• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

হাসপাতালে এক হাজার বছর বয়সি বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মূর্তি!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:৪৯
হাসপাতালে এক হাজার বছর বয়সি বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মূর্তি!

হাসপাতালে সাধারণত কোনও রোগীর চিকিৎসা করা হয়। তবে, এবার নেদারল্যান্ডসের দ্য মিয়েন্ডার মেডিকেল সেন্টারে এক হাজার বছর বয়সের বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয়।

অবশ্য ওই সন্ন্যাসী কোনও সাড়া দেন না, হাঁটাচলা করতে পারেন না এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসও নেন না। এতদিন তার ঠিকানা ছিল নেদারল্যান্ডসেরই একটি মিউজিয়াম।

স্থানীয়দের মধ্যে প্রচলিত ছিল যে ওই বৌদ্ধ মূর্তির ভেতরে এক মানবদেহ রয়েছে। তবে, সেটি সত্যাসত্য সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা জানতেন না। প্রাচীন এই রহস্যের ওপর আলোকপাত করার জন্যই মিউজিয়াম থেকে ওই বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মূর্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

সোনালি রঙের ওই ধাতব বৌদ্ধ মূর্তির সিটি স্ক্যান করার পরই তাজ্জব হয়ে যান উপস্থিত চিকিত্সক এবং গবেষকরা। দেখা যায়, বাইরে দেখে যা নেহাতই মূর্তি, তার ভিতরে পদ্মাসনে ধ্যানে মগ্ন এক সন্ন্যাসী! যার নাম লিউকুয়ান।

সিটি স্ক্যানে দেখা যায়, ওই সন্ন্যাসীর দেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কিছুই ছিল না। পরিবর্তে তার দেহের ভিতরে বৌদ্ধ ভাষায় লেখা কাপড় ভরা ছিল। কীভাবে তার দেহ থেকে সমস্ত অঙ্গ বের করে নেওয়া হল, কীভাবে তার মমি তৈরি হল তা এখনও রহস্যই রয়েছে। বিস্তর গবেষণাও চলছে এ নিয়ে।

এদিকে, নিজেই নিজের দেহের মমিফিকেশন জাপানে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের মধ্যে খুবই প্রচলিত প্রথা। এশিয়া জুড়েই এমন রীতির চল ছিল বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের মধ্যে। চিনেও এ রকম দেখা গিয়েছে।

জানা যায়, কড়া ডায়েটের মাধ্যমে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা নিজেদের দেহ মমি বানাতেন। এর জন্য তারা চাল, গম, সোয়াবিন জাতীয় কোনও বস্তুর পরিবর্তে বাদাম, বেরি, গাছের ছাল খেতেন। এতে নাকি আস্তে আস্তে তাদের শরীরের চর্বি গলে যেত এবং শরীর আর্দ্রতা হারিয়ে ক্রমশ শুষ্ক হয়ে উঠত। এইভাবে দীর্ঘদিন ধরে কড়া ডায়েটের ফলে কোনও সন্ন্যাসী যখন একেবারেই মৃতপ্রায়, তখন তাকে মাটির নীচে একটি কক্ষে স্থানান্তর করা হত। তিনি সেই কক্ষের ভিতরেই ধ্যানে বসতেন। আর বাঁশের তৈরি একটি ফানেলের মধ্যে দিয়ে শ্বাস নিতেন। প্রতিদিন তিনি ঘণ্টা বাজিয়ে বোঝাতেন যে, তিনি বেঁচে আছেন। যে দিন তিনি ঘণ্টা আর বাজাবেন না, সে দিনই ধরে নেওয়া হত তিনি মারা গিয়েছেন। তারপর বাঁশের ফানেলটা খুলে নেওয়া হত।

এভাবেই তিনি মাটির নীচে ওই কক্ষে পড়ে থাকতেন। তিন বছর পর অন্য সন্ন্যাসীরা তাঁকে কক্ষ থেকে বের করে মন্দিরে নিয়ে গিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতেন। কোনও সন্ন্যাসীর যদি মমিফিকেশন না হয়ে থাকে, তা হলে তাকে কবর দেওয়া হত।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারিতে যেমন পদ্মাসনে ধ্যানমগ্ন হয়ে বসে থাকা প্রায় দুশো বছরের পুরনো এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর মমি উদ্ধার হয়েছে। পূর্ব এশিয়ার মঙ্গোলিয়ায় ওই মমির খোঁজ মেলে। তার সারা দেহ পশুর চামড়া দিয়ে আবৃত ছিল।

এজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh