতে বিদ্যুৎ ঘটিত সাম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে।

দুর্যোগের মধ্যেই রাত কাটাতে হবে। তাই হাতের নাগালে দেশলাই, মোমবাতি, হারিকেন, টর্চ লাইট রাখুন।

বন্যার সময় মনোবল শক্ত রাখুন। নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান। নিরাপদে থাকুন। জিনিসপত্রের কথা ভেবে ঘরে থেকে যাবেন না। হঠাৎ পানির স্রোত বাড়লে বিপদে পড়বেন।

বন্যার সময় বীজতলা গেলে নানানভাবে চারা উৎপাদনের ব্যবস্থা জানুন। কলাগাছের ভেলা বানিয়ে সেই ভেলার ওপর কাদামাটির প্রলেপ দিয়ে বীজ ছিটিয়ে দিন। বীজতলায় চারা থাকলে তা মাটিসহ তুলে উঁচু স্থানে নিয়ে যান।

বন্যার শঙ্কা থাকলে গবাদিপশুকে টিকা দিয়ে নিতে হবে। বন্যায় যদি কোনো গবাদিপশুর প্রাণহানি হয়, তবে তাকে পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া যাবে না। মাটিতে পুঁতে ফেলুন।

বন্যা পরবর্তী সময়ে করণীয়—

বন্যার চাইতে বন্যা পরবর্তী সময়টাই সবচেয়ে কঠিন সময়। তাই সে সময়ে কর্তৃপক্ষের কথা শুনুন। তারা অনুমতি দিলেই বা নিরাপদ বলার পরেই বাড়ি ফিরবেন।

একটি সারভাইভাল কিট প্যাক করুন। সেখানে কমপক্ষে তিন দিনের জন্য পর্যাপ্ত খাবার ও পানি নিন। প্রত্যেকের জন্য একটি করে পোশাক, প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন।

জরুরি তথ্যের জন্য রেডিও, স্থানীয় পরিবর্তনকারী সিস্টেম বা সরকারী নির্দেশাবলী শুনুন।

বন্যা পরবর্তী সময়ে বন্যার পানিতে হাঁটবেন না, সাঁতার কাটবেন না বা গাড়ি চালাবেন না। কারণ ৬ ইঞ্চি পানির স্তরেও আপনি নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারেন।

ভেজা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি থেকে দূরে থাকুন, এতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে।

বাড়িতে ঢোকার আগে দেখে নিন কোনো কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে কি না।

বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র পরিদর্শন করার আগে পাওয়ার চালু করবেন না।

সাপ ও বিভিন্ন প্রাণী আপনার বাড়িতে থাকতে পারে, তাই সতর্ক থাকুন। সম্ভব হলে গ্লাভস ও বুট পরুন।

বন্যা-দূষিত প্রতিটি ঘর পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত ও শুকিয়ে নিন।

আপনার যদি কোনো বীমা থাকে তাহলে নিশ্চিত করুন যে বীমা দাবির নথি হিসেবে ছবি বা ভিডিও আছে কি না।

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • লাইফস্টাইল এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ভাঙ্গুড়ায় আ.লীগের হামলায় বিএনপির ২৫ কর্মী আহত, আটক ৪
আগোরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, ছুটি ২ দিন
ময়মনসিংহে কমছে বন্যার পানি, ৩৫৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষয়ক্ষতি
নেত্রকোণায় বন্যার পানি কমছে, বাড়ছে দুর্ভোগ-দুশ্চিন্তা