আরববিশ্বের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হলেন নাজলা
মধ্যপ্রাচ্যে আরব বসন্ত নামে যে গণবিক্ষোভ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার সূচনা হয়েছিল সেই দেশটি হচ্ছে তিউনিসিয়া। দেশটি’র গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ দাবানলের মতই ছড়িয়ে পড়েছিল আরব বিশ্বের এক বিরাট অংশ জুড়ে। আর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ সংবিধানের বেশিরভাগ অংশ বাতিল করে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন।
তিউনিসিয়া রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সামাজিক অস্থিরতা ও গণঅসন্তোষ সব মিলিয়ে এক নজিরবিহীন সংকটে পড়েছে। রাজনৈতিক অসন্তোষ ও আন্তর্জাতিক চাপ দূরীকরণে নাজলা বাউডেন রোমধানেকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দিয়েছেন তিউনিসিয়ান প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ। ফলে তিউনিসিয়া তো বটেই, আরব বিশ্বের মধ্যে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হলেন নাজলা।
চলতি বছরের জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রীকে বহিষ্কার ও পার্লামেন্ট স্থগিত করে নির্বাহী ক্ষমতার সিংহভাগ নিজের করে নেন প্রেসিডেন্ট সাইদ। নতুন সরকার গঠনের পর অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে চাপ বাড়ায় নাজলাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেছেন এ নেতা।
গত সপ্তাহে সংবিধানের বেশিরভাগ অংশ বাতিল করে ডিক্রির মাধ্যমে দেশ শাসনের বন্দোবস্ত করেন সাইদ। সেই বিধানমতেই নাজলাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
তিউনিসিয়ান প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। এতে সাইদ ও নাজলাকে বৈঠক করছেন। এসময় নাজলাকে আগামী কয়েক ঘণ্টা অথবা দিনের মধ্যে নতুন সরকার গঠনের ভার দেওয়া হয়।
ভিডিওতে সাইদকে বলতে শোনা যায়, তিউনিশিয়ার ইতিহাসে এই প্রথম কোনো নারী সরকারের নেতৃত্ব দেবেন। এটি তিউনিসিয়া ও তিউনিসিয়ার নারীদের জন্য অত্যন্ত সম্মানের বিষয়।
৬৩ বছর বয়সী নাজলার বিশ্বব্যাংকে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিউনিসিয়ার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জ্যেষ্ঠ পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ভূতাত্ত্বিক প্রকৌশলে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী এ নারী দেশটির ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের একজন প্রভাষক।
প্রসঙ্গত, উত্তর আফ্রিকার ভূমধ্যসাগরতীরবর্তী দেশ তিউনিসিয়া। ২০১১ সালের আরব বসন্ত নামের গণবিক্ষোভে দেশটির দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট জিনএল আবিদিন বেন আলি উৎখাত হবার পর থেকে এ পর্যন্ত তিউনিসিয়ায় ৯টি সরকার ক্ষমতায় এসেছে এবং বিদায় নিয়েছে। কোনো কোনো সরকারের আয়ু ছিল মাত্র কয়েক মাস।
সূত্র: আল জাজিরা, সিএনএন
মন্তব্য করুন