দোকানের মতো তুলতুলে-স্বুসাদু রসগোল্লার রেসিপি
মিষ্টির সঙ্গে বাঙালির প্রেম যুগ যুগ ধরে সকলের জানা। মিষ্টি পছন্দ করেন না এরকম বাঙালি খুঁজে পাওয়া দায়। ভরপেট খাওয়ার পর শেষ পাতে মিষ্টি ছাড়া বাঙালির যেন চলেই না। দোকান ছাড়া, বাড়িতেও ১৫ মিনিটেই তৈরি করে নিতে পারেন স্পঞ্জ রসগোল্লা। জানুন, কীভাবে সহজে বাড়িতেই বানাবেন এই সুস্বাদু রসগোল্লা। রইল রেসিপি।
উপকরণ—
দুধ - ১.৮ লিটার
চিনি- ৩৫০ গ্রাম
নলেন গুড়- ২৫০ গ্রাম (যদি গুড়ের পছন্দ হয়)
সুজি- ১ টেবিল চামচ
গুঁড়ো চিনি- হাফ কাপ
পাতিলেবু- ১ টি
পরিষ্কার সুতির কাপড়
প্রণালী—
- প্রথমে দুধ খুব ঘন করে ফুটিয়ে নিন।
- দুধ ঘন হয়ে এলে লেবুর রস দিয়ে ছানা তৈরি করে নিন।
- এবার সুতির কাপড়ে ছানাটি বেধে পানি ঝরিয়ে নিন।
- এরপর খুব ভালো করে ছানাটি মেখে একটি ছড়ানো পাত্রে রাখুন।
- কিছুক্ষণ পর ছানার মধ্যে সুজি ও গুঁড়ো চিনি মিশিয়ে ৫-৭ মিনিট ভালো করে মাখতে থাকুন। খেয়াল রাখতে হবে, মাখাটি যেন একেবারে মসৃণ হয়।
- এবার সেখান থেকে ছোট ছোট আকারে ছানার বল তৈরি করে সরিয়ে রাখুন।
- অন্য একটি বড় পাত্রে পানি ফুটিয়ে, সেখানে গুড় অথবা চিনি দিয়ে ফোটাতে থাকুন। খুব ভালো করে ফুটে গেলে, ছানার বলগুলো দিয়ে দিন এবং ৯-১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন।
- এরপর আঁচ কমিয়ে ৩০ মিনিটের মতো রেখে দিন।
- আপনার বাড়িতে বানানো সুস্বাদু নলেন গুড়ের রসগোল্লা এবার তৈরি।
- ঠান্ডা হলে সুন্দর করে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
মন্তব্য করুন
বন্যায় বিপদ এড়াতে প্রস্তুতি ও করণীয়
টানা বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানিতে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় কবলিত হয়েছে দেশের ১১ জেলা। তলিয়ে গেছে দেশের নিম্নাঞ্চলের অসংখ্য বসতবাড়ি। অসংখ্য মানুষের দিন কাটছে পানির নিচে। বন্যা হচ্ছে আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই দুর্যোগ কিছু অঞ্চলের জন্য প্রতিবছরই অবধারিত। কিন্তু এই বছর বন্যার চিত্র ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশের একাংশ তলিয়ে গেছে পানির নিচে। অনাহার আর বিশুদ্ধ পানির অভাবে আঁকড়ে ধরছে রোগবালাইও। বন্যা পরিস্থিতি সবার জন্যই ভীতিকর হলেও এ সময় সবার শান্ত থেকে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বন্যা পরবর্তী সময়ে নিজেকে ও পরিবারকে বাঁচাতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোতে কিছু প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। যা স্বাস্থ্য সুরক্ষা আর জীবন বাঁচাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্যার সময় এবং বন্যা পরবর্তী সময়ে আমাদের করণীয় কিছু বিষয় নিয়ে জানুন এই আয়োজনে।
বন্যার সময় করণীয়—
বন্যার পানি বাড়িতে প্রবেশ করলেই বাড়ির শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী, প্রতিবন্ধীদের দ্রুত বন্যামুক্ত নিরাপদ স্থানে কিংবা আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে রেখে আসুন।
দলিল, সনদপত্র, লাইসেন্সের মতো প্রয়োজনীয় ও জরুরি কাগজপত্র একাধিক পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে বন্যামুক্ত এলাকায় কোনো আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত ব্যক্তির কাছে রাখতে পারেন। বাড়ির উঁচু স্থানেও এসব কাগজ রাখা নিরাপদ নয়। কারণ, যেকোনো সময় বন্যা বড় আকার বাড়তে পারে। পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
বাড়িতে উঁচু স্থান থাকলে দামি এবং পানিতে নষ্ট হয়ে যাবে এমন প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সেখানে দ্রুত সরিতে রাখুন। উঁচু স্থান না থাকলে একটি উঁচু মাচা তৈরি করতে পারেন। চাইলে বন্যামুক্ত এলাকায় সরিয়ে নিতে পারেন।
বন্যা মোকাবিলায় সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য ব্যবহার করা। কারণ, বন্যায় অধিকাংশ রোগই পানি ও খাদ্যবাহিত। তাই বিশুদ্ধ পানি পান করা জরুরি। পানি ছেঁকে কমপক্ষে আধাঘণ্টা ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পান করুন। এই ব্যবস্থা না থাকলে ফিটকিরি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়েও পানি বিশুদ্ধ করা যায়।
এ সময় নোংরা পানি, আবহাওয়া, টানা বৃষ্টির কারণে নানা স্বাস্থ্যসমস্যা দেখা দেয়। সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় ডায়রিয়ার প্রকোপ। হাতের কাছে খাবার স্যালাইন রাখুন। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য স্যাভলন ও ব্যান্ডেজ রাখতে পারেন।
বন্যার পানি ধেয়ে আসলে ঘরের সকল বিদ্যুতের সুইচ এবং মেইন সুইচ বন্ধ করে দিন। এতে বিদ্যুৎ ঘটিত সাম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে।
দুর্যোগের মধ্যেই রাত কাটাতে হবে। তাই হাতের নাগালে দেশলাই, মোমবাতি, হারিকেন, টর্চ লাইট রাখুন।
বন্যার সময় মনোবল শক্ত রাখুন। নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান। নিরাপদে থাকুন। জিনিসপত্রের কথা ভেবে ঘরে থেকে যাবেন না। হঠাৎ পানির স্রোত বাড়লে বিপদে পড়বেন।
বন্যার সময় বীজতলা গেলে নানানভাবে চারা উৎপাদনের ব্যবস্থা জানুন। কলাগাছের ভেলা বানিয়ে সেই ভেলার ওপর কাদামাটির প্রলেপ দিয়ে বীজ ছিটিয়ে দিন। বীজতলায় চারা থাকলে তা মাটিসহ তুলে উঁচু স্থানে নিয়ে যান।
বন্যার শঙ্কা থাকলে গবাদিপশুকে টিকা দিয়ে নিতে হবে। বন্যায় যদি কোনো গবাদিপশুর প্রাণহানি হয়, তবে তাকে পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া যাবে না। মাটিতে পুঁতে ফেলুন।
বন্যা পরবর্তী সময়ে করণীয়—
বন্যার চাইতে বন্যা পরবর্তী সময়টাই সবচেয়ে কঠিন সময়। তাই সে সময়ে কর্তৃপক্ষের কথা শুনুন। তারা অনুমতি দিলেই বা নিরাপদ বলার পরেই বাড়ি ফিরবেন।
একটি সারভাইভাল কিট প্যাক করুন। সেখানে কমপক্ষে তিন দিনের জন্য পর্যাপ্ত খাবার ও পানি নিন। প্রত্যেকের জন্য একটি করে পোশাক, প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন।
জরুরি তথ্যের জন্য রেডিও, স্থানীয় পরিবর্তনকারী সিস্টেম বা সরকারী নির্দেশাবলী শুনুন।
বন্যা পরবর্তী সময়ে বন্যার পানিতে হাঁটবেন না, সাঁতার কাটবেন না বা গাড়ি চালাবেন না। কারণ ৬ ইঞ্চি পানির স্তরেও আপনি নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারেন।
ভেজা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি থেকে দূরে থাকুন, এতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে।
