ফ্লোরিডায় আত্মগোপন এবং বিয়ে রক্ষা, কোনোটাই করতে পারলেন না সেই পুলিশ অফিসার
জাল টাকা লেনদেনের অভিযোগে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের মিনিসোটা অঙ্গরাজ্যের পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক সোভিন এর হাতে জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হবার অভিযোগ ওঠার পর থেকেই ক্ষোভে এবং বিক্ষোভে উত্তাল গোটা যুক্তরাষ্ট্র। পথচারীদের মোবাইল ফোনে ধারণ করা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায় ফ্লয়েড আটক এড়াতে পুলিশের সাথে কোনো ধস্তাধস্তি করেননি। তাছাড়া হাতকড়া পড়ানোর পরেও পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক সোভিন হাটু দিয়ে চাপা দিয়ে অসংখ মানুষের সামনের যেভাবে ফ্লয়েডের শ্বাসরোধ করেছিল, তা আমেরিকার ইতিহাসে পুলিসি বর্বরতার অতীতের সব রেকর্ডকে হার মানায়।
সোভিনের এই আচরণকে অনেকেই বর্ণবাদী আচরণ হিসেবেই মনে করেছেন এবং গত মঙ্গলবার থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করার দাবি ক্রমেই জোরালো হতে থাকে। থার্ড ডিগ্রি হত্যার অভিযোগে গত রাতেই সোভিনকে গ্রেপ্তার করে জেল এ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাতেও জনগণের বাঁধভাঙা বিক্ষোভ থামানো যাচ্ছে না।
এই প্রতিবেদক গতকাল সোভিনের ফ্লোরিডার অরেঞ্জ কাউন্টিতে অবস্থিত অবকাশ বাড়ির সামনে গিয়ে দেখতে পান শত শত মানুষের বিক্ষোভ। এলিস হার্পমান নামের এক বিক্ষোভকারী আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি কল্পনা করতে পারছি না এমন একটি পাষণ্ড হৃদয়ের মানুষ এতদিন ধরে আমার প্রতিবেশী হিসেবে এখানে এই ফ্লোরিডাতেই বাস করতো। তাকে কখনো পুলিশ এর পোশাকে এখানে দেখিনি। তবে তার চলাফেরা খুব অস্বাভাবিক ছিল। আমি এখনো ভাবতে পারছি না এই মানুষটি একটি খুনি।’
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রেপ্তার এড়াতে সোভিন মিনিসোটা থেকে পালিয়ে ফ্লোরিডার বাসায় অবস্থান করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও ফুটেজ এর কল্যাণে ফ্লোরিডার যে বাসায় তিনি থাকতেন, সেখানকার প্রতিবেশীরা তার সম্পর্কে জেনে যায় এবং তারা তার বাসার সামনেই অবস্থান নেয় এবং মূলত এ কারণেই সোভিন অবস্থা বেগতিক দেখে সেখানে আর যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অরেঞ্জ কাউন্টি এর এক পুলিশ কর্মকর্তা আরটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে গত রাতেই সোভিনকে রামসি কাউন্টি জেল এ হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় সময় আজ সকালে সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডার এর অভিযোগে নতুন একটি চার্জ গঠন করা হয়েছে। তাছাড়া এই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে সোভিনের স্ত্রী কেলি সোভিন গতকাল রাতেই তার আইনজীবীর মাধ্যমে সোভিনের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন।
জিএ/
মন্তব্য করুন