চীনে করোনাভাইরাস আক্রান্ত বাবা হাসপাতালে, অবহেলায় শিশুর মৃত্যু
করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে বাবাকে সরিয়ে নিয়েছিল প্রশাসন। বাড়িতে ছিল বিশেষ শিশু। চীনের হুবেই প্রদেশের ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোরের নাম ইয়ান চেং। সেরিব্রাল পলসি আক্রান্ত চেং আর পাঁচজনের চেয়ে একেবারেই আলাদা।
চেং মুক ও বধির। কোনও কাজও নিজে করতে পারে না। তার মা অনেক আগেই মারা গেছেন। বাবাই তার পরিচর্যা করতেন। কিন্তু প্রাণঘাতী ভাইরাসের আক্রমণে এখন বিপর্যস্ত চীন। সংক্রমণ রুখতে চিনে বিভিন্ন প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চেংয়ের বাবার জ্বর হওয়ায় তাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়িতে একা থাকা অবস্থায় চেংয়ের মৃত্যু হয়।
চেং নিজের হাতে খেতেও পারেন না। তার রোজকারের জীবনযাপনের জন্য তার সবসময় সাহায্য প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেটা না পেয়েই মৃত্যু হয় চেংয়ের। গত ২২ জানুয়ারি ইয়ান চেংয়ের বাবা ইয়ান জিওয়াওয়েনকে জ্বরের জন্য আইসোলেশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। পাঁচদিন পর তার শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়।
এরপর তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন জানিয়েছিলেন, কেউ একজন তার বাড়িতে গিয়ে যেন তার সন্তানকে দেখেন। কিন্তু করুণ বাবার এই আবেদন বড় দেরিতে এসেছিল। হোনগান কাউন্টি সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, চেংয়ের মৃত্যু হয়েছে।
সরকারি বিবৃতিতে জানা গেছে, ইয়ান জিয়াওয়েন নিজের ছেলে ইয়ান চেংয়ের প্রতিদিনের দায়িত্ব সামলাতে পারেননি। তাই যে আত্মীয় ও গ্রামবাসীদের তিনি বিশ্বাস করেছিলেন তারাও সেটা করতে পারেননি।
এদিকে যাদের দায়িত্বে ছেলেকে রেখে গিয়েছিলেন জিওয়াওয়েন, তারা সঠিক দায়িত্ব পালন না করতে পারায় তাদের চাকরি গেছে। স্থানীয় কমিউনিস্ট পার্টি সচিব ও মেয়রকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে কিশোরের মৃত্যুর কারণ এখনও সরকারিভাবে জানানো হয়নি।
অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর আসার পর অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। হুবেই প্রদেশের বিভিন্ন কার্যকলাপকে দোষারোপ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার ওয়েইবো নামক সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনাটি নিয়ে মোট ২৭ কোটি বার লেখা হয়েছে। মেয়রকে সরিয়ে দেয়া হোক এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার হয়েছে ৬ কোটি বার।
এ/পি
মন্তব্য করুন