বাড়িতে ঢোকার আগে দেখে নিন কোনো কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে কি না।
বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র পরিদর্শন করার আগে পাওয়ার চালু করবেন না।
সাপ ও বিভিন্ন প্রাণী আপনার বাড়িতে থাকতে পারে, তাই সতর্ক থাকুন। সম্ভব হলে গ্লাভস ও বুট পরুন।
বন্যা-দূষিত প্রতিটি ঘর পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত ও শুকিয়ে নিন।
আপনার যদি কোনো বীমা থাকে তাহলে নিশ্চিত করুন যে বীমা দাবির নথি হিসেবে ছবি বা ভিডিও আছে কি না।
কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে সহজেই করুন ত্বকের পরিচর্যা
কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে পার্লারে গিয়ে হাজার হাজার টাকা খরচ করতে পিছপা হন না অধিকাংশই। তবে জানেন কি, ত্বকের হাল ফেরাতে সব সময়ই যে এত টাকা খরচ করার প্রয়োজন পড়ে তা কিন্তু নয়, কারণ আমাদের হাতের কাছে থাকা বেশ কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের গুণে ত্বকের হারিয়ে যাওয়া উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনা যায় নিমেষে। আর তাতে খরচ হয় নামমাত্র।
সেই সব উপকারী প্রাকৃতিক উপাদানের তালিকায় একেবারে প্রথম সারিতে রয়েছে কর্নফ্লাওয়ার। এই উপাদানই ক্লিনজারের কাজ করে। ত্বকের যত্নের জন্য এই ময়দা যে খুব উপকারী একটি জিনিস, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। নরম, মোলায়েম, পেলব ত্বক পেতে সাহায্য করবে ময়দা। এর গুণে ত্বকের দাগছোপ মলিন হতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে ত্বকে যাতে অতিরিক্ত মাত্রায় তেল নিঃসরণ না হয়, সেদিকেও নজর রাখে। এমনকী প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবেও কর্নফ্লাওয়ারের জুড়ি মেলা ভার। কর্নফ্লাওয়ারের উপস্থিত ভিটামিন বি ত্বকের অন্দরে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে, যা জমে থাকা টক্সিনকে সহজেই বের করে দেয়। কিন্তু কর্নফ্লাওয়ার রুক্ষ-শুষ্ক ত্বকে ব্যবহার না করাই শ্রেয়। তাতে ত্বকের আরও বেশি মাত্রায় ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে তৈলাক্ত ত্বকে ময়দা ব্যবহার করলে হাজারও উপকার মিলবে।
জেনে নিন, সহজেই কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে ত্বকের পরিচর্যা করার নিয়ম—
দুধ কিংবা পানির সঙ্গে কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে তার মধ্যে দিন সামান্য পাতিলেবুর রস ও মধু। এই মিশ্রণ মিনিট ১৫ ত্বকে লাগিয়ে রাখতে হবে। আলতো হাতে ম্যাসাজ করে নিন। তারপর পরিষ্কার ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিলেই হবে। সপ্তাহে তিনদিন এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারবেন। এর মাধ্যমে ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরে পাবেন আপনি। ত্বক থাকবে মোলায়েম। সেই সঙ্গে দূর হবে ত্বকের কালচে দাগছোপও।
টকদই, সামান্য চিনি আর কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারবেন ফেস স্ক্রাব। এই মিশ্রণ আপনার ত্বক থেকে ডেড স্কিন সেল অর্থাৎ ত্বকের মরা কোষ ঝরিয়ে ফেলতে সাহায্য করবে। এর ফলে ত্বক দেখতে ঝকঝকে লাগবে। চোখের নীচের কালচে দাগও দূর করতে পারবে এই ফেস স্ক্রাব।
