• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

দাঁতের রোগ সম্পর্কে ভুল ধারণা

লাইফস্টাইল ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ২৬ মার্চ ২০১৭, ১৬:০৮

আমাদের দেশে দাঁতের রোগ এবং চিকিৎসার ব্যাপারে অনেকেরই রয়েছে ভুল ধারণা ও কুসংস্কার। চিকিৎসা সম্পর্কে ভুল ধারণা খুবই মারাত্মক বিষয়।

অনেক সময় সঠিক চিকিৎসার অভাব ও ভুল ধারণার জন্য রোগীর জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়। তো আর দেরি কেনো?

চলুন জেনে নেয়া যাক দাঁতের রোগ সম্পর্কে ভুল ধারণা ও কুসংস্কার।

  • আমাদের দেশে অনেকে এখনো বিশ্বাস করেন দন্তক্ষয় হলে দাঁতের মধ্যে পোকার সৃষ্টি হয়। এ কারণে দাঁতে ব্যথা হয়। এ বিশ্বাসের মূলে রয়েছে বিভিন্ন কুসংস্কার। তাহলে প্রশ্ন জাগে- কীভাবে পোকা বের করা হয়। আমাদের দেশে বেদে-বেদেনিরা ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে বড় বড় পোকা দাঁতের ভেতর থেকে বের করে দেখান। তারা আসলে আগে থেকেই ওই সব পোকা বিভিন্ন ময়লা জায়গা থেকে সংগ্রহ করে। ঝাড়ফুঁক দেয়ার সময় ওই সব পোকা অত্যন্ত কৌশলে হাতের কারসাজির মাধ্যমে প্রদর্শন করে। সুতরাং বেদে-বেদেনি বা ভণ্ড ফকিরদের দাঁতের পোকা উঠানোর কথা কোনো প্রকারেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।আমাদের মুখের মধ্যে যে স্বাভাবিক তাপ থাকে অথবা আমরা যখন গরম খাদ্য, চা বা দুধ ইত্যাদি পান করি সে অবস্থায় ওই ধরনের পোকা বাঁচতে পারে না। পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষই দন্তমজ্জা বা মাড়িসংক্রান্ত রোগের ব্যথা হলে অনেক ক্ষেত্রে দাঁত উঠিয়ে ফেলেন। বিভিন্ন ডেন্টাল হাসপাতাল বা ক্লিনিকে এ ধরনের উঠিয়ে ফেলা দাঁতের মধ্যে কেউ কোনো দিন ওই ধরনের পোকা দেখেননি।

  • আমাদের দেশে অনেকেই ধারণা করেন, দাঁতে যে পাথর জমে তা ফেলে দিলে দাঁত নড়তে থাকে এবং দাঁতের ক্ষতি হয়। আমরা জানি, শরীরের বিভিন্ন জায়গা যেমন-গলব্লাডার, মূত্রাশয়, কিডনি ইত্যাদি স্থানে পাথর হয়, তেমন দাঁতেও পাথর জমে। দাঁতে পাথর জমলে মাড়িকে ধীরে ধীরে ক্ষয় করে ফেলে এবং মারাত্মক মাড়ি রোগ দেখা দয়ে। ফলে দাঁতের শিকড় যে অস্থির সাহায্যে চোয়ালের মধ্যে আটকে থাকে তা ক্ষয় হয়ে যায় এবং দাঁত নড়তে থাকে। শেষ পর্যায়ে দাঁত ফেলে দিতে হয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে, পাথর দাঁতের ক্ষতি ছাড়া কোনো মঙ্গল করে না। সুতরাং পাথর হলে অবশ্যই তা সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার করে ফেলেতে হবে।
  • অনেক সময় সঙ্গতি থাকা সত্বেও অনেকে টুথপেস্ট ও ব্রাশ ব্যবহার করে না। কারণ তারা মনে করে, টুথব্রাশ ব্যবহার করলে দাঁত ফাঁকা এবং দাঁতের এনামেল ক্ষয় হয়ে যায়। মুখ ও দাঁত পরিষ্কার করার প্রধান উদ্দেশ্য হলো, দাঁতের ফাঁকে যেসব খাদ্যকণা আটকে থাকে এবং এনামেলে যে জীবাণু প্রলেপ জমে তা দূর করা। কারণ জীবাণু প্রলেপই দাঁতের বিভিন্ন প্রকার রোগ সৃষ্টি করে। খাদ্যকণা ও জীবাণু প্রলেপ দূর করতে ব্রাশ ব্যবহারই সবচে’ ভালো। মেছওয়াক বা নিমের ডাল ব্যবহারে সেরকম ভালো ফল পাওয়া যায় না। দাঁতে ফাঁক বা এনামেল ক্ষয় সাধারণত অন্য কারণে হয়ে থাকে। দাঁতের ক্ষেত্রে টুথব্রাশ ব্যবহার করাই উত্তম। সেইসঙ্গে ফিলাল এবং ডেন্টাল পলস ব্যবহার করা যেতে পারে।

  • দাঁতের রোগ হলে অনেক ক্ষেত্রে দাঁত ফেলে দেয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকে না। এ ব্যাপারে অনেকেই মনে করেন, দাঁত ফেলে দিলে চোখের জ্যোতি কমে যায়। প্রকৃতপক্ষে ব্যাপারটা অন্যরকম। কতোগুলো ভালো আপেলের সঙ্গে যদি একটি খারাপ আপেল থাকে, তবে খারাপ আপেলটি অন্য ভালো আপেলগুলোকেও ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়। তেমনি একটি খারাপ দাঁত আশপাশের ভালো দাঁতকে নষ্ট করে ফেলতে পারে। এছাড়া একটি খারাপ দাঁতে সাধারণত অসংখ্য জীবাণু থাকে। এসব জীবাণু শরীরের রক্তের সঙ্গে মিসে যায় এবং শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ যেমন-চোখ, কান, কিডনি, হৃদপিন্ড ইত্যাদিতে রোগের সৃষ্টি করে। সেজন্য দাঁত ফেলে দিলে চোখের জ্যোতি কমে যাবে-এ ধারণা সঠিক নয়।

আরকে/ডিএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • লাইফস্টাইল এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh