রাশিয়ায় বন্ধু বাঘকে বিরক্ত করে প্রাণ হারালো ছাগল
রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় বন্দর ব্লাডিভোস্টকের এক সাফারি পার্কে আমুর নামের একটি সাইবেরিয়ান বাঘের আস্তানায় ২০১৫ সালে তার শিকার হিসেবে তিমুর নামের একটি ছাগল পাঠানো হয়। আস্তানায় ঢোকার পরও আমুর ছাগলটিকে হত্যা করা তো দূরের কথা স্পর্শ পর্যন্ত করেনি।
আসলে বাঘটিকে দেখে মোটেও ঘাবড়ায়নি তিমুর। সম্ভবত, ফুরফুরে মেজাজের ছাগলটিকে শিকারের বদলে বন্ধু হিসেবেই বেছে নেয় বাঘটি। পার্কটির ডিরেক্টর দিমিত্রি মেজেন্টসেভ এই বন্ধুত্বকে অভাবনীয় বলে উল্লেখ করেছেন। খবর ভারতীয় গণমাধ্যম এবিপি আনন্দের।
বাঘ ও চিতাবাঘ গবেষণা করা এই গবেষক জানান, একপর্যায়ে তারপর তাদের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য হয়ে পড়ে। যেন তারা একে অপরকে অনেকদিন ধরেই চিনতো। আমুরের আস্তানাতেই থাকতো তিমুর। একসঙ্গে খেতো এবং খেলা করতো।
তিনি জানান, ছাগলটিকে শিকার করার কায়দা শেখানোরও চেষ্টা করে বাঘটি। একে অপরের মাথায় ঠোকাঠুকি মজা করতো তারা। কিন্তু হঠাৎ তাদের বন্ধুত্বে ভাটা পড়ে। আসলে তিমুর একপর্যায়ে খুব বেশি সাহসী হয়ে পড়ে। মাঝেমাঝে ছাগলটি বাঘটিকে টেক্কা দেয়ারও চেষ্টা করতো।
---------------------------------------------------------------
আরো পড়ুন: সৌদি আরবে স্টেজ শোতে তিনজনকে ছুরিকাঘাত
---------------------------------------------------------------
মেজেন্টসেভ বলেন, একমাস ধরে আমুরকে বেশ জ্বালাতো তিমুর। একদিন ছাগলটি বাঘটির ঘাড়ে চড়ে বসে। বন্ধু ছাগলের এই আচরণ বরদাস্ত করতে পারেনি বাঘটি। ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসের কোনও একদিন তিমুরের ঘাড় ধরে তাকে একটি টিলা থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয় আমুর।
তিনি বলেন, আঘাত পেয়ে তিমুর খোঁড়াতে শুরু করে। তবে এই ঘটনার পরও তার একগুঁয়ে স্বভাবে কোনও পরিবর্তন আসেনি। কর্তৃপক্ষ চিকিত্সার জন্য তিমুরকে মস্কোতে পাঠায়। কিন্তু বাঘটির আঘাতের ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি ছাগলটি।
পার্কটির ডিরেক্টর বলেন, গত ৫ নভেম্বর তিমুর মারা যায়। এই বাঘ ও ছাগলের বন্ধুত্বের কথা রাশিয়ার সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই তার মৃত্যুতে অনলাইনে দুঃখ প্রকাশ করেছে। পূর্ণ মর্যাদায় তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। কর্তৃপক্ষ তার সমাধিতে একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে।
কে/এমকে
মন্তব্য করুন