ত্বকের জন্য হলুদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপকরণ। কর্নফ্লাওয়ারের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে নেওয়া যাবে। এই ফেসপ্যাক সপ্তাহে দু থেকে তিনদিন ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকের যাবতীয় অ্যালার্জি, র্যাশ দূর করবে এই ফেসপ্যাক। ব্রণের সমস্যাও কমাবে। ত্বক উজ্জ্বল রাখতেও সাহায্য করবে এই ফেসপ্যাক। গোসলের আগে মিনিট ১০-১৫ এই ফেসপ্যাক লাগিয়ে রাখুন ত্বকে। তারপর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন মুখ। গলার অংশে, কাঁধেও এই ফেস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
গ্রিন টি, মধু, কাঁচা ডিম, অ্যালোভেরা জেল- এই চারটি উপকরণ আলাদা আলাদা করে কর্নফ্লাওয়ারের সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন ফেসপ্যাক। এই ফেসপ্যাক সপ্তাহ দু থেকে তিনবার ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের অনেক সমস্যাই দূর হবে। ঝকঝকে, মোলায়েম, উজ্জ্বল ত্বক পাবেন আপনি।
ছাদ বাগান সাজিয়ে তুলবেন যেসব গাছে
বাড়ির ছাদ সুন্দর করতে অনেকেই ছাদ বাগান করতে চান। কিন্তু কী গাছ লাগাবেন, তা বুঝতে না পাড়লেই হয় বিপত্তি। বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরের অধিকাংশ বাড়ির ছাদের দিকে তাকালেই বিভিন্ন ধরনের বাগান দেখা যায়। অবশ্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরের ছাদে যেসব বাগান দেখা যায় তার অধিকাংশই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। পরিকল্পিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া হলে বাড়ির ছাদে যেকোনো গাছ, এমনকি শাকসবজিও ফলানো সম্ভব।
নান ধরনের মৌসুমি ফল ছাড়াও কলমি শাক, কলা, ডাঁটা, লাউ ইত্যাদি অনায়াসে উৎপাদন করা যায়। কোন গাছের জন্য কী ধরনের মাটি উপযোগী তা নিশ্চিত হয়ে ছাদে বাগান করলে ভালো হয়। এ ছাড়া বেশি রোদ বা গরম সহ্য করতে পারে এমন গাছই ছাদে রোপণ করা উত্তম। ছাদে বাগান করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে নিয়মিত পানি সেচ দেওয়া। কারণ, বাগানের গাছগুলো যেহেতু সাধারণ মাটির সংস্পর্শ হতে দূরে থাকে তাই নিয়মিত পানি সেচ না দিলে গাছগুলো যেকোন সময় মারা যেতে পারে। সাধারণত দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে গাছ ভালো জন্মে। ছাদে বাগান করতে হলে এ ধরনের মাটি ব্যবহার করলে ভালো হয়।
ছাদে যে ধরনের গাছ রোপণ করা যায়:
বাড়ির ছাদে খুব নরম প্রকৃতির গাছ লাগাবেন না। ছাদের প্রখর রোদ নরম প্রকৃতির গাছ সহ্য করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে বড় গাছের বনসাই লাগানো ভালো।
যেকোনো রকম ফুল যেমন গোলাপ, বেলী, টগর, জুঁই, গন্ধরাজ, জবা, জারবেরা গাছ লাগাতে পারেন। এছাড়াও লাগাতে পারেন ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, কারিপাতার গাছ।
পেয়ারা, বারোমাসে লেবু (কাগজি, সিডলেস, এলাচি), মালটা, কমলা, বরই (টক ও মিষ্টি), ডালিম, ড্রাগন ফলের গাছ লাগাতে পারেন ছাদে।
ক্যাপসিকাম, শিম, শসা, উচ্ছে, পটল, লাউ, ব্রকলি গাছ ছাদে লাগানো যায়। পেঁয়াজ, রসুন, আদা, গোলমরিচ গাছও লাগাতে পারেন।
