লবণের যতো ব্যবহার
লবণ যে রান্না করার ক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং তরকারিকে সুস্বাদু করে তুলতে আবশ্যক, সেটা আর বলার দরকার পড়ে না। তরকারি ও বেশ কিছু খাবারে লবণ ঠিক না হলে তা আর খাওয়া যায় না। এটি ছাড়া খাওয়ার স্বাদ কি ভালো লাগে? একেবারেই না। মিষ্টি খাবার শখ করে একটু-আধটু খাওয়াই যায়, কিন্তু সব সময় তা ভালো লাগে না। আমরা মূলত সব ধরনের ঝাল খাবারেই লবণ ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এটি শুধু খাওয়ার জন্যই এতো জনপ্রিয় না। লবণের অনেক ব্যতিক্রমী ব্যবহার রয়েছে, যা দূর করতে পারে নানা টুকিটাকি সমস্যা। এগুলো জানা থাকলে আপনার দৈনন্দিন অনেক কাজ সহজ হয়ে যাবে। জেনে নিন, লবণের ব্যতিক্রমী ব্যবহারগুলো।
- কাপড়ে ফাঙ্গাস বা কাঠের ওপরে সবুজাভ ছত্রাক পড়ার সমস্যা দূর করতে লবণ খুবই কার্যকরী। লবণ ও লেবুর রস মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এরপর তা দিয়ে আক্রান্ত স্থান ঘষে নিন। এরপর রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর তা স্বাভাবিকভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিলেই সমস্যা থেকে মুক্তি।
- ডিম সিদ্ধ করার পানিতে ১ চা চামচ লবণ দিন। ডিমের খোসা ছাড়াতে পারবেন দ্রুত।
- দুধ দীর্ঘসময় ভালো রাখতে চাইলে তার মধ্যে এক চিমটি লবণ দিয়ে দিন, দেখবেন তা দীর্ঘসময় পর্যন্ত ভালো থাকবে।
- সবুজ শাকসবজি সিদ্ধ করার সময় পানিতে এক চিমটি লবণ দিন। এর ফলে রং নষ্ট হবে না শাকসবজির।
- ফুলদানির ভেতরের অংশ পরিষ্কার করার জন্য লবণ বেশ কার্যকরী। প্রথমে ফুলদানির ভেতরে পানি দিয়ে ভালো করে ঝাঁকিয়ে নিতে হবে। তারপর সাবান পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
- হাত থেকে পেঁয়াজ বা রসুনের গন্ধ দূর না হলে ভিনেগারের সঙ্গে সামান্য লবণ মিশিয়ে ধুয়ে নিন হাত।
- ঘরে পিঁপড়ার উপদ্রব হলে যেখানে এর আনাগোনা বেশি সেখানে লবণ ছিটিয়ে দিন। পিঁপড়া চলে যাবে।
- কাপ থেকে চা অথবা কফির দাগ উঠতে না চাইলে ১ চা চামচ লবণ ও ১ চা চামচ ভিনেগার দিন। কয়েক ঘণ্টা রেখে তারপর কাপ পরিষ্কার করুন। দূর হবে দাগ।
- লবণ ব্যবহার করলে জিন্সের রং ফ্যাকাসে হবে না। জিন্স ধোয়ার সময় পানিতে এক কাপ লবণ মিশিয়ে নিন। এছাড়া কার্পেট পরিষ্কার করার জন্য রাতে লবণ ছিটিয়ে দিন। পরদিন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন।
- অনেক সময় কাপড় ক্যালেন্ডার করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত পুড়ে গেলে তা ইস্ত্রি নোংরা করে ফেলে। এ সমস্যা থেকেও রেহাই দেবে লবণ। ইস্ত্রি গরম করে মেঝেতে একটি কাগজ বিছিয়ে তার ওপর লবণ ছিটিয়ে ঘষে নিন। দেখবেন সব ময়লা দূর হয়ে গেছে।
- বাসন ধোয়ার ডিশওয়াশার নেই? চিন্তার কোনো কারণ নেই লবণ, বেকিং সোডা এবং সাধারণ ডিশ সোপ মিশিয়ে নিন। খুব সুন্দরভাবে পরিষ্কার করতে পারবেন সবকিছু।
- কাটিং বোর্ড যেখানে সবজি কাটা হয় তা যদি কাঠের হয় তাহলে সাধারণ ডিশওয়াশার দিয়ে পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না। লবণ, লেবুর রসের মিশ্রণ দিয়ে ভালো করে ঘষে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সমস্যার সমাধান।
আরকে/ডিএইচ
মন্তব্য করুন
ইফতারে রাখুন চিড়ার ডেজার্ট
সারাদিন পর যেহেতু ইফতার খাওয়া হয়, তাই ভুল খাবারে পেট না ভরিয়ে ভালো ও স্বাস্থ্যকর খাবার রাখা উচিত এ সময়। তাহলে শরীর দ্রুত অ্যানার্জিও পাবে আবার সুস্থও থাকবেন। আর সারাদিন না খেয়ে থাকার পর ইফতারে একটু ঠান্ডা ডেজার্ট খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। তবে স্বাস্থ্যের দিকেও তো খেয়াল রাখতে হবে।
এজন্য ইফতারে রাখতে পারেন প্রাণ জুড়ানো চিড়ার ডেজার্ট। এই খাবার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
জেনে নিন কীভাবে তৈরি করবেন-
উপকরণ:
১. চিড়া আধা কাপ
২. গুঁড়া দুধ আধা কাপ
৩. চিনি স্বাদমতো
৪. বেদানা পরিমাণমতো
৫. কলা পরিমাণমতো ও
৬. জেলো আধা কাপ।
পদ্ধতি:
প্রথমে চিড়া পানি দিয়ে ২-৩ বার ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর চিড়া ৫-৬ মিনিটের মতো রেখে দিন। এরই মধ্যে চিড়া ফুলে উঠবে অনেকটাই। তারপর চুলায় একটা প্যান বসিয়ে তাতে ২ কাপ পানি দিন। এর মধ্যে গুঁড়া দুধ ও পরিমাণমতো চিনি মিশিয়ে নিন। তারপর চুলার আঁচ মিডিয়ামে রেখে ৩-৪ মিনিট জ্বাল করে নিন দুধ।
এরপর নামিয়ে দুধ একেবারে ঠান্ডা করে নিতে হবে। এবার ২-৩টি ছোট ছোট বাটি বা কাপ নিয়ে তার মধ্যে চিড়া, জ্বালানো দুধ, ফল ও জেলো মিশিয়ে নিন। আপনি চাইলে পছন্দসই অন্যান্য ফলও মেশতে পারেন এই ডেজার্টে। এরপর ফ্রিজের নরমালে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন।
ইফতারের আগে বের করে পরিবেশন করুন ঠান্ডা ঠান্ডা চিড়ার ডেজার্ট।
‘স্লিপ ডিভোর্স’ দাম্পত্য জীবনে কার্যকর কি না, জানালেন মনোবিদরা
বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া এবং নিশ্বাস নেওয়ার মত ঘুম আমাদের জীবনে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। তবে নানা কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এই ব্যাঘাত যেন না ঘটে সেজন্য অনেক দম্পতি বিয়ের পর আলাদা ঘুমান। এটাই ‘স্লিপ ডিভোর্স’। কিন্তু কেন জরুরি এই ঘুম-বিচ্ছেদ, এর ফলে কী কোনো উপকার আছে কি না জেনে নেওয়া যাক।
