যে কাপে চা খাওয়া মানে মারাত্মক বিপদ!
আড্ডার সঙ্গী প্রিয় চা। মন চাইলে আমরা পথেঘাটে আড্ডা জমাই। তবে সঙ্গে অবশ্য চা চাই। তবে এখন মাটির কাপে চা খাওয়ার অভ্যাস উঠে গেছে। মাটির কাপের জায়গায় স্থান নিয়েছে প্লাস্টিকজাতীয় ডিজপোজেবল কাপ। ট্রেনে, স্টেশনে, বিভিন্ন জায়গায় এই কাপে চা দেন বিক্রেতারা।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন এই কাপে চা খাওয়ার ফল হতে পারে মারাত্মক। সম্প্রতি এমনটা জানিয়েছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, খড়গপুর।
আইআইটির গবেষকদের স্টাডিতে দেখা গেছে, যদি কোনও ব্যক্তি দিনে তিনবার এই কাপে চা পান করেন তাহলে তিনি আদতে ৭৫ হাজার মাইক্রোপ্লাস্টিক পার্টিকল খেয়ে নিচ্ছেন অজান্তে।
এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন আইআইটি খড়গপুরের সহকারী অধ্যাপক সুধা গোয়েল, তিনি জানান, এই ডিসপোজেবল পেপার কাপগুলি বর্তমানে যেকোনো পানীয় গ্রহণের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় পছন্দ হয়ে উঠেছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, এই কাপে গরম পানীয় পরিবেশন করলে মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং অন্যান্য বিপজ্জনক উপাদানগুলোর আস্তরণ উঠে গিয়ে তা শরীরে ঢুকে যাচ্ছে।
কাগজের কাপে সাধারণত হাইড্রোফোবিক ফিল্মের একটি পাতলা স্তর থাকে যা বেশিরভাগ প্লাস্টিকের (পলিথিন) তৈরি। ১৫ মিনিটের বেশি সময় গরম পানীয় থাকলেই নষ্ট হয়ে যেতে শুরু করে এই কাপ।
আইআইটির অধ্যাপক বলেন, আমাদের সমীক্ষা অনুসারে ২৫ হাজার মাইক্রনের (১০ µm থেকে ১০০০ µm) মাইক্রোপ্লাস্টিক কণাগুলো পেপার কাপগুলোতে ১০০ মিলি গরম তরল (85 – 90 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) এ দিলেই গলতে শুরু করে। যেহেতু এই কণাগুলো ক্ষুদ্রতর মাইক্রোপ্লাস্টিক তাই সকলের চোখে অদৃশ্যই থাকে।
দুটি ভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করে পরীক্ষা করা হয়। প্রথম পরীক্ষাতে গরম আল্ট্রা পিওর (মিলিকিউ) জল (85-90 ডিগ্রি সেলসিয়াসে) ডিজপোসেবল কাগজের কাপগুলোতে দেয়া হয়েছিল। এরপর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করা হয়। এরপর সেই মিশ্রিত পানিতে মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলোর উপস্থিতি পাওয়া যায়। অতিরিক্ত আয়নগুলোর জন্য যখন বিশ্লেষণ করা হয় তখন তা কাগজের কাপগুলো থেকে তরল পদার্থের সঙ্গে বেরিয়ে আসে।
এরপর হাইড্রোফোবিক ফিল্ম সরিয়ে যখন পেপার লেয়ারটিকে ঈষদুষ্ণ গরম পানিতে দেয়া হলে প্যালাডিয়াম, ক্রোমিয়াম এবং ক্যাডিয়াম রাসায়নিক পদার্থগুলোও ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে শুরু করে। দেখা গেছে এই জাতীয় প্লাস্টিকের কাপে গরম পানি রাখা মানে সেটির মধ্যে ফিজিক্যাল, কেমিক্যাল এবং মেকানিকাল পরিবর্তনও ঘটে।
সূত্র- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
জিএ
মন্তব্য করুন