• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ভারতে লকডাউন সত্ত্বেও করোনা ছড়াচ্ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ২৭ মার্চ ২০২০, ১৪:০৬
ভারতে লকডাউন সত্ত্বেও করোনা ছড়াচ্ছে
ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে লকডাউনের তৃতীয় দিন। তারপরেও ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২০ জন। মারা গিয়েছেন ৫ জন। সবমিলিয়ে করোনায় আক্রান্ত হলেন ৭২৪ জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৭। একদিনে সব চেয়ে বেশি লোক আক্রান্ত হয়েছেন এবং সব চেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে গত ২৪ ঘণ্টায়।

মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে এ পর্যন্ত তিনজন করে করোনা আক্রান্ত মারা গিয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যাও ওই দুই রাজ্যে এবং কেরলে সব চেয়ে বেশি।

দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক অবশ্য দাবি করেছে, করোনাকে তুলনামূলকভাবে বেঁধে রাখা সম্ভব হয়েছে। বৃদ্ধির হারও মোটামুটি স্থিতিশীল। ভারত এখন করোনার স্টেজ ২ বা দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লাভ আগরওয়াল বলেছেন, ‘এখনও পর্যন্ত গোষ্ঠী সংক্রমণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকার পুরোপুরি প্রস্তুত।’

তা সত্ত্বেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার কারণ হিসেবে ফুসফুস বিশেষজ্ঞ পার্থ প্রতিম বোস জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রে সংখ্যাটা বাড়ার কারণ, সেখানে খুবই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সংক্রমণ পৌঁছে গিয়েছে। দিল্লিতে কড়াভাবে লকডাউন কার্যকর হয়েছে বলে সংখ্যাটা বাড়েনি। আর ভারত করোনার দ্বিতীয় পর্যায় পেরিয়ে এ বার তৃতীয় পর্যায়ে প্রবেশ করবে। এখানে ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের সংখ্যা প্রচুর। আমাদের দেশের লোকের এই ধরনের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও বেশি। আর যদি সংখ্যাতত্ত্ব দেখেন তা হলে সাধারণ সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্টে যে হারে লোক মারা যান, করোনায় লোকের মৃত্যুর হার তার চেয়ে কম। ফলে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। আরেকটা কারণে সংখ্যাটা বেশি লাগবে। আগে করোনার পরীক্ষাই হচ্ছিল না। এখনও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পরীক্ষা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সাত্যকি হালদার জানিয়েছেন, সব চেয়ে জরুরি হল করোনার পরীক্ষা হওয়া। কিন্তু পরীক্ষা করার মতো পরিকাঠামো ভারতে তৈরি হয়নি। এটাই উদ্বেগের।

এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রতিটি রাজ্যের সঙ্গে করোনা নিয়ে সমন্বয়ের দায়িত্ব নির্দিষ্ট করে একজন মন্ত্রীকে দিয়েছেন। তাদের কী প্রয়োজন, কোথায় অসুবিধা হচ্ছে, ভিন রাজ্যে কত শ্রমিক আটকে আছেন, কীভাবে তারা করোনা-রোধে সফল্য পাচ্ছেন মন্ত্রীরা সে সব জানবেন এবং অসুবিধা দূর করার চেষ্টা করবেন।
পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে রাজনাথ সিং ও মহেন্দ্রনাথ পান্ডে, মহারাষ্ট্রের সঙ্গে প্রকাশ জাভড়েকর এবং নীতিন গড়করি। এর পাশাপাশি কেন্দ্র নির্দেশ দিয়েছে, চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনও ওষুধের দোকান হাউড্রক্সিক্লোরোকুইন বিক্রি করতে পারবে ন। কারণ, নিজে থেকে ডাক্তারিকরে এই ওষুধ খেয়ে অনেকেরই সমস্যা হয়েছে।

লকডাউনের জন্য গরিবরা যাতে বিপাকে না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবারই (২৬ মার্চ) বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এখন বিভিন্ন জায়গায় যে সব শ্রমিক আটকে পড়েছেন, তাদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বা যদি তা সম্ভব না হয় তো খাবার ও আশ্রয় দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। শুক্রবার ভোর রাতে নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে পায়ে হেঁটে যে সব শ্রমিকরা বাড়ি ফিরছিলেন, তাদের বাসে করে নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছে সরকার। মুম্বইতেও ৮০ জন বাঙালি শ্রমিক আটকে পড়েছেন। তারা অভুক্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিলেন। তাদের কথা জানতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগাযোগ করেন উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে। তারপরেই তাদের খাবার ও সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীর কাছেও বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রায় তিন হাজার বাঙালি শ্রমিক যোগাযোগ করেছিলেন। তিনিও সেই সব রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে হয় তাদের বাড়ি পাঠাবার ব্যবস্থা করেছেন বা সেই সব রাজ্যে তারা যাতে খেতে পান ও নিরাপদে থাকতে পারেন, তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদি এ দিন ভোরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জি২০ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানেও তিনি সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রেখেছিলেন। বড় ঘরে মোদি সামনে বসেছেন। তার বেশ খানিকটা পিছনে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। তার থেকে দূরে বাকি দুই আধিকারিক। অবশ্য চিকিৎসকদের বক্তব্য, ভারতের মতো দেশে অধিকাংশ লোক এক কামরার ফ্ল্যাটে বাস করেন। গরিবরা শহরের বস্তিতে থাকেন। সেখানে সোশ্যাল ডিসটেন্সিং করা খুবই কঠিন কাজ।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
আরও ৩৫ জনের করোনা শনাক্ত
করোনায় প্রাণ গেলো আরও ১ জনের, শনাক্ত ৪৯
আরও ৪৬ জনের শারীরে করোনা
X
Fresh