সব থেকে ভালো হলো ছাদে ঔষধিগুণ বিশিষ্টগাছ লাগানো। অ্যালোভেরা, তুলসি, থানকুনি, চিরতার মত গাছ ছাদে ভালো হয়।
ঘরজুড়ে বাজে গন্ধ দূর করুন ৭টি সহজ উপায়ে
বাহিরের রোদ-বৃষ্টির খেলায় ঘরের অবস্থা নাজেহাল, ঘরের ভিতর সব সময়ই একটা স্যাঁতসেঁতে গন্ধ! বুঝতেই পারছেন না কীভাবে দূর হবে? চটজলদি এই গন্ধ দূর করতে রুম স্প্রে ব্যবহার করছেন। কিন্তু সমস্যা দূর হচ্ছে না, চিন্তা নেই। খুব সহজেই ঘরোয়া কয়েকটি উপায়ে দূর করতে পারেন বর্ষার গন্ধ, জেনে নিন কীভাবে।
চলুন জেনে নিই—
১) ঘরের এককোণায় এক বাটি পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে রেখে দিন। এতে ঘরের মধ্যে ফ্রেশভাব বজায় থাকবে।
২) দিনের বেলা কমলালেবু, পুদিনা বা ফুলের যেকোনো সুগন্ধি আপনাকে তরতাজা করে রাখবে। ল্যাভেন্ডার, ক্যামোমাইল, ইউক্যালিপটাস, দারুচিনি ও চন্দন রাতের সুগন্ধি হিসেবে মানানসই।
৩) বাজারে সুগন্ধি মোমবাতি কিনতে পাওয়া যায়। সেই মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখুন। দেখবেন ঘর থেকে গন্ধ দূর হবে।
৪) জানলা-দরজার পর্দা থেকেও গন্ধ ছড়াতে পারে। বর্ষায় সপ্তাহে একবার করে পর্দা ধুয়ে নিন, অথবা ধোঁয়া পর্দা টানিয়ে নিন। প্রয়োজনে পর্দায় রুম স্প্রে ব্যবহার করুন। দেখবেন ঘরে সুন্দর গন্ধ খেলা করবে।
৫) স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ দূর করতে ঘরের একটি উঁচু জায়গায় বাটিতে কিছুটা ভিনিগার ঢেলে রেখে দিন। দেখবেন ভিনিগার ঘরের গন্ধ শুষে নেবে। ঘরে একটা ফ্রেশভাব আসবে।
৬) ঘর মোছার পানিতে কর্পুর ফেলে দিন। সেই পানি দিয়ে ঘর মুছলে ঘরের স্যাঁতস্যাঁতে ভাব দূর হবে।
৭) বৃষ্টির সময়ে জানলা বন্ধ রাখলেও থেমে গেলে জানলা খুলে দিন। ঘরে মুক্ত হাওয়া আসতে দিন। এতে বাইরের ঠান্ডা হাওয়া এসে ভ্যাপসা ভাবটা অনেকটা কেটে যাবে।
ঐতিহ্যবাহী পদ ইলিশ ভাতুরির রেসিপি
প্রতিদিন একই ধরনের খাবার খেতে খেতে একঘেয়ে লাগলে স্বাদ বদলাতে ভিন্নভাবে রান্না করেন অনেকেই। স্বাদে বদল আনতে মাঝে মাঝে চেনা মাছ দিয়ে ভিন্ন স্বাদের খাবার রান্না করে দেখতে পারেন। এ মৌসুমে ইলিশ দিয়েও রান্না করতে পারেন নতুন এক রেসিপি। আমাদের দেশের একেক অঞ্চলেতো ইলিশ একেকভাবে খাওয়া হয়। ইলিশের পাতুরি তো সবাই চেনেন, কিন্তু ঐতিহ্যবাহী পদ ইলিশ ভাতুরি আরও এক চমৎকার পদ। জেনে নিতে পারেন রেসিপিটি।
রইল রেসিপি—
উপকরণ:
বড় ইলিশ মাছ ৬-৮ টুকরা
কাঁচা মরিচকুচি ৫-৬টি
শর্ষের তেল ৩ টেবিল চামচ
লবণ পরিমাণমতো
হলুদগুঁড়া সামান্য
মিহি করে কাটা পেঁয়াজকুচি আধা কাপ
লেবুর রস ১ টেবিল চামচ
লাউপাতা ৬টি
চাল আধা কেজি
প্রণালি:
প্রথমেই ভাতের চাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। ইলিশ মাছসহ বাকি উপকরণ (পাতা ছাড়া) একসঙ্গে মিশিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। লাউপাতায় মাখানো মাছের একটি টুকরা রেখে পাতাটি ভাঁজ করে উল্টিয়ে দিন, যাতে খুলে না যায়। এভাবে সব কটি পাতায় মোড়ানো মাছ প্রস্তুত করে নিন।
এবার দেড় গুণ ফুটন্ত পানি দিয়ে ভাত বসিয়ে দিন। নিয়মমাফিক ভাত রান্না করে প্রায় হয়ে এলে হাঁড়ির মাঝখান থেকে কিছু ভাত সরিয়ে লাউপাতায় মোড়ানো মাছের টুকরাগুলো রেখে দিন। ওপরে সরিয়ে রাখা ভাত দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে মৃদু আঁচে রাখুন। ১০ মিনিট এভাবে রেখে দিন।