ঘুমের ‘মান’ বাড়ায়: জাপানিদের দেখা যায় ছোট ছোট বিছানায় ঘুমায়। বলা চলে একা ঘুমানো তাদের ঐতিহ্য। ঐতিহাসিক আর সাংস্কৃতিকভাবেই জাপানিরা সাধারণত একা ঘুমান। কোনো কিছুর জন্যই তারা ঘুমের মান বিসর্জন দিতে প্রস্তুত নন। কেননা সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম খুবই জরুরি।
কাস্টমাইজড স্পেস: একেকজনের ঘুমের অভ্যাস একেক রকম। কেউ আলো জ্বালিয়ে ঘুমান, কেউ আলো মোটেই সহ্য করতে পারে না। কেউ এসি ছেড়ে ঠান্ডায় কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমায়, কারও কারও আবার এসি ‘সহ্য’ হয় না। কারও কারও ঘুম খুবই পাতলা। ফলে নিজের মতো করে ঘুমের একটা পরিবেশ তৈরি করেন।
সন্তানের জন্য: শিশুর জন্য অন্তত দুই বছর পর্যন্ত মায়ের কাছে ঘুমানো খুবই জরুরি। বুকের দুধ খাওয়ার পাশাপাশি মায়ের কোল, মায়ের পাশে ঘুমানো, মায়ের ‘ওম’-এ থাকা খুবই জরুরি। নানা কারণে বারবার বাবু ঘুম থেকে উঠে যাওয়ায় জীবনসঙ্গীর ঘুমের অসুবিধার কারণেও অনেক সময় স্লিপ ডিভোর্স হয়। জীবনসঙ্গী আলাদা ঘুমান।
তবে নতুন মায়ের এমন সংকটের সময় শিশুর বাবার উচিত দায়িত্ব যতটা সম্ভব ভাগাভাগি করে নেওয়া। ন্যাপি, কাঁথা বদলে দেয়া। কোলে নিয়ে ঘুরে ঘুরে ঘুম পাড়ানো। তবে একেবারেই যদি তিনি কোনো সাহায্য না করতে পারেন, তাহলে আলাদা ঘুমানোই সমীচীন।
সার্বিক সুস্থতা, স্বস্তি : অনেক সময় স্বামী-স্ত্রী আলাদা ঘুমানোর ফলে তাদের ঘুম ভালো হওয়া, নিজেদের স্বাস্থ্য ভালো থাকা, সারা দিন এনার্জি নিয়ে পার করা থেকে শুরু করে নিজেদের সম্পর্কে ভারসাম্য রাখাও সহজ হয়।
তবে দাম্পত্ব জীবন সুখী করতে হলে জীবনসঙ্গীকে নিয়ে একসঙ্গে আরামে ঘুমানো সবচেয়ে ভালো। সম্পর্কের গভীরতার জন্য শারীরিকভাবে কাছাকাছি থাকার কোনো বিকল্প নেই।
ঘুমবিশেষজ্ঞ ও মনোবিদ ডা. ওয়েন্ডি ট্রক্সেল একই বিষয়ে সিএনএনের একটা প্রতিবেদনে বলেন, ‘জীবনসঙ্গীর সঙ্গে ঘুমানো দুজনকেই সম্পর্কে গভীর নিরাপত্তার অনুভূতি দেয়। এ ছাড়া ঘুমের আগে আলিঙ্গন করা, যৌন সম্পর্ক বা হালকা গল্প করা, চুমু খাওয়া-এসবের ফলে হ্যাপি হরমোনের নিঃসরণ হয়। আর তা অনেকক্ষণ পর্যন্ত শরীরে থাকে। ফলে ঘুমের মানও ভালো হয়।’
এই মনোবিদ আরও জানিয়েছেন, আলাদা ঘুমানোর ফলে সম্পর্কে ছন্দপতন ঘটে। ভুল-বোঝাবুঝির আশঙ্কা তৈরি হয় বেশি। এমনকি একে অপরকে অকারণে সন্দেহ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় সহজেই। তাই কী কারণে আলাদা ঘুমানোর প্রয়োজন, সেটা আগে সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক। আলাদা ঘুমানোটা এরপরের ধাপের বিকল্প।
৭ ফুট লম্বা চুলের অধিকারী কে এই আনিকা?
