ডায়াবেটিস হলে পায়ের যত্ন নেবেন যে নিয়মে
ডায়াবিটিস এমন একটি রোগ, যার ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হয়ে যায়। চোখ থেকে শুরু করে পা, মধুমেয় রোগের ফলে হতে পারে অনেক ক্ষতি। ডায়াবিটিসের ফলে যে সমস্ত রোগ হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো, ডায়াবেটিক ফুট ইনফেকশন। ডায়াবেটিস রোগীর পা অত্যন্ত সংবেদনশীল, সেখানে যেকোনো ক্ষত ও সংক্রমণ গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে।
সাধারণ মানুষের তুলনায় যারা ডায়াবিটিস রোগে আক্রান্ত তাদের পায়ে সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি অনেক অংশে বেড়ে যায়। ডায়াবেটিক ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ ব্যক্তিদের পায়ের আলসার তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই রোগের ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির পায়ে সংবেদন অনুভব করার ক্ষমতা হারিয়ে যায় যার ফলে বড়সড়ো বিপদ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
যে সমস্ত ব্যক্তি ডায়াবিটিসের ফলে পায়ের আলসারে আক্রান্ত হন তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ ব্যক্তির শরীরে এই রোগ থেকে যায় সারা জীবন। অনেক সময় এই জটিলতা এতটাই গুরুতর হয়ে যায় যে অঙ্গ বিচ্ছেদ পর্যন্ত হতে পারে। তাই পায়ের আলসার থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম, যা আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।
জেনে নিন নিয়মগুলো—
প্রতিদিন পা ধোওয়া: প্রতিদিন গরম সাবান পানি দিয়ে পা ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে।।
পা ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে: পা ধোয়ার পর ভালোভাবে পা শুকিয়ে নিতে হবে। পায়ের আঙুলের ফাঁকে যদি পানি লেগে থাকে তাহলে পরে সেটা ঘা-এ পরিণত হতে পারে।
নিয়মিত মশ্চারাইজার ব্যবহার করুন: আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয় তাহলে পায়ের আঙুলের মাঝখানে মশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে হবে সারা বছর।
নিয়মিত নখ কাটা: পা পরিষ্কার করার অন্যতম একটি উপায় হল নিয়মিত নখ কেটে পরিষ্কার করা।
পায়ে শক্ত ত্বক অপসারণ করুন: অনেক সময় পায়ের তলায় শক্ত ত্বক বা চামড়া তৈরি হয়ে যায়, এমন ঘটনা ঘটলে পিউমিস পাথর দিয়ে ভালো করে সেই জায়গাটি পরিষ্কার করুন।
পরিষ্কার মোজা ব্যবহার করুন: প্রতিদিন পরিষ্কার মোজা ব্যবহার করবেন। প্রয়োজনে বাড়িতে আরও এক্সট্রা মোজা রেখে দেবেন যাতে একটি ভেজা থাকলে অন্যটি পড়া যায়।
নড়াচড়া করুন: সারাদিনে অন্ততপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করুন। সারাদিন যদি শুয়ে থাকেন বা বসে থাকেন সেক্ষেত্রে পায়ের রক্ত সঞ্চালন কমে যায় এবং একাধিক সমস্যা তৈরি হয়।
ভালো জুতো পড়ুন: একটি ভালো কোম্পানির জুতো ব্যবহার করুন। চেষ্টা করুন হিল জুতো না পরতে। যদি হিল জুতো পরতেই হয় তাহলে সারাদিনে বা কর্মস্থলে যতটা সম্ভব আরামদায়ক জুতো পরার চেষ্টা করুন।
ডাক্তারের পরামর্শ নিন: পায়ের সমস্যা যদি বেড়ে যায় তাহলে সেটিকে না ফেলে রেখে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেবেন। অনেক সময় পায়ে ব্যথা বা অস্বস্তি শুধুমাত্র মধুমেয় রোগের জন্য হয় তা নয়, অন্য কারণেও হতে পারে।
মন্তব্য করুন