ভাত সরিয়ে মাছগুলো সাবধানে তুলে পাতাসহ পরিবেশন করুন গরম ধোঁয়া ওঠা ঐতিহ্যবাহী পদ ইলিশ ভাতুরি।
তেল চিটচিটে শিশি সহজেই পরিষ্কারের টোটকা
রান্নায় তেলের পরিমাণ কম কিংবা বেশি, রান্নাঘরে তেলের শিশিতো রাখতেই হয়। অলিভ অয়েল হোক বা সরিষার তেল কিংবা সাদা তেল, যে কোনও তেলের শিশি চিটচিট করে। তেলের শিশি তেলচিটে হয়ে যাওয়ায় ময়লাও জমে বেশি। বাসন মাজার সাবান দিয়ে তেলের শিশি পরিষ্কার করলেও তেলচিটে ভাব যায় না। এক্ষেত্রে কোন টোটকায় শিশির তেলচিটে ভাব দূর করবেন রইল সেই টিপস।
জেনে নিন টোটকা—
শিশিগুলো প্রথমে গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। এতে শিশিতে থাকা সব তেল বেরিয়ে যাবে। পানি থেকে শিশিগুলো তুলে টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিন। তোয়ালে দিয়েও মুছে নিতে পারেন।
এছাড়া শিশি বা জার বাসন মাজার তরল সাবান দিয়ে পরিষ্কার করুন। প্রথমে তরল সাবান ও স্ক্রাবার দিয়ে ভালো করে ঘষে নিন। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
ভিনেগার দিয়ে শিশি পরিষ্কার করতে পারেন। এক্ষেত্রে একটি পাত্রে পানি নিন। এতে ভিনেগার ও লেবুর রস মিশিয়ে নিন। তারপর তেলের শিশি, মশলার জার সবকিছু ডুবিয়ে রাখুন। এরপর সাবান দিয়ে মেজে ধুয়ে নিন।
বেকিং সোডা দিয়েও শিশি পরিষ্কার করতে পারেন। বেকিং সোডা তেলচিটে ভাব দূর করে দেয়। গরম পানির সঙ্গে বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। এতে শিশিগুলো ডুবিয়ে দিন। তারপর ভালো করে মেজে ধুয়ে নিলেই কাজ শেষ।
এই উপায় রান্নাঘরের তাকে থাকা যে কোনও জার বা শিশি পরিষ্কারের ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারেন। সপ্তাহে একদিন করে এভাবে তেলের শিশি বা মশলার জার পরিষ্কার করতে পারেন।
যে মুরগির একটি ডিম কিনতে গুনতে হবে ১৬শ' টাকা!
মুরগি বা চিকেন খাবার হিসেবে প্রায় সব দেশেই জনপ্রিয়। দামও মানুষের অনেকটা নাগালের মধ্যে। তবে মুরগির ঝোল কিংবা ঝাল ফ্রাই, ফ্রায়েড চিকেন বা রোস্ট যেভাবেই পাখি প্রজাতির এই প্রাণীটির মাংস খাওয়ার কথা ভাবতে পারেন একজন সাধারণ বাংলাদেশি, তাতে কালো মুরগির কথা ভাবেন না প্রায় কেউই। কারণ খুব সাধারণ, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের কাছে কালো মুরগি পরিচিত নয়। কিন্তু এই কালো মুরগিকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে দামি মুরগি। আর যে মুরগিই এত দামি তার ডিমতো ১৬শ' টাকা দাম হবেই।
এবার তাহলে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি এই মুরগির মূল্যটা জেনে নিন। এই এক মুরগির দাম নাকি কয়েক লাখ টাকা। শুনে চোখ কপালে ওঠার মতোই অবস্থা। না, আপনি ভুল পড়েননি। ইন্দোনেশিয়ার জাভা দীপে বেড়ে ওঠে বিরল এই মুরগির নাম আইয়াম চিমানি। আইয়াম অর্থ মুরগী আর চিমানি মানে সম্পূর্ণ কালো। বাস্তবে এই মুরগি দেখতে একদমই কালো। এই মুরগির হাড়, মাংস, এমনকি জিহ্বা-সবই কালো। শুধুমাত্র রক্ত অন্যান্য প্রাণীর মতোই লাল। তবে কেনো এই মুরগির সব অঙ্গপ্রতঙ্গ কালো? বিজ্ঞানীরা বলেন, ফাইব্রোমেলানোসিস নামের জেনেটিক মিউটেশন থেকে এই মুরগির রং কালো হয়ে থাকে। অন্যান্য জাতের মুরগির গায়ের রঙের জন্য শুধুমাত্র কয়েকটি কোষ দায়ী। আর আইয়াম চিম্যানির পুরোপুরি কালো হওয়ার পেছনে কারণ হলো এর প্রায় সব কোষের পিগমেনটেশন।