নিজের থেকে বড় চুলের অধিকারী বাংলোদেশের মেয়ে শামিমা আক্তার আনিকার সুনাম দেশ পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। আনিকা পড়াশেনা করেছেন অস্ট্রেলিয়ায়। বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়াতে আইটি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর পড়াশোনা শেষ করা আনিকার দাবি, বাংলাদেশের সবথেকে বড় চুলের অধিকারিনী তিনি।
আনিকা লম্বায় ৫ ফুট ২ ইঞ্চি হলেও তার চুল ৭ ফুট। সেজন্য দেশের সবচেয়ে লম্বা চুলের নারী হিসেবে নিজেকে দাবি করেন তিনি।
এমন বড় চুল হওয়ার পেছনের কারণ হিসেবে গণমাধ্যমকে আনিকা বলেন, আমার মা-খালাদেরও এমন পা ছুঁই ছুঁই চুল রয়েছে। তারাও আমার চুল দেখে নিজেদের স্মৃতিচারণ করেন।
বড় চুল সামলানোর প্রসঙ্গে আনিকা বলেন, অনেকবার ভেবেছি চুল কেটে ফেলবো। কারণ আমার চুলের ভারে প্রায়ই ঘাড় ব্যথা করে। তাই চিকিৎসকরাও পরামর্শ দিয়েছিলেন চুল কাটতে, তবে আমি এই সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। অজানা এক মায়াতে আটকে চুল সযত্নেই রেখে দিয়েছি।
অস্ট্রেলিয়ার অনেকেই আনিকার কাছে জানতে চান তিনি কোন দেশের বাসিন্দা। এতো বড় চুল কীভাবে হলো। তাদেরকেও আনিকা বাংলাদেশ সম্পর্কে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন।
আনিকা আরও বলেন, আমার চুল নিয়ে একটি স্বপ্ন আছে। আমি এখনও আমার জীবনসঙ্গীর দেখা পাইনি। পেলে তাকে সারপ্রাইজ দেবো। তারপর হয়তোবা চুল ছোট করার কথা চিন্তা করতে পারি।
রোজায় পান করবেন যে ধরনের শরবত ও পানীয়
রোজা রেখে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। যেহেতু রোজায় লম্বা সময় ধরে পানি না খেয়ে থাকা হয়, সেহেতু পর্যাপ্ত পানি পান না করলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পানি ও পানীয় গ্রহণের পাশাপাশি পানি জাতীয় সবজিও খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। এতে সারাদিন শরীর হাইড্রেটেড থাকবে।
ইফতারে যে ধরনের পানীয় শরীরের জন্য উপকারী :
পানি : স্বাস্থ্যকর পানীয়র মধ্যে প্রথমেই থাকবে সাদা পানি। চিনি, লবণ ছাড়া শুধু সাদা পানি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসম্মত পানীয়। ইফতারের শুরুতেই সাদা পানি খান।
আখের গুড়ের শরবত : পানির সঙ্গে আখের গুড় আর একটু লবণ মিশিয়ে শরবত তৈরি করা হলে এটি স্যালাইনের কাজ করে এবং রক্তের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স করতে সাহায্য করে।
লেবু পানি : পানি ও লেবুর সঙ্গে এক চিমটি পরিমাণ লবণ, বিট লবণ বা পিংক সল্ট মিশিয়ে পান করতে পারেন। চিনি দেওয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে, চিনি শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই লেবু পানিও চমৎকারভাবে শরীরের ইলোকট্রোলাইট ব্যালান্স করতে সাহায্য করবে। সারাদিনে শরীরে যে ভিটামিন সি’র ঘাটতি তৈরি হয়, সেটিও পূরণ করবে এটি। ভিটামিন সির চাহিদা পূরণ হলে রোজার মাসে ঠান্ডা, জ্বর, কাশি হওয়ার ঝুঁকি একটু কমে যাবে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে।
ফলের রস: বাসায় যেকোনো সতেজ ফলের জুস তৈরি করে খেতে পারেন। ফলের রস অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ এবং ভিটামিন ও মিনারেলসে ভরপুর। এই ফলের রসের মধ্যে ইসবগুল, তোকমা, চিয়াসিড যোগ করে খাওয়া হলে তখন সেটি ফাইবার সমৃদ্ধ পানীয় হবে। এ ধরনের পানীয় শরীরকে দীর্ঘক্ষণ হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।
