• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo

করোনাভাইরাস: ভারতের ৮০ শহরে 'লকডাউন'

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ২৩ মার্চ ২০২০, ২৩:২০
করোনাভাইরাস: ভারতের ৮০ শহরে 'লকডাউন'
ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে ভারতের ৮০টি শহরে একযোগে শুরু হয়েছে লকডাউন। ভারতে এ পর্যন্ত ৪০০-র বেশি লোক করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছেন, মারা গেছেন ৭ জন। এই লকডাউন ভারতের নানা শহরে ভিন্ন ভিন্ন তারিখ পর্যন্ত চলবে। এই লকডাউনের সময় ওষুধের দোকান, পেট্রোলপাম্প, খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান খোলা থাকবে।

রাজধানী দিল্লিতে লকডাউন চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সতর্ক করে দিয়েছেন যে অনেক লোকই কর্তৃপক্ষের বিধিনিষেধগুলো গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না। তিনি রাজ্যগুলোকে কঠোরভাবে লকডাউন কার্যকর করতে বলেছেন।

কোলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের নানা শহর ও জেলায়ও সোমবার বিকেল ৫টা থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে - যা চলবে ২৭ মার্চ পর্যন্ত।

এর আগে রোববার সারা ভারত জুড়ে পালিত হয়েছিল ‘জনতা কারফিউ’, এবং সেদিনই বিকেলে এই লকডাউন পালনের কথা ঘোষণা করা হয়।

এ কারণে সোমবার সকাল থেকেই সাধারণ মানুষ আগামী কয়েকদিনের খাদ্যদ্রব্য কিনতে নেমে পড়েন। কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের সব দোকান-বাজারগুলিতে সকাল থেকেই ভীড় লেগেছিল। অনেক বিক্রেতাই আনাজপাতির দাম বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।

ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে গ্রাম থেকে পণ্য নিয়ে কোনও বিক্রেতা আসতে পারেননি। তাই বাজারগুলিতে সরবরাহ ছিল কম। সাধারণ বাজার ছাড়াও বড় বিপণিগুলিতে ভোর থেকেই মানুষ লাইন দিয়ে অপেক্ষা করেছেন। একেকজনের তিন থেকে চার ঘণ্টাও লেগেছে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে।

শপিং মলগুলি প্রায় সবই বন্ধ - শুধুমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া যায় সেখানে, সেই অংশগুলি খোলা রয়েছে।

নিরাপত্তাকর্মীরা একসঙ্গে বেশি মানুষকে সেখানে ঢুকতে দিচ্ছেন না, আবার মলের বাইরে যারা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তাদের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরত্ব রেখে দাঁড়াতে দেখা গেছে।

যেসব অনলাইন অ্যাপ রয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ করার, তারাও জানিয়ে দিচ্ছে অতিরিক্ত অর্ডারের ফলে তারা সবার অর্ডার নিতে অক্ষম।

আবার অন্যদিকে অনেক মানুষের মধ্যেই অতিরিক্ত জিনিস মজুত করার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।

যদিও সরকার বারে বারেই বলছে, দুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের দোকান খোলা থাকবে, তবুও অনেকেই বস্তা ভর্তি চাল, ট্রে ভর্তি ডিম, কয়েক কিলো আলু-পেঁয়াজ কিনে বাড়ি ফিরেছেন।

কলকাতার রাস্তা রোববার যেমন ছিল সুনশান, সোমবারের চেহারাটা ছিল কিছুটা অন্যরকম। স্বাভাবিক দিনের থেকে রাস্তায় কম গাড়ি বেরিয়েছে, মানুষও কম, তবুও রবিবারের তুলনায় তা অনেকটাই বেশি।

বহু মানুষের মুখে মাস্ক লাগানো। তবে রিকশাচালক বা বাসের ড্রাইভার-কনডাক্টর - এঁদের বেশিরভাগের মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি, নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়ারও বন্দোবস্ত নেই এদের ক্ষেত্রে।

সরকারি-বেসরকারি দপ্তরগুলিতে কিছু কর্মী গিয়েছিলেন - যারা কলকাতাতেই থাকেন। কিন্তু দুপুরের মধ্যেই সবাই বাড়ি ফিরে যান দপ্তর বন্ধ করে।

স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যারা জড়িত, তারা যাতে লকডাউন শুরু হয়ে গেলে গণপরিবহনের অভাব সত্ত্বেও কাজে যোগ দিতে পারেন, সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী হাসপাতালগুলিকে ডাক্তার-নার্সদের থাকার জন্য পার্শ্ববর্তী হোটেল বা গেস্ট হাউসে ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

ব্যানার্জী প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে আরও আর্জি জানিয়েছেন যাতে কলকাতা বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয় সাময়িকভাবে।

সকাল থেকে রাস্তায় গাড়ি ও মানুষ চলাচল করলেও দুপুরের পর থেকেই রাস্তা ফাঁকা হতে শুরু করে। রাস্তায় রাস্তায় পুলিশের ঘোষণা শোনা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, জনতা কারফিউয়ের সময় তা কঠোরভাবে পালন না করানো হলেও লকডাউনের ক্ষেত্রে তারা কঠোর হবে।

কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, মাঝে মাঝেই তল্লাশি চলবে এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রাস্তায় দেখলে বা কেউ নিজস্ব গাড়ি বার করলে মহামারী আইন অনুযায়ী তার জরিমানা এবং হাজতবাস হতে পারে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ভোটের দিন লকডাউনের ডাক এবি পার্টির
X
Fresh