যুক্তরাষ্ট্র, চায়না, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, নেদারল্যান্ডসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ নানা মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ার এই মুরগি সংগ্রহ করেন। অনেকে এর বাচ্চা কিনে লালন পালন করেন। পুরো মুরগি কালো হলেও এই মুরগির ডিম কিন্তু কালো নয়। সাধারন ডিমের মতোই এর রঙ। ইন্দোনেশিয়ায় এই মুরগীর সর্বোচ্চ দাম দুই হাজার থেকে ছয় হাজার ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। বাংলাদেশি টাকায় যা ছয় লাখ টাকার বেশি। প্রতিটি ডিমের দাম ১৬ ডলার যা ১৬০০ টাকার বেশি।
ইন্দোনেশিয়ার বাইরে একেক দেশে একেক দামে বিক্রি হয় এটি। যুক্তরাষ্ট্রে যদিও আইয়াম চিম্যানি ২০০০ থেকে ৩০০০ ডলারে বিক্রি হয়। তবে ভালো মানের মুরগি ৯ থেকে দশ হাজার ডলার পর্যন্ত বিক্রি হয়। তবে ভালো মান বোঝা যায় মুরগির মুখ ও জিহ্বা কতটা কালো তা দেখে। যত কালো তত ভালো। খুবই শান্ত ও অনুগত স্বভাবের এই মুরগীর এতো বেশি দামের মূল কারণ মূলত এর মাংস। চর্বিহীন এই প্রাণীর মাংসের স্বাদ জাদুকরী।
সাধারণ মুরগির মাংসের চেয়ে এই মাংসে আছে অনেক বেশি প্রোটিন। যার কারণে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ এটি অনেক বেশি পছন্দ করেন। এছাড়াও ভিটামিন এ ডি ই, আয়রন ক্যালসিয়ামের মতো পুষ্টিগুণ আছে এতে। আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্রি র্যরডিকেলের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। শুধুমাত্র খাবার হিসেবেই নয় এই মুরগির বিভিন্ন অংশ ওষুধ ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানেও ব্যবহার করা হয়। ইন্দোনেশিয়ানদের অনেকে এটিকে দামী পোষা প্রাণী হিসেবে বাড়িতে পুষে থাকেন। ইন্দোনেশিয়ায় এই মুরগিটি মোটামুটি পরিচিত হলেও, অন্যান্য দেশে এগুলো হাজার হাজার ডলারে বিক্রি হয়। এটি স্পোর্টস চিকেন নামেও বিখ্যাত।
প্রাণীটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে অনেক ধরনের বিশ্বাস প্রচলিত আছে। অনেকে মনে করেন, কালো রঙের কারণে এরা সুপারন্যাচারাল ক্ষমতার অধিকারি এবং পৃথিবীব্যাপী বিচরণ করতে পারে। এই মুরগির প্রথম ডিম খেলে সন্তানধারণ হয় বলেও স্থানীয়দের বিশ্বাস। তবে কোনো দম্পতি চাইলে প্রথম ডিমটি টাকা ছাড়াই তাদের দিয়ে দেন ইন্দোনেশিয়ানরা। বিভিন্ন ওষুধের কাজে এই মুরগি ব্যবহার করা হলেও তার নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম। এটি অসুস্থ্য হলে কালো রঙ ধীরে ধীরে বিবর্ণ হতে শুরু করে। তাই এই মুরগিকে সুস্থ্য রাখতে হলে অবশ্যই খুব সাবধানে এবং যত্ন সহকারে লালন পালন করতে হয়। সাধারণত ৬ থেকে ৮ বছর বাঁচে এই প্রাণী। এই মুরগির পালনও বেশ কষ্টসাধ্য এবং জটিল। এরজন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি মুরগির সঠিক জোড়া। সঠিক জোড়া না হলে তাদের মাধ্যমে অন্য জাতের মুরগির জন্ম নিতে পারে। যার রঙ কালো না হয়ে সাদা কিংবা অন্য রঙেরও হতে পারে।