ডাবের পানি: রোজার সময় দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থেকে কাজ করার ফলে ঘাম হয়। ফলে ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালান্স হয়। ডাবের পানি প্রাকৃতিকভাবে মিনারেলস সমৃদ্ধ পানীয়। ইফতারে এক গ্লাস ডাবের পানি খেলে শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স হবে।
মিল্কশেক : দুধ দিয়ে তৈরি করা যেকোনো শেক ইফতারে খেতে পারেন। এতে মেশাতে পারেন খেজুর, বাদাম, পেঁপে বা পছন্দের যেকোনো ফল।
গাজরের জুস: বিশেষ করে বাচ্চা ও বয়স্ক যারা রোজা রাখেন তাদের জন্য উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ পানীয় গাজরের জুস। গাজরের জুস বা স্মুদিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ থাকে।হারবাল টি: ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত এক বা দুই কাপ হারবাল টি খেতে পারেন। গ্রিন টি, তুলসি টি ইত্যাদি হতে পারে। এগুলো খাবার হজম করতে সাহায্য করবে। ফ্যাট জাতীয় খাবার বেশি গ্রহণ করা হলে বিএমআর বাড়িয়ে সেই ফ্যাটকে দ্রুত বার্ন করতে সাহায্য করে এগুলো।
আপেলের জুস: আপেল ভালোভাবে পরিষ্কার করে কেটে নিন। খোসা ও বিচি বাদ দেবেন। এবার আপেলের টুকরাগুলো ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ড হয়ে গেলে ছেঁকে নিন যাতে শরবত পরিষ্কার দেখা যায়। পানি ও পরিমাণমতো চিনি মিশিয়ে আধা ঘণ্টার মতো ফ্রিজে রেখে দিন। এরপর ফ্রিজ থেকে বের করে বরফ কুচি ও পুদিনা পাতা দিয়ে পরিবেশন করুন।
ডালিমের জুস: ডালিমের খোসা ছাড়িয়ে রসালো বিচিগুলো বের করে নিন। এরপর ব্লেন্ডারে দিয়ে রস বের করে নিন। এতে কিছু পানি এবং লেবুর রস দিয়ে মিশ্রিত করে নিন। রসে পরিমাণ মতো চিনি ও লবণ দিয়ে নেড়ে নিন। এরপর একটি জগে ছেঁকে নিয়ে ঠাণ্ডা করার জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। ইফতারের সময় বের করে গ্লাসে ঢেলে পরিবেশন করুন।
বেলের শরবত: যাদের শরীর বেশি ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয় তারা বেলের শরবত খাবেন। এটি খুবই উপকারী পানীয়। বেল যদি মিষ্টি না হয় তখন প্রয়োজনে চিনির বিকল্প উপাদান মিছরি, যষ্টিমধু, খেজুরের পাউডার, গুড় ইত্যাদি দিয়ে শরবত তৈরি করা যেতে পারে।
এসব পানীয়তে চিনির বিকল্প উপাদান ব্যবহার করতে হবে। তাহলেই পানীয় স্বাস্থ্যকর হবে।
যে কারণে ইফতারে রাখবেন স্বাস্থ্যকর দই-চিড়া
সারাদিন রোজার পর ক্লান্ত হয়ে পড়ে শরীর। প্রয়োজন একটু সতেজতা। আপনার শরীরে সেই সতেজতা এনে দিতে পারে দই চিড়া। একই সঙ্গে বাড়বে হজম প্রক্রিয়া, দূর হবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। চিড়া কার্বোহাইড্রেটের অন্যতম উৎস। প্রোটিন, খাদ্য আঁশ, জিংক, আয়রনের উৎস। এ ছাড়া এতে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। সারাদিন রোজা রাখার পর আমাদের শরীরের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ শক্তি সরবরাহ করতে পারে এই চিড়া। সাদা চিড়ার পরিবর্তে লাল চিড়া খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ইফতারে মিষ্টি দইয়ের চেয়ে টক দই বেশি উপকারী। ইফতারে চিড়া-গুড় কিংবা দই-চিড়াও খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই। চিড়া ভিজিয়ে তাতে চিনি, গুড় কিংবা দই মিশিয়ে খাওয়া হয়। চিড়া আমাদের পেট ঠান্ডা করে, পানির অভাব পূরণ করে এবং একইসঙ্গে ক্ষুধা মেটায়।
পুষ্টিবিদদের মতে, স্বাস্থ্যের অবস্থা ও বয়সের ওপর ভিত্তি করে পরিবারের সবার জন্য স্বাস্থ্যকর, ভিটামিন ও মিনারেলসমৃদ্ধ ইফতার হওয়া উচিত। যা শারীরিক শক্তি জোগাবে, কর্মচঞ্চল রাখবে, প্রোটিন, শর্করাসহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করবে। শরীরের পানিশূন্যতা পূরণ করবে, ক্লান্তি ভাব দূর করতে কাজ করবে তেমনই একটি খাবার দই চিড়া।
পুষ্টিবিদরা জানান, চিড়ায় পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকার জন্য কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা অনেক। সিলিয়াক ডিজিজের রোগীদের জন্যও চিড়া খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। চিড়া আমাদের পেট ঠান্ডা করে, পানির অভাব পূরণ করে এবং একইসঙ্গে ক্ষুধা মেটায়। চিড়ায় আঁশের পরিমাণ অনেক কম থাকে, যা ডায়রিয়া, ক্রনস ডিজিজ, আলসারেটিভ কোলাইটিস, অন্ত্রের প্রদাহ এবং ডাইভারটিকুলাইসিস রোগ প্রতিরোধে এর উপকারিতা অনেক। জেনে নিতে পারেন ইফতারে দই চিড়া খাওয়ার দারুণ এই রেসিপি।
দই চিড়া তৈরিতে যা যা লাগবে-
টক দই (২ কাপ), চিড়া (১/২ কাপ), পাকা কলা (স্কয়ার করে কাটা ১টি), চিনি (প্রয়োজন মতো), লবণ (প্রয়োজন মতো), এলাচি গুঁড়া (১/৪ চা চামচ), কিসমিস (১ টেবিল চামচ)।
যেভাবে তৈরি করবেন-
প্রথমে চিড়া ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এরপর বাটিতে টকদই, চিনি ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে ফেটে নিতে হবে। ফেটানো দইয়ে চিড়া মেখে ফ্রিজে রাখুন। এক ঘণ্টা পর ফ্রিজ থেকে বের করে কলা, এলাচি গুঁড়া ও কিশমিশ ভালোভাবে মিশিয়ে পরিবেশন করুন।
হাড়কে মজবুত করতে একাই একশো যে পাতা
বর্তমানে বয়স ত্রিশ হলেই অনেককে হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। যদিও আগে অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ের ক্ষয়জনিত এই সমস্যাকে বার্ধক্যের রোগ বলে মনে করতেন বিশেষজ্ঞরা, যা এখন আর বার্ধক্যের রোগ নেই। আর তাই বিশেষজ্ঞরা ৮ থেকে ৮০ বছরের সকলকেই হাড়ের জোর বাড়ানোর পরামর্শ দেন। আর ভালো খবর হলো, এই কাজে আপনাকে সাহায্য করবে অতি পরিচিত ধনেপাতা। তাই আর সময় নষ্ট না করে হাড়ের জোর বাড়ানোর কাজে ধনেপাতার কার্যকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
১. ইমিউনিটি : আমাদের আশপাশে উপস্থিত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচতে আপনাকে ইমিউনিটি বাড়াতে হবে। তা না হলে যে বারবার জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যায় পরতে হবে। এবার আপনার মাথায় প্রশ্ন আসতেই পারে, ঠিক কোন খাবার খেলে বাড়বে ইমিউনিটি? তার উত্তর, আমাদের অতি পরিচিত ধনেপাতায় রয়েছে ভিটামিন সি-এর ভাণ্ডার যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে চাঙ্গা করার কাজে দারুণ কার্যকরি। তাই সুস্থ-সবল জীবন চাইলে ঝটপট এই পাতার শরণাপন্ন হন।
২. খনিজের ভাণ্ডার : এই পাতায় রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফসফরাসের ভাণ্ডার। আর এই সমস্ত খনিজ হাড়ের জোর বাড়ানোর কাজে বেশ কার্যকর। তাই তো সব বয়সীদেরই নিয়মিত ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত, যারা ইতিমধ্যেই হাড়ের ক্ষয়জনিত অসুখের পড়ে কষ্ট পাচ্ছেন, তাদের পাতে তো এই পাতা থাকা জরুরি।
৩. ব্লাড সুগার : যাদের হাই ব্লাড সুগারের মতো সমস্যা রয়েছে, তাদেরকে এই অসুখ বশে রাখতেই হবে। আর সেই কাজেও আপনার হাতিয়ার হতে পারে ধনেপাতা। কারণ এই পাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ইনসুলিনের ক্ষরণ বাড়ায়। আর শরীরে ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পেলে যে অনায়াসে ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন, তা তো বলাই বাহুল্য। তাই ডায়াবেটিকদের ডায়েটে এই পাতা থাকা প্রয়োজন।
৪. কোলেস্টেরল : রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে হার্ট ডিজিজ, পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ থেকে শুরু করে একাধিক জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। আর কোলেস্টেরলকে বশে রাখতে আপনাকে সাহায্য করবে ধনেপাতা। তাই হাইপারলিপিডিমিয়ায় ভুক্তভোগীদের খাবার তালিকায় ধনেপাতা থাকতেই হবে।
৫. কমবে জয়েন্টের ব্যথা : ধনেপাতায় রয়েছে কিছু অত্যন্ত উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদানের ভাণ্ডার যা কি না ব্যথা প্রশমিত করার কাজ করে। তাই অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা গাউট আর্থ্রাইটিসে ভুক্তভোগীরা যত দ্রুত সম্ভব এই পাতার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে নিন। তাতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে। তবে শুধু হাড়ের জোর বাড়ানো নয়, এর পাশাপাশি আরও একাধিক উপকার করে এই পাতা।
মুঠো ভর্তি চুল উঠছে, ভয়াবহ অসুখ কি না জানুন এই ৫ পরীক্ষায়
আবহাওয়ার পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণ, অযন্ত এবং অস্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইলের কারণে অধিকাংশ মানুষই চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এই কথাও ঠিক যে, কয়েকটি বিশেষ শারীরিক সমস্যার কারণেও আপনার চুল পরার সমস্যা বাড়তে পারে। তাই তো অতিরিক্ত চুল ঝরতে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু রক্ত পরীক্ষা করানো জরুরি বলে জানালেন ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞ, ডা. অপরাজিতা লাম্বা। সাম্প্রতিক তার একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনাও করলেন তিনি।
জেনে নিন অতিরিক্ত চুল পরলে কোন বিষয়গুলো নজরে রাখবেন-
শরীরে থাইরয়েড গ্রন্থি ঠিকঠাক কাজ না করলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই হাইপোথাইরেয়ডিসম বা হাইপারথাইরয়েডিসমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। শরীরে এই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে অন্যান্য উপসর্গ প্রকট হওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত মাত্রায় হেয়ার ফলও শুরু হয়। তাই আপনি যদি প্রচুর পরিমাণে চুল পড়তে দেখেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট করিয়ে নিন।
চুলের জেল্লা বাড়াতে এবং গোড়া মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আয়রন। তাই আপনার শরীরে যদি আয়রনের ঘাটতি দেখা যায়, তাহলে যে চুল পড়া বাড়বেই, সে কথা আর বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। তাই তো এমন কোনও উপসর্গ দেখলেই রক্তে আয়রনের মাত্রা পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিলেন ডা. লাম্বা।
কোনও মহিলার শরীরে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম থাকলে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। আর তখনই বাড়ে হেয়ার ফল। তাই আপনিও যদি অকারণে এমন সমস্যার মুখোমুখি হন, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে USG করান।
এই ২ উপাদানের ঘাটতি আছে কি না জেনে নিন-
চিকিৎসক জানালেন, শরীরে ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলেও প্রচুর পরিমাণে চুল ঝরে যায়। তাই অতিরিক্ত মাত্রায় চুল পড়তে দেখলে অবশ্যই রক্তপরীক্ষা করুন এবং দেখে নিন যে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর মাত্রা ঠিক রয়েছে কি না।
আসলে ভিটামিন ডি আপনার চুলের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, একই সঙ্গে চুলের গোড়াও মজবুত করে।